উপনির্বাচনে নোটার সঙ্গে ‘লড়াই’! সর্বত্রই জামানত জব্দ বাম-কংগ্রেসের

পশ্চিমবঙ্গের ছয়টি বিধানসভা উপনির্বাচনে (West Bengal By election 2024) বামফ্রন্ট (CPIM) এবং কংগ্রেসের (Congress) হতাশাজনক পারফরম্যান্স আরও একবার প্রমাণ করল যে রাজ্যের রাজনীতিতে এই দুই…

bad result for poor performence by Cpim and congress in west bengal by election 2024

পশ্চিমবঙ্গের ছয়টি বিধানসভা উপনির্বাচনে (West Bengal By election 2024) বামফ্রন্ট (CPIM) এবং কংগ্রেসের (Congress) হতাশাজনক পারফরম্যান্স আরও একবার প্রমাণ করল যে রাজ্যের রাজনীতিতে এই দুই দলের অবস্থান দিন দিন অবনতি হচ্ছে। আলাদা আলাদা ভাবে প্রার্থী দেওয়ার পরেও বাম ও কংগ্রেস উভয় দলের প্রার্থীরা জামানত রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। 

CPIM: ‘শূন্যে’র থেকে রেহাই কবে? পিকের মতো ‘আইপ্যাক’ গড়তে বিজ্ঞাপণ সিপিএমের

   

উপনির্বাচনে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের প্রার্থীদের ভোট এতটাই কম পড়েছে যে, কোথাও কোথাও ‘নোটা’র সঙ্গেও লড়াই করতে হয়েছে তাদের। নির্বাচনের সময় ‘নোটা’ (উপরুক্তদের কেউ নয়) একটি প্রতিবাদমূলক বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা হয়। তবে, গণনা চলাকালীন বিভিন্ন রাউন্ডে ‘নোটা’র থেকে পিছিয়ে পড়ার ঘটনা বাম ও কংগ্রেসের রাজনৈতিক দৈন্যের নিদর্শন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

উত্তরবঙ্গের মাদারিহাটে পরিস্থিতি আরও করুণ। সেখানে বাম শরিক আরএসপি এবং কংগ্রেস উভয়ের প্রার্থী প্রথম চার রাউন্ডেই ‘নোটা’র থেকে কম ভোট পান। আরএসপি প্রার্থী রাউন্ড ধরে ধরে পিছিয়ে ছিলেন, এবং কংগ্রেস প্রার্থীও প্রথম পাঁচ রাউন্ডে প্রায় একই অবস্থায় ছিলেন।

সৃজনশীল কমরেডের খোঁজে সেলিম, ন্যূনতম ১৮ হাজার বেতন দাবি

শেষ পর্যন্ত মাদারিহাটে কংগ্রেস ‘নোটা’র তুলনায় সামান্য এগিয়ে গেলেও, পুরো সময়জুড়ে পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। ষষ্ঠ রাউন্ড পর্যন্তও কংগ্রেস প্রার্থী ‘নোটা’র থেকে পিছিয়ে ছিলেন। যদিও পরে তারা সামান্য এগিয়ে যায়, কিন্তু এর মাধ্যমে ভোটারদের সমর্থন যে কার্যত অনুপস্থিত, তা স্পষ্ট হয়ে যায়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে তীব্র মেরুকরণের ফলে বাম এবং কংগ্রেসের রাজনৈতিক অবস্থান ক্রমশ সংকুচিত হয়ে পড়েছে।

রাজ্যে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের সাংগঠনিক ভিত্তি প্রায় ভেঙে পড়েছে। তাদের তরুণ সমর্থকেরা হয় তৃণমূল, নয়তো বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে।এই নির্বাচনে বাম এবং কংগ্রেস আলাদা আলাদা প্রার্থী দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে, যা ভোট ভাগাভাগির কারণ হয়েছে।বাম এবং কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের অভাব এবং জনসংযোগের ঘাটতি তাদের আরও পিছিয়ে দিয়েছে।

এই উপনির্বাচনে তৃণমূলের একচেটিয়া জয় এবং বিজেপির ভরাডুবি স্পষ্ট করেছে যে রাজ্যে তৃতীয় কোনও শক্তির জায়গা কার্যত নেই। যেখানে তৃণমূল তাদের উন্নয়নমূলক কাজ দিয়ে ভোটারদের আস্থা বজায় রাখতে পেরেছে, বিজেপি বিরোধী শক্তি হিসাবে কার্যকর কৌশল গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে। এর মধ্যে বাম-কংগ্রেস পুরোপুরি প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে। 

জিরি নদীর তীরে সে এক সবুজ বাংলা, যেখানে মাথা কাটার ভয়ে বাঁচে বাঙালি

বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের এই পরাজয় শুধু তাদের রাজনৈতিক দৈন্যকেই নয়, বরং রাজ্যের মেরুকৃত রাজনীতির বাস্তবতাকেও তুলে ধরে। তাদের ভোট ‘নোটা’র সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে বাধ্য হওয়া এক গভীর সংকেত।
রাজনীতির ময়দানে নতুন প্রাসঙ্গিকতা অর্জন করতে হলে, বাম ও কংগ্রেসকে একত্রিত হয়ে কাজ করার পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নিজেদের স্থান করে নিতে হবে। নাহলে ভবিষ্যতে রাজ্যের রাজনীতিতে তাদের অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।