Asia Cup 2025: ওমানের বিপক্ষে পাকিস্তানের বোলারদের দাপট

এশিয়া কাপ ২০২৫-এর (Asia Cup 2025) উত্তেজনাপূর্ণ শুরুর মুখে পাকিস্তান দল ওমানের বিরুদ্ধে একটি দুর্দান্ত জয় নিশ্চিত করেছে। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার অনুষ্ঠিত এই…

Pakistan vs Oman Asia Cup 2025

এশিয়া কাপ ২০২৫-এর (Asia Cup 2025) উত্তেজনাপূর্ণ শুরুর মুখে পাকিস্তান দল ওমানের বিরুদ্ধে একটি দুর্দান্ত জয় নিশ্চিত করেছে। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে পাকিস্তান ৯৩ রানের বিজয় অর্জন করে গ্রুপ এ-তে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছে। টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া পাকিস্তানের ক্যাপ্টেন সালমান আঘা এই সিদ্ধান্তে সফল হয়েছেন। তাদের দল ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬০ রান করেছে, যার মধ্যে মোহাম্মদ হারিসের অসাধারণ ৬৬ রানের অবদান সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। এই ইনিংসে তিনি ৪৩ বল খেলে ৭টি বাউন্ডারি এবং ৩টি সিক্স করে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন। ওমানের বোলাররা অবশ্য ভালো করে ফিরে এসেছে, যেখানে আমির কালিম এবং শাহ ফয়সাল প্রত্যেকে ৩টি করে উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের স্কোরকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।

পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের শুরু ছিল কিছুটা দুর্বল। উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান সাইম আইয়ুব এবং অন্যান্য ওপেনাররা দ্রুত আউট হয়ে যান, যা দলকে চাপে ফেলে। কিন্তু মোহাম্মদ হারিস মাঝপথে এসে দলকে স্থিতিশীল করেন। তার আক্রমণাত্মক খেলা পাকিস্তানকে একটি সম্ভাব্য টার্গেটে পৌঁছে দিয়েছে। হারিসের পর সালমান আঘা এবং অন্যান্য মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা ছোট ছোট অবদান দিয়ে স্কোরবোর্ডে রান যোগ করেছেন। ওমানের বোলিং অ্যাটাক, বিশেষ করে স্পিনার আমির কালিমের ৩/৩১ এবং শাহ ফয়সালের ৩/৩৪ ফিগার দলের জন্য ইতিবাচক ছিল, কিন্তু তারা পাকিস্তানের মোট স্কোরকে ১৬০-এর নিচে নামাতে পারেনি। এই স্কোরটি টি২০ ফরম্যাটে একটি প্রতিরক্ষামূলক টার্গেট হিসেবে বিবেচিত হয়েছে, বিশেষ করে দুবাইয়ের পিচে যেখানে স্পিনাররা ভালো করে কাজ করে।

   

চেইজিংয়ের সময় ওমানের ব্যাটসম্যানরা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। ১৬১ রানের লক্ষ্যে তারা মাত্র ৬৭ রানে অলআউট হয়ে যায়। পাকিস্তানের বোলাররা অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছে, যেখানে ফাহিম আশরাফ, সুফিয়ান মুকিম এবং সাইম আইয়ুব প্রত্যেকে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। সুফিয়ান মুকিমের ২/৭ ফিগার বিশেষভাবে প্রশংসনীয়, যা ওমানের ব্যাটিং লাইনআপকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। ওমানের ক্যাপ্টেন জাতিন্দার সিংহ এবং অন্যান্য ব্যাটসম্যানরা দ্বিগুণ স্কোরে পৌঁছাতে পারেননি, যা তাদের এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে একটি কঠিন শিক্ষা হিসেবে কাজ করবে। এই ম্যাচে ওমানের বোলিং ভালো ছিল, কিন্তু ব্যাটিংয়ে তারা পাকিস্তানের বোলিং অ্যাটাকে মোকাবিলা করতে অক্ষম ছিল।

এই জয়টি পাকিস্তানের জন্য এশিয়া কাপ (Asia Cup 2025) ক্যাম্পেইনের একটি শক্তিশালী শুরু। সালমান আঘার নেতৃত্বে দলটি সম্প্রতি ট্রাই-সিরিজে সাফল্য অর্জন করেছে, এবং এই ম্যাচে তারা তাদের ফর্ম ধরে রেখেছে। মোহাম্মদ হারিসের ইনিংসটি তার ক্যারিয়ারের একটি মাইলফলক, যা তাকে দলের মূল খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বোলিংয়ে ফাহিম আশরাফ এবং সুফিয়ান মুকিমের পারফরম্যান্স দেখিয়েছে যে পাকিস্তানের বোলিং ইউনিট এখন আরও সুষম এবং বিপজ্জনক। এই জয়ের ফলে পাকিস্তানের নেট রান রেটও উন্নত হয়েছে, যা গ্রুপ স্টেজে তাদের সুবিধা দেবে। ওমানের জন্য এটি একটি হতাশাজনক শুরু, কিন্তু তারা এখনও দুটি ম্যাচ খেলবে এবং উন্নতি করার সুযোগ রয়েছে। ওমানের কোচ এবং ক্যাপ্টেন জাতিন্দার সিংহ বলেছেন যে বোলিংয়ে তারা ভালো করেছে, এবং এখন ব্যাটিংয়ে ফোকাস করতে হবে।

Advertisements

এশিয়া কাপ ২০২৫-এর (Asia Cup 2025) এই ম্যাচটি দর্শকদের জন্য একটি উত্তেজনাপূর্ণ দৃশ্য উপস্থাপন করেছে। দুবাই স্টেডিয়ামে হাজারো ফ্যান উপস্থিত ছিলেন, যারা পাকিস্তানের জয় উদযাপন করেছেন। এই টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের পরবর্তী ম্যাচ ভারতের বিরুদ্ধে, যা রবিবার অনুষ্ঠিত হবে। এই জয়টি পাকিস্তানকে মানসিকভাবে শক্ত করে তুলেছে, এবং তারা এখন ভারতের মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে প্রস্তুত। ওমানের জন্য এটি প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপে অংশগ্রহণ, এবং তারা অ্যাসোসিয়েট নেশন হিসেবে আরও অভিজ্ঞতা অর্জন করবে। ম্যাচের পর সালমান আঘা বলেছেন যে দলটি সন্তুষ্ট, কিন্তু এখনও উন্নতির স্থান রয়েছে।

এই ম্যাচের হাইলাইটসগুলোতে মোহাম্মদ হারিসের সিক্সগুলো এবং পাকিস্তানের বোলারদের উইকেটগুলো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সাইম আইয়ুবের বোলিংয়ে তার ২ উইকেট দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ওমানের দিক থেকে আমির কালিমের স্পিনিং দেখার মতো ছিল, কিন্তু তারা চেইজ করতে অক্ষম ছিল। এশিয়া কাপ ২০২৫-এর (Asia Cup 2025) গ্রুপ এ-তে এখন পাকিস্তান শীর্ষে, এবং তারা পরবর্তী ম্যাচগুলোতে এই ফর্ম ধরে রাখতে চাইবে। এই টুর্নামেন্টে অন্যান্য দলগুলোও প্রস্তুত, যেমন শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশের ম্যাচ শনিবার অনুষ্ঠিত হবে। পাকিস্তানের এই জয়টি এশিয়ান ক্রিকেটে তাদের প্রভাব পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছে, এবং ফ্যানরা এখন ভারতের সাথে তাদের ম্যাচের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। সামগ্রিকভাবে, এই ম্যাচটি পাকিস্তানের দলীয় শক্তি এবং কৌশলের একটি চমৎকার উদাহরণ।