আই-লিগে অবনমনের উপর স্থগিতাদেশ জারি করল AIFF আপিল কমিটি

আই-লিগ থেকে প্রোমোশনের পাশাপাশি রেলিগেশনের বিষয়টিও এখন অনিশ্চয়তার মুখে। অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের (AIFF) অপিল কমিটি মঙ্গলবার আই-লিগ থেকে রেলিগেশন প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে।…

AIFF confirm Indian Football 2025-26 season dates

আই-লিগ থেকে প্রোমোশনের পাশাপাশি রেলিগেশনের বিষয়টিও এখন অনিশ্চয়তার মুখে। অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের (AIFF) অপিল কমিটি মঙ্গলবার আই-লিগ থেকে রেলিগেশন প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে। এই সিদ্ধান্ত দিল্লি এফসি এবং এসসি বেঙ্গালুরুর জন্য বড় স্বস্তি এনেছে, যারা ১২ দলের এই প্রতিযোগিতায় সর্বনিম্ন দুটি স্থানে থেকে রেলিগেশনের মুখে ছিল। অপিল কমিটি চূড়ান্ত রায় না দেওয়া পর্যন্ত রেলিগেশন প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে।

দিল্লি এফসি (২২ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট) এবং এসসি বেঙ্গালুরু (২২ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট) অপিল কমিটির কাছে রেলিগেশন থেকে মুক্তি চেয়ে আবেদন করেছিল। তারা এআইএফএফ-এর ভিশন ২০৪৭ পরিকল্পনার উল্লেখ করে বলেছে যে, এই পরিকল্পনায় আই-লিগে ১৬টি দল অন্তর্ভুক্ত করার কথা রয়েছে। এছাড়াও, তারা যুক্তি দিয়েছে যে, শীর্ষ স্তরের ইন্ডিয়ান সুপার লিগে (ISL) যেহেতু কোনো রেলিগেশন নেই, তাই দ্বিতীয় স্তরের আই-লিগ থেকেও দলগুলোকে রেলিগেশনের মুখোমুখি হতে হবে না। এই আবেদন প্রথমে এআইএফএফ-এর ডিসিপ্লিনারি কমিটির কাছে জমা দেওয়া হয়েছিল, যারা এটিকে অপিল কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেয়।

   

এসসি বেঙ্গালুরু তাদের আবেদনে দাবি করেছে যে, নামধারী এফসি তাদের বিরুদ্ধে একটি ম্যাচে ‘অনুপযুক্ত’ খেলোয়াড় খেলিয়েছে। ওই খেলোয়াড়টি সাসপেন্ডেড ছিলেন। কিন্তু প্রতিযোগিতার নিয়মে স্পষ্টতার অভাবের কারণে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয় এবং নামধারী ওই খেলোয়াড়কে মাঠে নামায়। এসসি বেঙ্গালুরু টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী ওই ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট দাবি করেছে, যা যদি মঞ্জুর হয়, তাহলে আইজল এফসি রেলিগেশনের মুখে পড়তে পারে।

অপিল কমিটি, নেতৃত্বে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রাজেশ ট্যান্ডন, তাদের অন্তর্বর্তী আদেশে বলেছে, “এআইএফএফ-এর ডিসিপ্লিনারি কমিটির আদেশ পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, তারা আই-লিগ ২০২৪-২৫-এর রেলিগেশন প্রক্রিয়াকে উপেক্ষা করেছে। অতীতে এআইএফএফ নিজেই বহুবার রেলিগেশন মওকুফ করেছে।” কমিটি আরও উল্লেখ করেছে, “মামলার পরিস্থিতি বিবেচনা করে, রেলিগেশন সংক্রান্ত যেকোনো আদেশ স্থগিত রাখা উচিত এবং চূড়ান্ত শুনানি পর্যন্ত এটি কার্যকর করা উচিত নয়।”

দিল্লি এফসি এবং এসসি বেঙ্গালুরু আরও যুক্তি দিয়েছে যে, যোগ্য কর্তৃপক্ষের দ্বারা যেকোনো রেলিগেশনের সিদ্ধান্ত গুরুতর শাস্তিমূলক পরিণতির দিকে নিয়ে যাবে। তারা প্রথমে এই বিষয়ে ডিসিপ্লিনারি কমিটির কাছে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল।

Advertisements

পরবর্তী শুনানি ৩০ মে
অপিল কমিটি এআইএফএফ-কে এই বিষয়ে তাদের আপত্তি দাখিল করার জন্য দুই দিন সময় দিয়েছে এবং আগামী ৩০ মে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। কমিটি আরও জানিয়েছে, “এই আদেশের একটি কপি এবং আবেদনপত্র আইজল এফসি-কে পাঠানো হবে, যাতে তারা ইচ্ছা করলে এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে।”

এর আগে, ইন্টার কাশি চার্চিল ব্রাদার্সকে আই-লিগের চ্যাম্পিয়ন ঘোষণার অপিল কমিটির সিদ্ধান্তকে কোর্ট অফ আরবিট্রেশন ফর স্পোর্টসে চ্যালেঞ্জ করেছিল। সিএএস এই রায়ের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছে এবং এআইএফএফ-সহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে তাদের জবাব দাখিল করতে বলেছে। এই মামলার নতুন শুনানির তারিখ এখনও ঘোষণা করা হয়নি।

এছাড়াও, দিল্লি এফসি-সহ চারটি আই-লিগ ক্লাব ইন্টার কাশির বিরুদ্ধে ‘অনুপযুক্ত’ খেলোয়াড় মাঠে নামানোর অভিযোগে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছে। এই মামলাগুলোর চূড়ান্ত ফলাফল এখনও অপেক্ষমাণ।

আই-লিগের এই চলমান বিতর্ক ফুটবল প্রেমীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে। রেলিগেশন এবং প্রোমোশনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কী হবে, তা জানতে সকলের দৃষ্টি এখন অপিল কমিটির দিকে।