পাকিস্তান ক্রিকেটে বেলাগাম চুরি ফাঁস অডিটর জেনারেলের

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডে (Pakistan Cricket) কোটি কোটি রুপির আর্থিক অনিয়ম, অবৈধ নিয়োগ এবং চুক্তি প্রদানের চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের অডিটর জেনারেল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য…

pakistan cricket scam exposed

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডে (Pakistan Cricket) কোটি কোটি রুপির আর্থিক অনিয়ম, অবৈধ নিয়োগ এবং চুক্তি প্রদানের চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের অডিটর জেনারেল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রকাশিত অডিট রিপোর্টে পিসিবি’র আর্থিক ব্যবস্থাপনা, স্বচ্ছতা এবং শাসনের গুরুতর ত্রুটির বিষয়টি উঠে এসেছে। এই রিপোর্টে ৬০০ কোটি রুপিরও বেশি অনিয়মের উল্লেখ করা হয়েছে, যা পাকিস্তানের ক্রিকেট প্রশাসনের উপর নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

 আর্থিক তছরুপ 

অডিট রিপোর্টে (Pakistan Cricket)বেশ কয়েকটি গুরুতর অনিয়মের উল্লেখ রয়েছে। এর মধ্যে একটি হল আন্তর্জাতিক ম্যাচের সময় নিরাপত্তার জন্য পুলিশকে খাবার সরবরাহের নামে ৬৩.৩৯ মিলিয়ন রুপির অর্থ প্রদান। এই অর্থ ব্যয়ের কোনো স্বচ্ছ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।

   

এছাড়া, করাচির হাই পারফরম্যান্স সেন্টারে অনূর্ধ্ব-১৬ দলের জন্য তিনজন কোচের অবৈধ নিয়োগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যাদের মোট বেতন ৫.৪ মিলিয়ন রুপি। এই নিয়োগগুলি যোগ্যতার মানদণ্ড বা স্বচ্ছ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই করা হয়েছে। টিকিট বিক্রির চুক্তিও প্রকাশ্য প্রতিযোগিতা ছাড়াই প্রদান করা হয়েছে, যা আর্থিক স্বচ্ছতার অভাব নির্দেশ করে।

চেয়ারম্যানের অবৈধ সুবিধা

রিপোর্টে পিসিবি’র (Pakistan Cricket)বর্তমান চেয়ারম্যান মোহসিন নকভির  বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত তাঁকে ইউটিলিটি বিল, জ্বালানি এবং থাকার খরচ বাবদ ৪.১৭ মিলিয়ন রুপির অবৈধ অর্থ প্রদান করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এই সময়ে নকভি পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন, এবং আইন অনুযায়ী তাঁর এই সুবিধাগুলি সরকারের দ্বারা বহন করা হয়।

অডিট রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, মিডিয়া পরিচালকের পদে ৯ লাখ রুপি মাসিক বেতনে একজনকে নিয়োগ করা হয়েছে, যেখানে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অস্বচ্ছ ছিল। ২০২৩ সালের ২ অক্টোবর একই দিনে বিজ্ঞাপন, আবেদন, অনুমোদন এবং নিয়োগপত্র জারি করা হয়, যা নিয়মের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

অন্যান্য অনিয়ম

অডিট রিপোর্টে (Pakistan Cricket)আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ম্যাচ অফিসিয়ালদের ফি বাবদ ৩.৮ মিলিয়ন রুপির অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, বুলেটপ্রুফ গাড়ির জন্য ডিজেল খরচে ১৯.৮ মিলিয়ন রুপি, কোস্টার ভাড়ায় ২২.৫ মিলিয়ন রুপি এবং মিডিয়া রাইটস কম মূল্যে বিক্রির কারণে ৪৩৯.৯ মিলিয়ন রুপির ক্ষতি হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রচারের অধিকারও স্বচ্ছ প্রতিযোগিতা ছাড়াই প্রদান করা হয়েছে, যার মূল্য ২৭.৪ মিলিয়ন রুপি। এছাড়া, ৫.৩ বিলিয়ন রুপির স্পনসরশিপের অর্থ উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়েছে পিসিবি।

পিসিবি’র প্রতিক্রিয়া ও দায়

পিসিবি কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে,(Pakistan Cricket) এই ব্যয়গুলি আইনের লঙ্ঘন নয়। তবে, অডিটর জেনারেল তাদের এই যুক্তি গ্রহণ করেনি এবং দায় নির্ধারণের জন্য তদন্তের সুপারিশ করেছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ডিপার্টমেন্টাল অ্যাকাউন্টস কমিটি (ডিএসি) এই বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।

Advertisements

রিপোর্টে বলা হয়েছে, পিসিবি’র (Pakistan Cricket)আগের চেয়ারম্যানদেরও জবাবদিহি করা উচিত। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে পিসিবি তিনজন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়েছে—নাজাম শেঠি, জাকা আশরাফ এবং মোহসিন নকভি। তবে, এখন পর্যন্ত কোনো চেয়ারম্যানকে এই অনিয়মের জন্য দায়ী করা হয়নি।

জঙ্গিদের প্রিয় জাকির নায়েকের পিস টিভি বাংলাদেশে ফের সম্প্রচারের চেষ্টা

জনমত ও প্রভাব

এক্স-এ প্রকাশিত পোস্টগুলিতে এই অনিয়ম নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। অনেকে এটিকে পাকিস্তানের (Pakistan Cricket)ক্রিকেট প্রশাসনের দুর্নীতির প্রমাণ হিসেবে দেখছেন। এই রিপোর্ট পাকিস্তানের ক্রিকেটে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। পিসিবি’র আর্থিক ব্যবস্থাপনার ত্রুটি ক্রিকেট ভক্তদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে, এবং এটি ভবিষ্যতে আরও কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও সংস্কারের দাবি জোরদার করবে।

অডিটর জেনারেলের রিপোর্ট পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডে (Pakistan Cricket) ব্যাপক আর্থিক অনিয়মের চিত্র তুলে ধরেছে। অবৈধ নিয়োগ, অস্বচ্ছ চুক্তি এবং অতিরিক্ত ব্যয়ের এই ঘটনাগুলি পিসিবি’র শাসন ও স্বচ্ছতার গুরুতর ঘাটতি নির্দেশ করে। তদন্তের মাধ্যমে দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের অনিয়ম রোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।