কলকাতা, ৮ অক্টোবর: আজ বুধবার, যুব কংগ্রেসের (Congress) পক্ষ থেকে একটি প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করা হয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ভূষণ রামকৃষ্ণ গাভাই (B. R. Gavai)-এর উপর সাম্প্রতিক হামলার প্রতিবাদে। এই বিক্ষোভ কর্মসূচির মূল স্লোগান ছিল — “বিচার বিভাগের উপর আক্রমণ মানেই গণতন্ত্রের উপর আঘাত।” একই সঙ্গে, সারা ভারত জুড়ে দলিত সম্প্রদায়ের উপর ধারাবাহিক নিপীড়ন এবং আক্রমণের বিরুদ্ধেও এই কর্মসূচির মাধ্যমে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। এই আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ যুব কংগ্রেস লিডারশিপ কমিটির প্রধান সৌরভ প্রসাদ।
বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয় যাদবপুর ৮ বি বাসস্ট্যান্ডের সামনে থেকে। সেখানে সকাল থেকেই জমায়েত হতে থাকেন যুব কংগ্রেসের কর্মী ও সমর্থকেরা। ব্যানার, পোস্টার ও স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। হাতে হাত ধরে, গলায় গলায় মিল রেখে একত্রে প্রতিবাদ জানাতে দেখা যায় বিভিন্ন বয়স ও পেশার মানুষদেরও, যারা যুব কংগ্রেসের এই প্রতিবাদে সংহতি প্রকাশ করেন।
প্রতিবাদে অংশ নেওয়া নেতৃবৃন্দ সরাসরি অভিযোগ করেন, ভারতের বিচার বিভাগ এখন আর নিরাপদ নয়। একটি সুপরিকল্পিত রাজনীতির অংশ হিসেবেই দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলির উপর হামলা চালানো হচ্ছে। প্রধান বিচারপতি যিনি একজন দলিত এবং সংবিধানিক ন্যায়ের প্রতীক, তাঁর উপর হামলা আসলে পুরো বিচারব্যবস্থার উপরই এক মারাত্মক আঘাত।
যুব কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ দাবি করেন, এই হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় — এটি আর.এস.এস-এর শতবর্ষের ঘৃণার রাজনীতিরই ভয়ঙ্কর বহিঃপ্রকাশ। দেশজুড়ে যে ধর্মীয় মেরুকরণ ও জাতপাতের বিভাজনের রাজনীতি চলছে, তা আজ এতটাই ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে যে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির উপরও হামলা চালাতে দ্বিধা করছে না ঘৃণার রাজনীতির কারিগররা।
প্রধান বিচারপতির উপর আক্রমণ শুধু একজন ব্যক্তির উপর নয়, এটি দেশের বিচার ব্যবস্থা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের উপর সরাসরি চ্যালেঞ্জ। আমরা এভাবে চুপ করে থাকতে পারি না।
আজ দলিত সম্প্রদায়ের মানুষদের উপর বারবার যে অত্যাচার হচ্ছে — মনিপুর, হাথরাস, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, কিংবা তামিলনাড়ু — প্রতিটি রাজ্যে দলিতদের উপর হামলার ঘটনা যেন নিত্যদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ সরকার নির্বিকার। এই নীরবতা আসলে একপ্রকার মদত।
আজকের এই বিক্ষোভ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ছিল দলিত সম্প্রদায়ের উপর চলমান আক্রমণ, সামাজিক বৈষম্য এবং বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা রক্ষার প্রশ্নে দেশবাসীর মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা। যুব কংগ্রেস জানিয়েছে, এই আন্দোলন শুধু আজকের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। রাজ্যজুড়ে, এমনকি দেশব্যাপী এই ইস্যুতে আরও বৃহত্তর প্রতিবাদ কর্মসূচি গড়ে তোলা হবে।