বেশ কিছুদিন আগে ভারতে বনাম বাংলাদেশে সিরিজের কানপুর টেস্টে অবসর ঘোষণা করেছিলেন কিংবদন্তি অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। চেন্নাই এবং বাংলাদেশে খারাপ পারফরম্যান্স করার পর নতুনদের জায়গা ছেড়ে দিতেই আর দলের ভার নিতে চাননি সাকিব। তাই টি টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এছাড়াও চলতি বছর টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চেও দ্রুত বিদায় ঘটেছিল বাংলাদেশের। সেখানেও নিজেকে মেলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছিলেন বাংলাদেশের এই কিংবদন্তি তারকা।
এবার চলতি ভারত বনাম বাংলাদেশ টি টোয়েন্টি সিরিজে সাকিবের পাশাপাশি অবসর নিলেন অভিজ্ঞ বাঙালি ব্যাটার মাহমুদুল্লাহ। আজ দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে অনুশীলন সারার পর সংবাদ সম্মেলনে এই সিরিজ শেষেই টি–টোয়েন্টি থেকে অবসর (Mahmudullah T20I retirement) নেবেন বলে জানিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ।
বাংলাদেশের হয়ে সাদা বলের ক্রিকেট থেকে অনেকদিন আগেই অবসর নিয়েছেন তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, নিয়ামুর রশিদ। এবার পঞ্চপাণ্ডবের শেষ সদস্য হিসেবে উপস্থিত থাকা মাহমুদউল্লাহ ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাট থেকে সরে দাঁড়ালেন।
Mahmudullah announces his retirement from T20i cricket. ⭐
– He’ll retire after the T20i series against India. pic.twitter.com/ayd2RMpveP
— Mufaddal Vohra (@mufaddal_vohra) October 8, 2024
যদিও ২০২১ সালে জুলাই মাসেই লাল বলের ক্রিকেট থেকেও অবসর নিয়েছিলেন তিনি। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এখনই ছাড়ছেন না তিনি। ওয়ানডে খেলে যেতে চান আগামী ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত। এখনও পর্যন্ত ভারত বনাম বাংলাদেশের প্রথম টি টোয়েন্টি মারছে সেভাবে কিছু করতে পারেননি। ভারতের বিপক্ষে সিরিজের বাকি দুই ম্যাচে খেললে বাংলাদেশের পক্ষে মাহমুদউল্লাহ শেষ টি–টোয়েন্টি ম্যাচটি হবে আগামী ১২ অক্টোবর। সেক্ষেত্রে হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে নিজের শেষ ম্যাচ খেলবেন প্রাক্তন এই তারকা।
IND vs BAN: কোহলি-বুমরাহের প্রত্যাবর্তন ঘটিয়ে প্রথম টেস্টের টিম ঘোষণা ভারতের
২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে নাইরোবিতে কেনিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি অভিষেক মাহমুদউল্লাহর। বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১৩৯টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। ১১৭.৭৪ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন ২৩৯৫, গড় ২৩.৪৮। বাকি দুই ম্যাচ খেললে তাঁর টি–টোয়েন্টি ক্যারিয়ার শেষ হবে ১৪১ ম্যাচ খেলে। এর চেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড আছে মাত্র দুজনের।
বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়ার রেকর্ডও তাঁর। ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ৪৩টি টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে টস করতে নেমেছেন মাহমুদউল্লাহ। ২০২১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও নেতৃত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশকে। বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি জয়ও মাহমুদউল্লাহর। তবে এই রেকর্ডের একজন ভাগীদার আছেন। তাঁর সমান ১৬টি জয় পেয়েছেন সাকিব আল হাসানও।
IND vs BAN: একসঙ্গে ৩ কিংবদন্তিকে পিছনে ফেলতে পারেন অশ্বিন
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে এসে, অনেক বেশি সমালোচনা সইতে হয়েছে মাহমুদউল্লাহকে। কেননা তিনি অনেক বেশি টাইমিং নির্ভর খেলোয়াড়। হ্যান্ড-আই কম্বিনেশন এখন আর ঠিকঠাক কাজ করছে না। সেজন্য ব্যাট হাতে রানের দেখাও তিনি পাচ্ছেন না। পেলেও তা দলের কাজে আসছে না। ব্যয় হয় মূল্যবান বল ও গুরুত্বপূর্ণ সময়। তাই শেষবেলায় বয়সের ভারে নুইয়ে পড়া মাহমুদউল্লাহ এই মুহূর্তে বোঝা বাংলাদেশ ক্রিকেটের কাছে (Mahmudullah T20I retirement)। তবে ২০১৫ বিশ্বকাপের জোড়া সেঞ্চুরি, নিদাহাস ট্রফিতে হাঁকানো সেই ছক্কা, সেই সাথে বিপর্যয়ের মুখে সাইলেন্ট কিলারের আস্থা। যদিও রিয়াদকে ঘিরে অধিকাংশই রয়েছে ওয়ানডে ক্রিকেটের স্মৃতি। সেটাও যে বেশিদিন চালিয়ে যাবেন না তিনি।