নেচার জার্নালে প্রকাশিত নতুন গবেষণায় একটি চমকপ্রদ আবিষ্কার প্রকাশিত হয়েছে: চাঁদেরও পৃথিবীর মতোই একটি কঠিন ধাতব পৃষ্ঠ (Moon interior) রয়েছে এবং এর একটি গলিত বাইরের কোরও রয়েছে। ফ্রান্সের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সায়েন্টিফিক রিসার্চের আর্থার ব্রিওর নেতৃত্বে এই দলটি অ্যাপোলো মিশনের ভূকম্পের তথ্য, লেজার রেঞ্জিং পরিমাপ এবং বছরের পর বছর ধরে মাধ্যাকর্ষণ ম্যাপিং ব্যবহার করে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে স্পষ্ট চিত্র তৈরি করেছে। যেখানে চাঁদ ২৫৮ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি কঠিন কেন্দ্র দ্বারা বেষ্টিত, অন্যদিকে ৩৬০ কিলোমিটার পুরু একটি গলিত স্তরও দৃশ্যমান।
চাঁদের পৃষ্ঠ ধোঁয়াটে নয়
প্রতিবেদন অনুসারে, চাঁদের কঠিন অভ্যন্তরীণ পৃষ্ঠটি প্রায় ২৫৮ কিমি ব্যাসার্ধের, যা ৩৬০ কিমি পুরু একটি গলিত বাইরের স্তর দ্বারা বেষ্টিত। এই পৃষ্ঠতলের ঘনত্ব লোহার ঘনত্বের সাথে অনেকটাই মিলে যা প্রমাণ করে যে চাঁদের মূল অংশ গলিত বা ফাঁপা নয়, বরং কঠিন। এই আবিষ্কার চাঁদের অভ্যন্তরীণ গঠন সম্পর্কে দীর্ঘস্থায়ী বিতর্কের প্রায় নিশ্চিত সমাধান করেছে। এই গবেষণা কেবল চাঁদের গঠনই নয়, এর প্রাথমিক ইতিহাস এবং প্রাচীন চৌম্বক ক্ষেত্রও বুঝতে সাহায্য করেছে।
ধাতু বিবর্তন প্রক্রিয়া
বিজ্ঞানীদের মতে, চাঁদের চৌম্বক ক্ষেত্র তার অভ্যন্তরীণ ডায়নামো দ্বারা চালিত ছিল। প্রকৃতপক্ষে, ভূতাত্ত্বিক প্রমাণ পাওয়া গেছে যে প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন বছর আগে চাঁদের চৌম্বক ক্ষেত্র খুব শক্তিশালী ছিল, যা প্রায় ৩.২ বিলিয়ন বছর আগে ধীরে ধীরে দুর্বল হতে শুরু করে। গবেষণাটি চাঁদের অভ্যন্তরে ধাতু উল্টে যাওয়ার একটি প্রক্রিয়ার সম্ভাবনাকেও সমর্থন করে, যেখানে ভারী পদার্থ নীচের দিকে এবং হালকা পদার্থ উপরের দিকে সরে যায়।


