তাইওয়ান অ্যাথলেটিক্স ওপেন (Taiwan Athletics Open) ২০২৫ ভারতের হয়ে সোনাজয়ী পারফরম্যান্স দিয়েছেন জ্যাভেলিন থ্রোয়ার (Javelin Thrower) রোহিত যাদব (Rohit Yadav)। ৭৪.৪২ মিটার দুরত্বে বর্শা নিক্ষেপ করে, তিনি ভারতের ১৬টি মেডেলজয়ের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। কিন্তু এই জয়েও রোহিত সন্তুষ্ট নন, বরং আগামী দিনে আরও বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখছেন।
“দেশের জন্য সোনা জিতেছি, খুব খুশি, কিন্তু আরও ভালো করতে পারতাম,” বলেন উত্তর প্রদেশের এই প্রতিভাবান অ্যাথলেট। তিনি আরও যোগ করেন, “আমি ৮০ মিটার ছুঁতে চেয়েছিলাম, কিন্তু এবার হলো না। তবে পরের বার নিশ্চয়ই আরও ভালো করব। যদি লক্ষ্য পূরণ না হয়, তাহলে বোঝা উচিত কোথায় ভুল হয়েছে এবং তার থেকে শিখে আরও শক্তভাবে ফিরতে হবে।”
এই আত্মবিশ্বাস ও অধ্যবসায় রোহিতের অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন নীরজ চোপড়ার (Neeraj Chopra) নাম উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “২০১৯ সালে প্রথমবার নীরজ ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়। তারপর থেকে যতবারই ওনার সঙ্গে কথা হয়েছে, প্রতিবারই নিজের পারফরম্যান্স আরও ভালো করার প্রেরণা পেয়েছি।”
View this post on Instagram
নীরজের একটি উপদেশ আজও তার মনে গেঁথে রয়েছে, “ফলাফল নিয়ে ভাববে না, স্বপ্নের পেছনে ছুটো।” এই কথাগুলোই রোহিতকে প্রতিদিন অনুশীলনে উদ্যম জোগায়। “ওনার ধারাবাহিক পারফরম্যান্স আমাকে অনুপ্রাণিত করে। আমিও চাই, সেইরকম ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এগিয়ে যেতে,” বলেন তিনি।
তবে শুধুই নীরজ চোপড়া নয়, রোহিতের জীবনে আর একজন বড় অনুপ্রেরণা তার বাবা সভাজীত যাদব। “শৈশব থেকে বাবার সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুব ঘনিষ্ঠ। উনি নিজেও খেলাধুলার প্রতি ভীষণ আগ্রহী ছিলেন। ওনাকেই দেখে আমার খেলাধুলায় আগ্রহ তৈরি হয়। প্রতিযোগিতার আগে বাবার সঙ্গে মন খুলে কথা বলি, এটা আমাকে মানসিকভাবে অনেকটাই প্রস্তুত করে তোলে,” বলেন রোহিত।
এই তরুণ জ্যাভেলিন থ্রোয়ারের কথায় স্পষ্ট, কেবল মেডেল জয়ই নয়, একজন ক্রীড়াবিদের প্রকৃত সাফল্য পরিমাপ হয় তার তৈরি করা উত্তরাধিকার এবং অন্যদের অনুপ্রাণিত করার ক্ষমতা দিয়ে। রোহিত নিজেও সেই পথেই হাঁটতে চান। একজন দৃষ্টান্ত তৈরি করতে চান, শুধু নিজের জন্য নয়, আগামী প্রজন্মের অ্যাথলেটদের জন্যও।
তবে তার চোখ এখন ভবিষ্যতের দিকে। সেই প্রসঙ্গে বলেন, “আমি জানি আমার ক্ষমতা আরও বেশি। এই জয় আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে, কিন্তু এই পথ অনেক লম্বা। দেশের হয়ে আরও বড় স্তরে পদক জিততে চাই। এবং সেখানেই মন দিয়েছি এখন।”
এই কঠোর পরিশ্রম, স্বপ্নপূরণের তাগিদ, এবং নীরজ চোপড়ার মতো আদর্শ ধরে এগিয়ে চলার মানসিকতাই ভবিষ্যতের ভারতীয় অ্যাথলেটিক্সের জন্য এক নতুন আশা জাগায়। তাইওয়ানে রোহিতের সোনার থ্রো শুধুমাত্র একটি জয় নয়, এটি এক নতুন যাত্রার শুরু — যেখানে লক্ষ্য শুধুই দূরে ছোড়া নয়, বরং নতুন প্রজন্মের ক্রীড়াবিদদের স্বপ্নকে আরও দূরে পৌঁছে দেওয়া।