মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতীয় নাগরিকদের বহিষ্কারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাঞ্জাবে তীব্র বিতর্ক ও রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। বিজেপি বিধায়ক মঞ্জিন্দর সিং সিরসা শনিবার এক বক্তব্যে অভিযোগ করেন, “পাঞ্জাবের ট্রাভেল এজেন্টরা তরুণদের অবৈধ পথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়ে তাদের শোষণ করছে। পাঞ্জাবের যুবকরা আমেরিকা যাওয়ার স্বপ্নে তাদের জমি বিক্রি করে, কিন্তু ট্রাভেল এজেন্টরা তাদের ঠকিয়ে অবৈধ পথে পাঠাচ্ছে। “
সিরসা আরও অভিযোগ করেন, “ভগবন্ত মানের সরকার এবং পুলিশ এজেন্টরা ঘুষ নিয়ে এই অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত। তিনি আপ (Aam Aadmi Party) সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, আপ সরকার পাঞ্জাবের জনগণের জন্য কিছুই করেনি, বরং রাজ্যকে ধ্বংস করেছে।”
এদিকে, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান (Bhawanth Mann) কেন্দ্র সরকারের অভিবাসীদের এ দেশে ফিরিয়ে আনা পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি দাবি করেন, “অমৃতসরকে বিশেষভাবে বেছে নেওয়া হয়েছে যাতে মনে হয় শুধু পাঞ্জাবেই অবৈধ অভিবাসী (illegal migration) রয়েছে। মান প্রশ্ন তোলেন, কেন আহমেদাবাদ বা অন্য কোনো শহরকে বেছে নেওয়া হয়নি? তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান, ভারতের শত্রু দেশ, অমৃতসরের খুব কাছেই অবস্থিত। এই সিদ্ধান্ত রাজ্যের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।”
শিবসেনা (UBT) সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী ভগবন্ত মানের বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন। তিনি বলেন, “প্রথম বিমানটি, যেটি মানবিক শর্তে ফেরত আনা অভিবাসীদের নিয়ে এসেছে, তার বেশিরভাগ যাত্রী গুজরাটের ছিল। সে ক্ষেত্রে, বিমানটি গুজরাটে অবতরণ করা উচিত ছিল। কিন্তু এটি অমৃতসরে নামানো হয়েছে, যা বিভ্রান্তি তৈরি করেছে যে সব অবৈধ অভিবাসী পাঞ্জাব থেকেই এসেছে।”
চতুর্বেদী আরও বলেন, “যদি সরকার ট্রাভেল এজেন্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নেয়, তা হলে তা সরকারের ব্যর্থতা।”
এই বিতর্কে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের মধ্যে নতুন করে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে, যা পাঞ্জাবের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে। পাঞ্জাবের যুবকদের অবৈধ পথে বিদেশে পাঠানোর ঘটনা এবং এর পেছনে ট্রাভেল এজেন্টদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একই সঙ্গে, কেন্দ্র সরকারের সিদ্ধান্তকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পাঞ্জাবের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা আরও বেড়েছে, এবং এই ইস্যুটি জাতীয় স্তরেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।