পটনা ২৭ সেপ্টেম্বর: বিহারের রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন জনশক্তি জনতা দলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাক্তন মন্ত্রী তেজ প্রতাপ যাদব (Bihar Elections)। তিনি তাঁর দলের পোস্টারে রাখেননি লালু প্রসাদ যাদব এবং রাবড়ি দেবীর ছবি। বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু তেজ প্রতাপ তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, “আমার পিতামাতা রাষ্ট্রীয় জনতা দলে রয়েছেন।
আমি কীভাবে তাঁদের ছবি আমার দলের পোস্টারে লাগাতে পারি? তাঁরা আরজেডি-তে আছেন। তিনি আরও বলেছেন অন্য দলের নেতাদের ছবি লাগানো সংবিধান বিরুদ্ধ। তিনি বলেন তেজস্বী যাদবের হোর্ডিং-এও পিতামাতার ছবি নেই। আমি আমার পিতামাতাকে শ্রদ্ধা করি, তাঁরা আমার হৃদয়ে রয়েছেন।এই মন্তব্য বিহারের রাজনৈতিক মহলে ঝড় তুলেছে, বিশেষ করে যাদব পরিবারের অভ্যন্তরীণ কলহের প্রেক্ষাপটে। তেজ প্রতাপের জনশক্তি জনতা দল (জেজেডি) ২০২৪ সালে গঠিত হয়েছিল।
তিনি রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) থেকে বেরিয়ে নিজের দল গঠন করেন। লালু প্রসাদ যাদব এবং রাবড়ি দেবী, যাঁরা আরজেডি-র প্রতিষ্ঠাতা ও নেতৃত্বে রয়েছেন, তাঁদের ছবি তেজ প্রতাপের দলের প্রচারে ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক আরও জোরালো হয়েছে। তেজ প্রতাপের এই মন্তব্যকে অনেকে পরিবারের মধ্যে রাজনৈতিক বিভেদের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।
তেজ প্রতাপের দল জনশক্তি জনতা দল নিজেকে ‘সামাজিক ন্যায় ও ধর্মনিরপেক্ষতার’ পক্ষে দাঁড়ানো দল হিসেবে প্রচার করে। তিনি দাবি করেছেন যে, তাঁর দলের সংবিধান অনুযায়ী শুধুমাত্র দলের নেতাদের ছবি প্রচারে ব্যবহার করা হবে। তবে এই সিদ্ধান্ত অনেকের কাছে আশ্চর্যজনক, কারণ লালু এবং রাবড়ির ছবি বিহারের রাজনীতিতে প্রতীকী গুরুত্ব বহন করে।
স্থানীয় আরজেডি সমর্থকরা বলছেন, এটি পরিবারের ঐক্যের উপর প্রশ্ন তুলেছে। একজন সমর্থক বলেন, “লালুজি এবং রাবড়িজি বিহারের রাজনীতির মেরুদণ্ড। তাঁদের ছবি বাদ দেওয়া অসম্মানজনক।” এদিকে, তেজস্বী যাদবের হোর্ডিং-এও পিতামাতার ছবি না থাকার বিষয়টি নিয়ে তেজ প্রতাপের মন্তব্য নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
তেজস্বী, যিনি আরজেডি-র প্রধান মুখ এবং বিহার বিধানসভায় বিরোধী দলের নেতা, এখনও এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে আরজেডি-র মুখপাত্র মৃত্যুঞ্জয় তিওয়ারি বলেছেন, “এটি ব্যক্তিগত মতামত। দলের প্রচারে কার ছবি থাকবে, তা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে।” তিনি তেজ প্রতাপের মন্তব্যকে গুরুত্ব না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
বিহারে ২০২৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই বিতর্ক আরজেডি-র অভ্যন্তরীণ ঐক্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তেজ প্রতাপের জনশক্তি জনতা দল এখনও রাজ্যে শক্তিশালী ভিত্তি গড়তে পারেনি, তবে তাঁর এই মন্তব্য দলের প্রচারে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
লাদাখ অশান্তিতে সোনম-পাক যোগ পেল নয়াদিল্লি
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তেজ প্রতাপ নিজেকে আরজেডি থেকে আলাদা করার চেষ্টা করছেন, কিন্তু এটি তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে জটিল করে তুলতে পারে। এদিকে, সামাজিক মাধ্যমে এই বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ তেজ প্রতাপের সিদ্ধান্তকে ‘স্বাধীনতার প্রতীক’ বলছেন, আবার কেউ এটিকে ‘পরিবারের অপমান’ হিসেবে দেখছেন।