বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটার (Bangladesh Legend Cricketer) শাকিব আল হাসানের (Shakib Al Hasan) জন্য এবারের জন্মদিন যেন এক অপ্রত্যাশিত ‘উপহার’ নিয়ে এসেছে। ২৪ মার্চ, ২০২৫ সোমবার তিনি ৩৮ বছরে পা দিয়েছেন। কিন্তু এই দিনটি উৎসবের পরিবর্তে তাঁর জন্য হয়ে উঠেছে দুঃসংবাদের দিন। ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালত শাকিবের সম্পত্তি (Assets) বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ (Court Order) দিয়েছে। এর পেছনে রয়েছে চেক প্রতারণার (Amid Fraud Charges) এক গুরুতর অভিযোগ, যার পরিমাণ প্রায় ৪ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা।
হামজার আগমনেও ওপার বাংলার শাপমোচনে কাঁটা ব্লু টাইগার্সদের ‘রাজা’
শাকিব সম্প্রতি ক্রিকেটে ফিরে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তাঁর বোলিং অ্যাকশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর মনে করা হয়েছিল। তিনি আবার মাঠে নামতে প্রস্তুত। জাতীয় দলে ফেরার লক্ষ্য নিয়ে তিনি এগোচ্ছিলেন। কিন্তু জন্মদিনের ঠিক আগে এমন একটি ঘটনা ঘটবে, তা হয়তো তিনি কল্পনাও করতে পারেননি। এই ঘটনা তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ার এবং ব্যক্তিগত জীবন দুইয়ের উপরই প্রভাব ফেলতে পারে।
ঘটনার সূত্রপাত গত বছর। ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর আইএফআইসি ব্যাঙ্কের রিলেশনশিপ অফিসার সাহিবুর রহমান শাকিব ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। অভিযোগ, শাকিবের মালিকানাধীন অ্যাগ্রো ফার্ম ব্যবসার জন্য আইএফআইসি ব্যাঙ্কের বনানী শাখা থেকে বিভিন্ন সময়ে ঋণ নিয়েছিল। এই ঋণের বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটি দুটি চেক ইস্যু করে। কিন্তু চেকগুলো দিয়ে টাকা তুলতে গেলে দেখা যায়, অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত ব্যালেন্স নেই। ফলে চেক দুটি ডিজ-অনার হয়ে যায়। এই চেকের মোট মূল্য ছিল প্রায় ৪ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শেষ বাঁশি পর্যন্ত লড়তে প্রস্তুত মানোলোর ভারত
ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে শাকিবকে আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছিল। তবে ৩০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও তাঁর তরফে কোনো সাড়া না পাওয়ায় আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। গত ১৮ ডিসেম্বর আদালত শাকিব-সহ চারজনের বিরুদ্ধে সমন জারি করে। এরপর ২০২৫ সালের ১৮ জানুয়ারি তাঁকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু শাকিব সেদিন উপস্থিত হননি। ফলে ১৯ জানুয়ারি তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। আর এবার, জন্মদিনে এসে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিল আদালত।
এই ঘটনা শাকিবের ভক্তদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে। যিনি ক্রিকেট মাঠে অসংখ্য রেকর্ড গড়েছেন। তাঁর জীবনে এমন এক অধ্যায় আসবে, তা অনেকেই ভাবতে পারেননি। শাকিবের অ্যাগ্রো ফার্মের ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে এর আগেও প্রশ্ন উঠেছিল। তবে এবার বিষয়টি আইনি পর্যায়ে গড়িয়ে গেছে। আদালতের এই নির্দেশের পর তাঁর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হবে। এটি তাঁর আর্থিক অবস্থার উপরও গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।
শাকিবের পক্ষ থেকে এখনও এ বিষয়ে কোন আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তিনি কীভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করবেন, তা নিয়ে সবার আগ্রহ রয়েছে। ক্রিকেটে ফেরার স্বপ্ন দেখা এই তারকার জন্য জন্মদিনটা তাই শুধু আনন্দের নয়, বরং চ্যালেঞ্জেরও একটি দিন হয়ে উঠেছে। আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি তাঁকে এখন জনসম্মুখে নিজের ভাবমূর্তি ধরে রাখার চেষ্টাও করতে হবে।
শাকিবের জীবনের এই নতুন মোড় ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য একটি আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি কীভাবে এই সংকট কাটিয়ে উঠবেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।