কলকাতা ডার্বি জয়ের পর আইএসলে (ISL) আসন্ন ম্যাচে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের (Mohun Bagan SG) সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়ে জামশেদপুর এফসি (Jamshedpur FC)। আগামী শুক্রবার জামশেদপুরের ঘরের মাঠে এই ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। এই ম্যাচে বাগানের লক্ষ্য তিন পয়েন্ট অর্জন এবং লিগ শীর্ষে নিজেদের অবস্থান আরও মজবুত করা। যদিও সেই কাজ হবে না সবুজ-মেরুন শিবিরের জন্য। বর্তমানে জামশেদপুর শেষ পাঁচ ম্যাচের চারটিতে জিতে বেশ শক্তিশালী। তাই তাদের বিরুদ্ধে বেশ সতর্কতার সঙ্গে ম্যাচ খেলতে হবে এমনটাই মনে করছেন বাগান কোচ হোসে মোলিনা।
মোহনবাগান বর্তমানে লিগ টেবিলের শীর্ষে রয়েছে এবং তাদের সংগ্রহে ৩৫ পয়েন্ট। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এফসি গোয়ার থেকে ৮ পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছে তারা। শীর্ষস্থান ধরে রেখে দ্বিতীয়বার লিগ শিল্ড জয়ের দিকে এগিয়ে যেতে চায় সবুজ-মেরুন শিবির। তবে মোলিনা জানেন, একবার ছন্দ হারালে মরসুমের বাকি ম্যাচে তার প্রভাব পড়তে পারে, তাই আত্মতুষ্টি থেকে বিরত থাকছেন তিনি। ডার্বি জয়ের পরও মোলিনা দলের প্রতি সতর্কতা বজায় রেখেছেন, যেন কোনভাবেই চূড়ান্ত লক্ষ্য থেকে সরে না যান তারা।
আগামী ম্যাচের প্রস্তুতি নিয়ে মোলিনা জানান, ‘‘আমাদের পরবর্তী প্রতিপক্ষ জামশেদপুর এফসি, এক শক্তিশালী দল। তারা তাদের শেষ ম্যাচে ভালো খেলেছে এবং আমাদের প্রতি যথেষ্ট চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসবে। তাই আমাদের নিজেদের পরিকল্পনা মেনে খেলতে হবে। দলের প্রস্তুতি ভালো, সবাই ৯০ মিনিট খেলার জন্য প্রস্তুত। আমাদের লক্ষ্য একটাই, ৩ পয়েন্ট পাওয়া।’’
জামশেদপুর এফসি তাদের সাম্প্রতিক কিছু ম্যাচে ভালো খেললেও মোলিনা বলেন যে তাদের প্রতি সাবধানী থাকতে হবে। মোলিনা নিজে যদিও প্রতিপক্ষের শক্তি ও দুর্বলতা বিশ্লেষণ করে দলকে প্রস্তুত করতে চান, তবুও তিনি বিশ্বাস করেন যে মোহনবাগান দলের শক্তি এবং সমন্বয় তাদের জয় এনে দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা নিজের খেলার ধরণ মেনে চলব এবং আমাদের শক্তি নিয়ে মাঠে নামব।’’
তবে এক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা হচ্ছে অনিরুদ্ধ থাপার ইনজুরি। তিনি জামশেদপুরের বিপক্ষে মাঠে নামতে পারবেন না, কারণ কোচ জানিয়েছেন যে তাকে অন্তত দুই সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হবে। এই পরিস্থিতিতে অনিরুদ্ধের পরিবর্তে অন্য কাউকে কিভাবে দলে আনা যায়, সেটি নিয়ে চিন্তা রয়েছে কোচ মোলিনার। তবে দলের অন্য সদস্যরা যথেষ্ট প্রস্তুত রয়েছেন এবং তাদের মধ্যেই একজন গেম চেঞ্জার হয়ে ওঠার সুযোগ রয়েছে।
এদিকে, দলের দুই বিদেশি খেলোয়াড়, গ্রেগ স্টুয়ার্ট এবং দিমিত্রি পেত্রাএসকে নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশা রয়েছে। দুই তারকা ফুটবলারই চোট কাটিয়ে মাঠে ফিরেছেন, কিন্তু মোলিনা এখনও সিদ্ধান্ত নেননি তারা প্রথম একাদশে শুরু করবেন কিনা। মোলিনার মতে, ‘‘আমরা সবসময় সেরা একাদশ মাঠে নামানোর চেষ্টা করি। স্টুয়ার্ট এবং দিমিত্রি গত ম্যাচে ফিরেছেন এবং এখন তারা পুরোপুরি ফিট। তবে এখনও এটি দেখার বিষয় যে, কোন কম্বিনেশনে দল মাঠে নামানো যায়।’’ এটা বুঝতে হবে যে, ডার্বি জয় ও পরবর্তী ম্যাচের গুরুত্ব দুটোই খুব বেশি এবং মোলিনা চাইছেন সবচেয়ে উপযুক্ত কম্বিনেশন নিয়েই জামশেদপুরের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে।
এদিকে, ডার্বি ম্যাচে মোহনবাগান এসজি অনূর্ধ্ব-১৭ দলের সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়েছেন দলের তারকা ফুটবলার জেসন কামিংস। তিনি বলেন, ‘‘ডার্বি জয়টা সত্যিই স্পেশাল ছিল। আমাদের অনূর্ধ্ব-১৭ দলের সদস্যদের অভিনন্দন জানাই, তারা অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছে।’’ জেসন কামিংস ডার্বির পরবর্তী সময়ে রেফারিং ইস্যুতে ইস্টবেঙ্গলকে খোঁচা দিয়ে বলেন, ‘‘রেফারির ভুলের কারণে ইস্টবেঙ্গলের কিছু ক্ষতি হতে পারে। তবে আমাদের দল এটা গুরুত্ব দিয়ে দেখেছে এবং নিজেদের কাজ শেষ করেছে।’’
এটা স্পষ্ট যে, মোহনবাগান দলের সকলেই এখন একসাথে এসে জামশেদপুর এফসির বিরুদ্ধে পরবর্তী ম্যাচে নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স দিতে চায়। কোচ মোলিনা দলের প্রস্তুতি নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী এবং দলের আত্মবিশ্বাসও বর্তমানে উচ্চ। জামশেদপুরের বিরুদ্ধে এই ম্যাচটি তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ লিগ শিল্ড জয়ের পথে একটি ভুলও তাদের সামনে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তবে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট দলের দৃষ্টিতে, তারা এই চ্যালেঞ্জকে সফলভাবে মোকাবিলা করে শীর্ষস্থান ধরে রাখবে।