রঙিন প্যান্ডেলের শহরে নিউমার্কেটের ফুটপাথে রবিনের সাদা-কালো পুজো!

শরতের আকাশে সাদা মেঘের ভেলা। বাতাসে কাশফুলের গন্ধ, আর প্যান্ডেলে চলছে শেষ মুহূর্তের জোরকদমে প্রস্তুতি (Durga Puja 2025)। কলকাতার নিউমার্কেট চত্বর এখন যেন এক রঙিন…

Durga Puja 2025: Robin’s Struggles on New Market’s Footpath Amid Kolkata’s Festive Glow

শরতের আকাশে সাদা মেঘের ভেলা। বাতাসে কাশফুলের গন্ধ, আর প্যান্ডেলে চলছে শেষ মুহূর্তের জোরকদমে প্রস্তুতি (Durga Puja 2025)। কলকাতার নিউমার্কেট চত্বর এখন যেন এক রঙিন ক্যানভাস। চারিদিকে মানুষের ঢল, কেনাকাটার ধুম, আনন্দ আর উল্লাসে মুখরিত। ভিড়ের মাঝেই দাঁড়িয়ে আছে বছর পনেরো-ষোলোর এক ছেলে। নাম রবিন। ফুটপাথে একটি ছোট্ট কাপড়ের দোকান বসিয়েছে সে। পলিথিনে ঢাকা তিনটে ব্যাগে গুটিকয়েক গেঞ্জি, সস্তার শাড়ি আর ছোটদের জামা-কাপড়।

মুখে ক্লান্তির ছাপ, কপালে চিন্তার রেখা। আজকে কত বিক্রি হল? প্রশ্ন শুনেই রবিন কাঁধ ঝুলিয়ে বলল, “দাদা, সকাল থেকে বসে আছি। মাত্র দুটো গেঞ্জি বিক্রি হলো।”

   

পুজো দরজায় কড়া নাড়ছে। কিন্তু তার দোকানে বিক্রিবাট্টা যেন নিঃশব্দ। আশেপাশে বড় দোকানের ঝকমকে আলো, ডিসকাউন্টের হোর্ডিং দেখে মানুষ সেদিকেই ছুটছে। রবিনের মত ছোট দোকানদারদের দিকে কেউ ফিরেও তাকাচ্ছে না। “মা বলেছে, এবারে ভাই-বোনের জন্য নতুন জামা কিনতে হবে। ছোট বোনের পুজোর শাড়ির স্বপ্ন আমি কীভাবে ভাঙি বলুন?” হালকা গলায় কথাগুলো বলল সে, যেন নিজের মনেই কথা বলছে।

রবিনের বাবা কয়েক বছর আগেই মারা গিয়েছেন। মা ঠিকা কাজে যায়। সংসারের হাল ধরেছে রবিন। স্কুল ছেড়ে সে এই ফুটপাথে বসে রোজগার করে। পুজো আসতেই ভাই-বোনেরা তাকে জিজ্ঞেস করেছে, “দাদা, আমাদের জন্য জামা আনবি তো?” সেই প্রশ্ন এখন তার মাথার ভেতর ঘুরপাক খাচ্ছে।

Advertisements

রবিন হটাৎ করে বলে উঠল, “বিক্রি না হলে কীভাবে চলবে? খাওয়া তো দূরের কথা, এই উৎসবের দিনে পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।” তবু আশা ছাড়েনি রবিন। সন্ধ্যা নামছে, সে নতুন করে জামাগুলো গুছিয়ে বসছে, একজোড়া ছোট পায়ের চটি আলগোছে সামনের দিকে সাজিয়ে রাখছে। হয়তো কারও চোখে পড়বে, কেউ হয়তো এসে বলবে, ‘এই ভাই, একটা দেখাও তো।’

 

For more updates, follow Kolkata24x7 on FacebookTwitter, InstagramYoutube; join our community on Whatsapp