লখনউ, ৩ অক্টোবর: উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের একটি বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে (India Politics)। তিনি বলেছেন, “২০১৭-এর আগে দাঙ্গাকারীদের মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে ডেকে ভোজ দেওয়া হতো, সেটা ছিল হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা। কিন্তু আজ দাঙ্গাকারীরা হাত জোড় করে ক্ষমা চায় এটাই এলোপ্যাথি চিকিৎসা।” এই মন্তব্য তিনি গতকাল মিরাটে একটি জনসভায় দিয়েছেন, যা সরাসরি তাঁর পূর্বসূরি অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি (এসপি) সরকারের দিকে ইঙ্গিত করে।
যোগী আদিত্যনাথ এই মন্তব্যে তাঁর সরকারের কঠোর আইনশৃঙ্খলা নীতির প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, “২০১৭-এর আগে উত্তরপ্রদেশে দাঙ্গা ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। সরকার দাঙ্গাকারীদের পুরস্কৃত করতো, তাদের সাথে বৈঠক করে সমঝোতা করা হতো। আমরা এলোপ্যাথি পদ্ধতিতে চিকিৎসা শুরু করেছি—আইনের কঠোর প্রয়োগ।
এখন দাঙ্গাকারীরা নিজেরাই ক্ষমা চায়।” তিনি উল্লেখ করেছেন যে, তাঁর শাসনে উত্তরপ্রদেশে দাঙ্গার সংখ্যা ৮০% কমেছে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি)-র তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে ১৪৭টি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনা ঘটলেও ২০২৪-এ তা কমে ২৯-এ নেমেছে। এই মন্তব্যে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
অখিলেশ বলেছেন, “যোগী সরকার শুধু প্রোপাগান্ডায় বিশ্বাসী। তাঁরা দাঙ্গা থামায়নি, বরং মানুষের মধ্যে ভয় ছড়িয়েছে। আমাদের আমলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ছিল।” তিনি যোগীকে ‘বুলডোজার বাবা’ বলে কটাক্ষ করে বলেছেন, “এটি এলোপ্যাথি নয়, স্বৈরাচারী চিকিৎসা।” সমাজবাদী পার্টির মুখপাত্র বলেছেন, ২০১২-২০১৭ সালে তাদের সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সাথে আলোচনার মাধ্যমে শান্তি বজায় রেখেছিল, যা যোগী সরকার ‘উৎসাহিত’ করে না।
এই বিতর্কের পিছনে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট গুরুত্বপূর্ণ। ২০২৭-এর উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের আগে যোগী তাঁর ‘কঠোর শাসন’-এর ইমেজকে জনপ্রিয় করতে চাইছেন বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। ২০১৭ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাজ্যে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ, যেমন অ্যান্টি-রোমিও স্কোয়াড, এনকাউন্টার এবং বুলডোজার অ্যাকশন, আলোচনায় এসেছে। তবে সমালোচকরা বলছেন, সবকটি পদক্ষেপ ই ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা।
সোশ্যাল মিডিয়াতে মমতার ডিভিসি আক্রমণে কটাক্ষ বিজেপির
ই বক্তব্যের পর উত্তরপ্রদেশের রাজনৈতিক মঞ্চ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উপর এর প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, যোগীর ‘এলোপ্যাথি’ নীতি আইনের শাসনকে দুর্বল করতে পারে। অন্যদিকে, বিজেপির সমর্থকরা বলছেন, এটি অপরাধীদের মধ্যে ভয় তৈরি করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় দুই পক্ষের তর্কে বিভক্ত হয়ে পড়েছে, যেখানে কেউ কেউ যোগীর বক্তব্যকে ‘ইনফ্ল্যামেটরি’ বলছেন।