ISRO: ২০২৫ সাল ইসরোর জন্য খুব বিশেষ হতে চলেছে। আগামী ৬ মাসের মধ্যে ISRO একের পর এক বড় মিশন শুরু করতে চলেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হল গগনযান মিশন এবং ভারত-আমেরিকার এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ব্যয়বহুল যৌথ উপগ্রহ, NISAR। কিন্তু গল্প এখানেই শেষ নয়। শীঘ্রই আপনার ফোন থেকে সরাসরি স্পেস কল করা সম্ভব হবে।
২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে ISRO একটি আমেরিকান যোগাযোগ উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করবে। এর সাহায্যে, আপনার স্মার্টফোন কল করতে এবং সরাসরি স্পেসের সঙ্গে সংযোগ করে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে সক্ষম হবে। বিশেষ বিষয় হল এর জন্য কোন বিশেষ হ্যান্ডসেট বা টার্মিনালের প্রয়োজন হবে না। এটি একটি সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক উৎক্ষেপণ হবে, যা ISRO-এর বাণিজ্যিক শাখা নিউ স্পেস ইন্ডিয়া লিমিটেড (NSIL) দ্বারা পরিচালিত হবে।
এই মিশন কী?
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO) আমেরিকার AST SpaceMobile কোম্পানির স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করবে। এই মিশনটি একটি বিশেষ প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে যা মোবাইল ফোনকে সরাসরি স্যাটেলাইটের সাথে সংযুক্ত করার ক্ষমতা দেবে। এই প্রথম কোনো আমেরিকান কোম্পানি ভারত থেকে বিশাল কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করছে। ভারত এখনও পর্যন্ত আমেরিকান কোম্পানিগুলির ছোট স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে।
এই প্রযুক্তির উদ্দেশ্য পৃথিবীর প্রতিটি কোণে মোবাইল নেটওয়ার্ক সরবরাহ করা, তা পাহাড়ে, বনে বা সমুদ্রের মাঝখানেই হোক না কেন। এখন মোবাইল টাওয়ার ছাড়া কল ও ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যাবে। নেটওয়ার্ক কভারেজ একটি বড় চ্যালেঞ্জের ক্ষেত্রে এটি বিপ্লবী প্রমাণিত হবে।
কীভাবে এই সিস্টেম কাজ করবে?
এটি একটি বড় এবং উন্নত স্যাটেলাইট, যা সরাসরি-থেকে-বিক্রয় প্রযুক্তিতে ডিজাইন করা হয়েছে। এই স্যাটেলাইট সরাসরি ফোনে সিগন্যাল পাঠাবে, যাতে মোবাইলটি কোনো মধ্যবর্তী টাওয়ার বা নেটওয়ার্ক ছাড়াই কাজ করবে। অর্থাৎ আপনার স্মার্টফোনটি সরাসরি মহাকাশের সাথে সংযুক্ত থাকবে। এই মিশনটি ISRO-এর জন্য আরেকটি কৃতিত্ব, যা আন্তর্জাতিক মহাকাশ মিশনে ভারতের ভূমিকাকে আরও শক্তিশালী করে।
অ্যান্টেনা অর্ধেক ফুটবল মাঠের সমান হবে
এই স্যাটেলাইটের অ্যান্টেনার আয়তন হবে প্রায় ৬৪ বর্গমিটার, যা অর্ধেক ফুটবল মাঠের সমান। এটির ওজন প্রায় 6000 কেজি হবে এবং ভারতের শ্রীহরিকোটা থেকে ISRO-এর LVM-3 রকেট এর মাধ্যমে নিম্ন কক্ষপথে স্থাপন করা হবে।
এই উৎক্ষেপণটি ISRO-এর জন্য একটি বড় কৃতিত্ব কারণ এটি ভারতের রকেট এবং উৎক্ষেপণ ব্যবস্থায় আমেরিকান কোম্পানিগুলির আস্থা বাড়াবে৷ পূর্বে, LVM-3 সফলভাবে OneWeb স্যাটেলাইট নক্ষত্রমণ্ডল দুইবার উৎক্ষেপণ করেছে।
এর সুবিধা কী হবে?
বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক কভারেজ: এখন প্রত্যন্ত অঞ্চলেও নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সহায়তা: বন্যা, ভূমিকম্প বা যেকোনো দুর্যোগের সময় মোবাইল টাওয়ার কাজ না করলে এই প্রযুক্তি অত্যন্ত কার্যকর হবে।
সস্তা ও সহজলভ্য নেটওয়ার্ক: মোবাইল নেটওয়ার্ক কোম্পানিগুলোর খরচ কমবে, যা সরাসরি উপভোক্তারা উপকৃত হবে।
সংস্থাটি বলেছে যে পরিষেবাটি ব্যবহার করতে (স্পেস থেকে সরাসরি কল), কাউকে পরিষেবা সরবরাহকারী (এয়ারটেল, ভোডাফোনের মতো মোবাইল নেটওয়ার্ক সরবরাহকারী সংস্থাগুলি) পরিবর্তন করতে হবে না। এ জন্য আমরা সারা বিশ্বের মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরদের সঙ্গে কাজ করছি।