‘খেলার ময়দানে হার-জিত স্বাভাবিক’— মন্তব্য অভিষেকের

ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন এবং মর্যাদাপূর্ণ ফুটবল টুর্নামেন্ট ডুরান্ড কাপ সবসময়ই ফুটবলপ্রেমীদের কাছে বিশেষ আবেগের জায়গা। এ বছর প্রথমবার অংশ নিয়েছিল ডায়মন্ড হারবার ফুটবল ক্লাব (DHFC)।…

winning-and-losing-are-normal-on-the-playing-field-comments-abhishek

ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন এবং মর্যাদাপূর্ণ ফুটবল টুর্নামেন্ট ডুরান্ড কাপ সবসময়ই ফুটবলপ্রেমীদের কাছে বিশেষ আবেগের জায়গা। এ বছর প্রথমবার অংশ নিয়েছিল ডায়মন্ড হারবার ফুটবল ক্লাব (DHFC)। শুরু থেকেই আশায় বুক বেঁধেছিল বাংলার সমর্থকরা। নতুন দল, নতুন স্বপ্ন—কেউ ভাবেনি যে এই ক্লাব একেবারে ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছে যাবে।  

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, (Abhishek Banerjee) যিনি এই দলের অন্যতম প্রধান কর্ণধার, ফাইনালের পর সমর্থকদের উদ্দেশে একটি আবেগঘন বার্তা দেন। তাঁর কথায়, “আমাদের প্রথম ডুরান্ড কাপে, ফাইনাল পর্যন্ত লড়াই করে গেছে ছেলেরা—যা আগে কোনও অভিষেক দল কখনও করতে পারেনি।” সত্যিই, এটি শুধু একটি খেলার পরিসংখ্যান নয়, এটি এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।

   

অভিষেক (Abhishek Banerjee) আরও জানান, এই যাত্রা কেবল খেলোয়াড়দের পরিশ্রমে নয়, সমর্থকদের অটুট ভালোবাসা ও বিশ্বাসের ফল। প্রতিটি ম্যাচে গ্যালারিতে ভেসে আসা উল্লাস, স্লোগান, হাততালি—সবই ফুটবলারদের বাড়তি শক্তি দিয়েছে। সমর্থন ছাড়া কোনও দল এত দূর আসতে পারে না। তাই তিনি ডিএইচএফসি-র এই যাত্রাকে সমর্থক এবং দলের যৌথ সাফল্য বলে অভিহিত করেছেন।

হ্যাঁ, ফাইনালে গিয়ে শেষ পর্যন্ত নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি-র কাছে হারতে হয়েছে। কিন্তু এটিকে সহজ হারে ফেলা যায় না। সারা ম্যাচে ছেলেরা সর্বশক্তি দিয়ে লড়েছে, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত হাল ছাড়েনি। ট্রফি এবার হাতছাড়া হলেও সবার মনে জেগেছে এক অদম্য আত্মবিশ্বাস—“আমরা পারি।”

অভিষেক (Abhishek Banerjee) স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এটি কোনও সমাপ্তি নয়, বরং শুরু। তিনি প্রতিপক্ষ নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “তাদের দুর্দান্ত খেলার জন্য এবং টানা দ্বিতীয়বার কাপ জেতার জন্য অভিনন্দন। তারা প্রাপ্য জয়ী।” প্রতিপক্ষকে সম্মান জানানো এবং একইসঙ্গে নিজের দলের ছেলেদের উৎসাহ দেওয়া—দুটিই এই বক্তব্যে ফুটে উঠেছে।

Advertisements

ডায়মন্ড হারবার ফুটবল ক্লাব এখন কেবল একটি ক্লাব নয়, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব। কারণ এই মরসুমে বাংলার একমাত্র ক্লাব হিসেবে আই-লিগে খেলতে চলেছে ডিএইচএফসি। জাতীয় মঞ্চে রাজ্যের নাম উজ্জ্বল করার দায়িত্ব এখন তাদের কাঁধে। আর এর জন্য দরকার আরও বেশি সমর্থন, আরও বেশি ভালোবাসা, আরও বেশি উৎসাহ।

সমর্থকদের উদ্দেশে অভিষেকের (Abhishek Banerjee) স্পষ্ট বার্তা—“আপনাদের ছাড়া এই পথ চলা সম্ভব নয়।” তিনি বিশ্বাস করেন, ডুরান্ড কাপের অভিজ্ঞতা দলের জন্য এক অমূল্য শিক্ষা। খেলোয়াড়রা বুঝেছে কোথায় আরও উন্নতি করতে হবে, কীভাবে কঠিন মুহূর্তে লড়াই চালিয়ে যেতে হয়। ভবিষ্যতের জন্য এই অভিজ্ঞতাই হবে মূল পুঁজি।

আজ বাংলার ফুটবলপ্রেমীরা নতুন করে আশায় বুক বাঁধছে। মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহামেডানের গৌরবময় ঐতিহ্যের ভিড়ে ডায়মন্ড হারবার ফুটবল ক্লাবও গড়ে তুলছে নিজেদের ইতিহাস। প্রথম ডুরান্ড কাপেই ফাইনালে পৌঁছনো সহজ কথা নয়। তাই এই যাত্রা ভবিষ্যতের ইঙ্গিত, সামনে আরও বড় কিছু অপেক্ষা করছে।

শেষ কথা একটাই—হারের মাঝেও জয়ের গল্প লুকিয়ে থাকে। ডুরান্ড কাপের ফাইনাল হারলেও ডায়মন্ড হারবার ফুটবল ক্লাব জিতেছে মানুষের মন, জিতেছে সমর্থকদের বিশ্বাস, জিতেছে বাংলার গর্ব। এই পথ চলা এখনই শুরু। সামনে আই-লিগ, সামনে আরও চ্যালেঞ্জ, সামনে আরও সম্ভাবনা। আর এই যাত্রা সম্ভব হবে কেবল সমর্থকদের ভালবাসা আর দলের অক্লান্ত পরিশ্রমের উপর ভর করেই।