“সূর্য নয়, ঘড়ির কাঁটায় চলে মহাকাশে দিনরাত” শুক্লা শোনালেন মহাকাশচারীদের ঘুমের গল্প

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS) থেকে সরাসরি ভারতের ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে কথা বললেন ভারতীয় মহাকাশচারী শুভাংশু “শাক্স” শুক্লা। ভারতের উত্তর-পূর্ব মহাকাশ প্রয়োগ কেন্দ্র (NESAC)-এর উদ্যোগে আয়োজিত এক…

Shubhshu Shukla from ISS

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS) থেকে সরাসরি ভারতের ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে কথা বললেন ভারতীয় মহাকাশচারী শুভাংশু “শাক্স” শুক্লা। ভারতের উত্তর-পূর্ব মহাকাশ প্রয়োগ কেন্দ্র (NESAC)-এর উদ্যোগে আয়োজিত এক ব্যতিক্রমী HAM রেডিও সেশনে, শুক্লা শেয়ার করলেন মহাকাশজীবনের চ্যালেঞ্জ, অভিযানের অভিজ্ঞতা এবং আগামী প্রজন্মের প্রতি তাঁর অনুপ্রেরণামূলক বার্তা।

নিয়ম মেনে চলে আমাদের দিন

ছাত্রদের এক প্রশ্নের উত্তরে শুক্লা বলেন, “আমরা সূর্যকে অনুসরণ করি না। ISS থেকে আমরা প্রতিদিন ১৬ বার সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখি, কারণ আমরা প্রতি ৯০ মিনিটে একবার করে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করি। তাই আমাদের জীবন চলে GMT (গ্রিনউইচ মান সময়) অনুসারে।”

   

মাধ্যাকর্ষণহীন পৃথিবীতে অভিযোজন Shubhshu Shukla from ISS

মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণের অনুপস্থিতিতে শরীরে নানা পরিবর্তন ঘটে- এই অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে শুক্লা বলেন, “শরীরের ভরকেন্দ্র পাল্টে যায়। প্রথমদিকে কিছুটা অসুস্থতা হয়েছিল, তবে ধীরে ধীরে অভিযোজন ঘটে। এজন্য আমরা আগে থেকেই ভারতে, রাশিয়ায় এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে প্রচুর প্রশিক্ষণ নিই।” তিনি জানান, প্রশিক্ষণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল অপ্রত্যাশিত জরুরি পরিস্থিতি সামলানোর প্রস্তুতি। “টিমওয়ার্ক, ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত এবং মানসিক দৃঢ়তা- এগুলোই আমাদের বাঁচিয়ে রাখে।”

স্বাস্থ্য রক্ষায় প্রতিদিন কঠোর ব্যায়াম

মহাশূন্যে হাড় ও পেশি ক্ষয় খুবই সাধারণ সমস্যা। তাই প্রতিদিন ২ ঘণ্টার মতো শরীরচর্চা বাধ্যতামূলক। “আমরা ট্রেডমিল, সাইকেল এবং বিশেষ প্রতিরোধক যন্ত্র ব্যবহার করি। এতে মিশনের সময় সুস্থ থাকা যায় এবং পৃথিবীতে ফিরে আসার সময় শরীর ঠিকঠাক কাজ করে।”

Advertisements

রোবোটিক্স ও AI: মহাকাশের নিরব সহযোদ্ধা

ISS-এ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। শুক্লা বলেন, “রোবোটিক বাহু এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের কাজ অনেক সহজ করে দেয়। বাইরে মহাকাশে EVA (Spacewalk) করতে না গিয়েও আমরা অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারি AI-এর মাধ্যমে।”

 “আমি ফিরব, তোমাদের সঙ্গে কাজ করব”

শেষে দেশবাসী ও ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে শুক্লার বার্তা ছিল আবেগঘন ও অনুপ্রেরণামূলক, “আমি ফিরব, এবং তোমাদের পথ দেখাব। তোমাদের মধ্য থেকেই কেউ একদিন চাঁদের মাটিতে হাঁটবে। নিজের স্বপ্নকে বিশ্বাস করো- একদিন সেই স্বপ্নই তোমার ভবিষ্যৎ গড়ে দেবে।”