Supreme Court: SIR মামলা ঘিরে তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানউতোর, সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের নয়া পদক্ষেপ

নিবিড় ও বিশেষ সমীক্ষা (SIR) ইস্যুতে এবার সরাসরি আইনি লড়াইয়ে নামল রাজ্য সরকার। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে বিহারে চালু হওয়া বিতর্কিত বিশেষ ও নিবিড় সমীক্ষা পদ্ধতি…

Supreme Court Declares SSC Exams Will Be Held on 7th and 14th as Scheduled

নিবিড় ও বিশেষ সমীক্ষা (SIR) ইস্যুতে এবার সরাসরি আইনি লড়াইয়ে নামল রাজ্য সরকার। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে বিহারে চালু হওয়া বিতর্কিত বিশেষ ও নিবিড় সমীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে ইতিমধ্যেই মামলা দায়ের করেছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। এবার সেই মামলাতেই পক্ষ হিসেবে যুক্ত হওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাল পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

মামলার মূল বিষয়—ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে কেন্দ্রীয় শাসকদলের নির্দেশে ‘নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকা পালন করছে’ বলেই অভিযোগ। বিহারে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া এই SIR পদ্ধতির বিরুদ্ধে মহুয়া মৈত্র সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দায়ের করেন। তাঁর বক্তব্য, এই পদ্ধতির মাধ্যমে তফশিলি জাতি ও উপজাতিদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে। একইভাবে সংখ্যালঘু ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণির নাগরিকদের নাম কেটে দেওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল। এর নেপথ্যে রয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য।

   

তৃণমূল শিবিরের আশঙ্কা, আগামী দিনে এই একই মডেল পশ্চিমবঙ্গেও চালু করার চেষ্টা করবে নির্বাচন কমিশন। আর সেই কারণেই এবার রাজ্য সরকার সরাসরি এই মামলায় হস্তক্ষেপ করতে চাইছে। সূত্রের খবর, রাজ্য অ্যাডভোকেট জেনারেলের দফতর থেকে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে ইন্টারভেনশন পিটিশন (Intervention Petition) জমা দেওয়া হয়েছে।

মামলায় কেন যুক্ত হতে চাইছে রাজ্য?

রাজ্যের বক্তব্য, SIR পদ্ধতির মাধ্যমে নির্বাচনী তালিকা থেকে লক্ষাধিক নাম বাদ পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। অথচ এই পদ্ধতির কোনও সংবিধানিক ভিত্তি নেই। গণতন্ত্রে অংশগ্রহণের অধিকার নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার, এবং কোনও প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে সেই অধিকার খর্ব করা যায় না।

রাজ্যের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, “ভোটার তালিকা সংশোধনের ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট বিধি ও প্রক্রিয়া রয়েছে। কিন্তু SIR-এর মাধ্যমে সেই বিধি লঙ্ঘন করে ‘সন্দেহভাজন’ তকমা দিয়ে অনেকের নাম ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। এটা যদি বিহারে হয়, আগামী দিনে তা পশ্চিমবঙ্গেও হবে না—এমন নিশ্চয়তা কোথায়?”

রাজনীতির উত্তাপ

Advertisements

এই মামলা ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, বিজেপি ভোটের ময়দানে হার মেনে এখন প্রশাসনিক দিক থেকে ভোটার তালিকায় হস্তক্ষেপ করছে। অন্যদিকে, বিজেপির পাল্টা বক্তব্য, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন সংস্থা এবং তারা আইন মেনেই কাজ করছে।

তবে SIR পদ্ধতি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এখনও কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। কমিশনের এক পদস্থ কর্তা বলেন, “SIR এখনও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।”

আদালতের নজরে গোটা বিষয়

এখন প্রশ্ন, সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের এই ইন্টারভেনশন পিটিশন গ্রহণ করে কি না। যদি করে, তাহলে মামলার গুরুত্ব আরও বাড়বে এবং বিষয়টি বৃহত্তর সাংবিধানিক আলোচনার বিষয় হয়ে উঠবে। এমনও হতে পারে, মামলার শুনানিতে রাজ্য ও কেন্দ্র—উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতিরা নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও পর্যবেক্ষণ রাখবেন।

বর্তমানে বিষয়টি বিচারাধীন। তবে যেভাবে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক ও ভোটার অধিকারকে কেন্দ্র করে এই মামলা বৃহৎ আকার নিচ্ছে, তাতে আগামী দিনে ভারতের নির্বাচন ব্যবস্থার একটি নতুন মোড় ঘোরার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।