ভারতের (India) বিভিন্ন অংশে পাকিস্তানের (Pakistan) আকস্মিক হামলার (Attack) কারণে ৭ মে ধর্মশালায় (Dharamshala) অনুষ্ঠিত আইপিএল ২০২৫ (IPL 2025) পঞ্জাব কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালস ম্যাচটি মাঝপথেই বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ (BCCI)। ম্যাচের সময় হঠাৎ করে একে একে তিনটি ফ্লাডলাইট বন্ধ হয়ে যায় এবং তখনই গ্যালারির দর্শকদের স্টেডিয়াম খালি করার নির্দেশ দেয়া হয়। শুরুতে বিষয়টিকে কারিগরি ত্রুটি মনে করা হলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই বোঝা যায় যে ভারতের অভ্যন্তরে পাকিস্তানের দিক থেকে হামলা হয়েছে। এরপরই আইপিএল কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে ম্যাচ বাতিলের ঘোষণা দেয়।
ভারতের জম্মু, পাঞ্জাব, রাজস্থানসহ বিভিন্ন অংশে একাধিক রকেট ও ড্রোন হামলা চালায় পাকিস্তান। জম্মু বিমানবন্দরে ড্রোন আক্রমণের পর ভারতের বায়ুসেনা জবাবি ব্যবস্থা হিসেবে একাধিক পাকিস্তানি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করে এবং একটি পাকিস্তানি F-16 যুদ্ধবিমান ধ্বংস করে বলে জানা গিয়েছে। এছাড়া, পুঞ্চে দুটি কামিকাজে ড্রোন এবং রাজস্থানের জয়সালমের এলাকায়ও একাধিক ড্রোন হামলা প্রতিহত করা হয়।
এই ভয়ঙ্কর ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে, বিসিসিআই (BCCI) দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। খেলোয়াড়, সাপোর্ট স্টাফ ও ম্যাচ অফিসিয়ালদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার জন্য একটি বিশেষ বন্দে ভারত ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ধর্মশালার সবচেয়ে কাছের রেলস্টেশন হ’ল উনা, সেখান থেকেই দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা হবে দল দুটি।
বিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি রাজীব শুক্লা জানান, “খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার। বর্তমান পরিস্থিতিতে ম্যাচ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না। তাই দর্শকদেরও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পুরো পরিস্থিতির ওপর আমরা নজর রাখছি এবং আগামী দিনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
বিসিসিআই-এর সচিব দেবজিত সাইকিয়া জানান, “দেশের অভ্যন্তরে এই মুহূর্তে নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি বেড়েছে। তাই শুধু ধর্মশালার ম্যাচ নয়, ভবিষ্যতের অন্যান্য ম্যাচ নিয়েও আমরা ভাবছি। খেলোয়াড়, দর্শক ও স্টাফদের নিরাপত্তা রক্ষাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।”
ম্যাচ বাতিল হওয়ার পর পঞ্জাব কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালসয়ের খেলোয়াড়রা তাদের হোটেলে ফিরে গেছেন এবং তারা বিসিসিআই-এর নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছেন। জানা গিয়েছে, ম্যাচ শুরুর আগেই পরিস্থিতি নিয়ে খেলোয়াড়দের মধ্যে দুশ্চিন্তা ও অস্থিরতা দেখা গিয়েছিল। বিশেষ করে বিমানবন্দর বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই উভয় দলের সদস্যরা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।
এই ঘটনায় আইপিএল-এর ভবিষ্যৎ নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। বিসিসিআই সূত্রে জানা যাচ্ছে, পুরো টুর্নামেন্টের ভবিষ্যত নিয়ে পুনরায় আলোচনায় বসবে বোর্ড। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে অন্য ম্যাচগুলিও স্থগিত বা স্থান পরিবর্তন করা হতে পারে।
দেশজুড়ে এই ধরনের সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে খেলাধুলা এবং অন্যান্য জনসমাগমস্থলগুলিতে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হচ্ছে। একদিকে যেমন দেশ রক্ষা করতে হচ্ছে সশস্ত্র বাহিনীকে, তেমনি বিসিসিআইও খেলোয়াড় ও দর্শকদের সুরক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এই মুহূর্তে গোটা আইপিএল মহলে আতঙ্কের ছায়া পড়েছে। তবে বিসিসিআই আশ্বস্ত করেছে যে, সব ধরনের ঝুঁকি বিবেচনা করেই তারা পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। আগত দিনে পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে জানানো হবে আইপিএল ২০২৫-এর বাকি ম্যাচগুলোর ভবিষ্যৎ।