নতুন সকাল! চাঁদের মাটি ছুঁয়ে প্রথম সূর্যোদয়ের ছবি তুলল ‘ব্লু ঘোস্ট’

ফায়ারফ্লাই অ্যারোস্পেসের ব্লু ঘোস্ট মহাকাশযান রবিবারই চাঁদের মাটিতে সফলভাবে অবতরণ করেছে। অবতরণের পর চাঁদে পিঠে প্রথম সূর্যোদয়ের ছবি পৃথিবীতে পাঠাল মার্কিন বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা…

ফায়ারফ্লাই অ্যারোস্পেসের ব্লু ঘোস্ট মহাকাশযান রবিবারই চাঁদের মাটিতে সফলভাবে অবতরণ করেছে। অবতরণের পর চাঁদে পিঠে প্রথম সূর্যোদয়ের ছবি পৃথিবীতে পাঠাল মার্কিন বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ফায়ারফ্লাই এরোস্পেস-র মহাকাশযান ‘ব্লু ঘোস্ট’৷ যা মহাকাশ গবেষণার এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।

নাসা সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ (পূর্বে টুইটার) প্রকাশিত ছবিতে চাঁদের অসম পৃষ্ঠের গভীর গর্তের মাঝে সূর্যের সোনালি রশ্মির দীপ্তি৷ ছবির সঙ্গে ছিল একটি উজ্জ্বল বার্তা: “এটি একটি নতুন ভোর, একটি নতুন দিন৷ আমরা ভালো অনুভব করছি। @Firefly_Space এর ব্লু ঘোস্ট ল্যান্ডার চাঁদের সূর্যোদয় দেখেছে- চাঁদে নতুন দিনের সূচনা এবং আগামী দুই সপ্তাহের অভিযানের প্রত্যাশা। চলুন এগিয়ে যাই!”

   

ব্লু ঘোস্ট মিশন ১ রবিবার মার্কিন পূর্ব সময় অনুযায়ী ৩:৩৪ AM (০৮:৩৪ GMT) চাঁদের উত্তর-পূর্ব দিকের মন্স ল্যাট্রেইল আগ্নেয়গিরির কাছে অবতরণ করে, যেখানে চাঁদের মেয়ার ক্রিসিয়াম অঞ্চলে এক নিঃসঙ্গ মহাকাশযানের কৃতিত্ব। এই মহাকাশযানটি ১০টি অত্যাধুনিক বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিয়ে চাঁদে পা রাখে এবং অবতরণের পরপরই চাঁদের পৃষ্ঠের প্রথম ছবি ধারণ করে।

“ঘোস্ট রাইডার্স ইন দ্য স্কাই” নামে পরিচিত ব্লু ঘোস্ট মিশনটি নাসা এবং বেসরকারি শিল্পের যৌথ উদ্যোগের অংশ, যা আর্টেমিস প্রোগ্রামের সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। এর লক্ষ্য হল মহাকাশচারীদের চাঁদে পুনরায় পাঠানো এবং মহাকাশযানের খরচ কমানো।

ব্লু ঘোস্ট মহাকাশযানটি ১৫ জানুয়ারি ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে যাত্রা শুরু করে। স্পেসএক্স ফ্যালকন ৯ রকেটের মাধ্যমে এটি মহাকাশে পৌঁছানোর পর, টেক্সাসের সিডার পার্কে অবস্থিত মিশন অপারেশন সেন্টারের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে।

মহাকাশযানটি চাঁদের মাটি বিশ্লেষণ, রেডিয়েশন সহিষ্ণু কম্পিউটার এবং স্যাটেলাইট নেভিগেশন ব্যবস্থার কার্যকারিতা পরীক্ষা সহ ১০টি অত্যাধুনিক যন্ত্র নিয়ে চাঁদে অবতরণ করেছে। এর লক্ষ্য একদিকে যেমন বৈজ্ঞানিক গবেষণা, তেমনি মহাকাশযান প্রযুক্তি উন্নয়নের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা।

ব্লু ঘোস্ট ১৪ পৃথিবী দিন ধরে চাঁদে কার্যক্রম চালাবে এবং ১৪ মার্চ একটি পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের দৃশ্য ধারণ করবে, যখন পৃথিবী চাঁদের সামনে এসে সূর্যকে আড়াল করবে। এছাড়া, ১৬ মার্চ এটি চাঁদের সূর্যাস্ত রেকর্ড করবে, যা চাঁদের পৃষ্ঠে সূর্যের প্রভাবে ধুলো কিভাবে ভাসমান অবস্থায় থাকে তা নিয়ে নতুন ধারণা প্রদান করবে। এই ধুলো প্রক্রিয়া প্রথমবারের মতো অ্যাপোলো মহাকাশচারী ইউজিন সেরনান নথিভুক্ত করেছিলেন।

ব্লু ঘোস্টের মিশন চাঁদের গঠন, এর পৃষ্ঠে সূর্যের প্রভাব, এবং মহাকাশযান প্রযুক্তির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করবে, যা ভবিষ্যত মহাকাশ মিশনগুলির জন্য অপরিহার্য।