মমতার দেখানো পথে বিধানসভায় স্পিকারের দিকে কাগজ ছুঁড়লেন শুভেন্দু

বিধানসভায় সোমবার একটি চরম ঘটনা ঘটে, যখন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে কাগজ ছিঁড়ে ছুড়ে মারেন। এই ঘটনা রাজ্য বিধানসভায় বিরাট হট্টগোলের…

why-did-suvendu-adhikari-throw-paper-at-the-speaker-in-west-bengal-assembly

বিধানসভায় সোমবার একটি চরম ঘটনা ঘটে, যখন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে কাগজ ছিঁড়ে ছুড়ে মারেন। এই ঘটনা রাজ্য বিধানসভায় বিরাট হট্টগোলের জন্ম দেয় এবং বিজেপির পক্ষ থেকে চরম নিন্দা করা হয়।

এদিন বিধানসভায় সুরুচিপূর্ণ পরিস্থিতি ছিল না। বিজেপি তাদের অভিযোগ তুলেছিল, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সরস্বতী পুজোয় বাধা দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিল বিজেপি, কিন্তু স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের মুলতুবি প্রস্তাব পড়তে দেন। এরপর বিজেপির মহিলা বিধায়কদের একটি অংশ, যাদের নেতৃত্বে ছিলেন অগ্নিমিত্রা পাল, দাবি করেন যে সরস্বতী পুজোর উপর এই বিধিনিষেধ নিয়ে আলোচনা করা উচিত। কিন্তু স্পিকার আলোচনা করতে দেননি। এর পরই বিধানসভায় স্লোগান শুরু হয় এবং বিজেপি বিধায়কেরা ওয়াকআউট করেন।

   

এরই মধ্যে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপির অন্যান্য বিধায়করা নিজের আসন থেকে উঠে এসে স্পিকারের দিকে এগিয়ে যান। তাঁরা বারবার মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করতে থাকেন, এবং “হিন্দুবিরোধী সরকার”, “জেহাদিদের সরকার” বলে স্লোগান দেন। স্পিকারের আসনের সামনে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারী হাউজের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেন এবং তা স্পিকারের দিকে ছুড়ে দেন।

এই ঘটনাকে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ‘নিন্দনীয়’ বলে অভিহিত করেন এবং বলেন, “আপনারা যে আচরণ করছেন, তা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।” এরপর বিধানসভার প্রথমার্ধ মুলতুবি হওয়ার আগেই স্পিকার শুভেন্দু অধিকারী, বিশ্বনাথ কারক, বঙ্কিম ঘোষ এবং অগ্নিমিত্রা পালকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেন। যদিও, সাসপেনশনের সময়সীমা স্পিকার ওই মুহূর্তে নির্দিষ্ট করেননি।

এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিজেপির এই আচরণকে ‘অসভ্যতা’ এবং ‘আধিপত্য’ বলেই মন্তব্য করা হয়েছে। তৃণমূল নেতা শিবনাথ সরকার বলেন, “বিধানসভার মতো একটি মর্যাদাপূর্ণ জায়গায় এই ধরনের আচরণ একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।” অন্যদিকে, বিজেপি পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তাদের ‘সংস্কৃতি ও ধর্মীয় অধিকার’ রক্ষার জন্য এই প্রতিবাদ করা হয়েছে।

যতই রাজনৈতিক পারদ চড়ুক না কেন, বিধানসভায় এই ধরনের অশান্তি ভবিষ্যতে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে নতুন প্রশ্ন উঠাবে। আইনপ্রণেতাদের আচরণ যেভাবে বেআইনি ও অবমাননাকর হয়ে উঠছে, তা নিয়ে রাজ্যের শাসক ও বিরোধী দলের মধ্যে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টির সম্ভাবনা প্রবল।