পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মোহনপুরে ফের তৃণমূলের (TMC) গোষ্ঠী কোন্দলে রক্ত ঝরলো। মঙ্গলবার রাতে বিধায়ক ঘনিষ্ঠ তৃণমূল কর্মী (TMC) সফিকুল আলমের ওপর আক্রমণ চালায় অন্য গোষ্ঠীর কর্মীরা, যার ফলে তিনি গুরুতর আহত হন। এই ঘটনার পর তাকে স্থানীয় মোহনপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, পরবর্তীতে সেখান থেকে তাকে এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রেফার করা হয়।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে মোহনপুরের বাগদা হাসপাতাল মোড়ে সফিকুল আলমকে কিল, চড়, ঘুসি মেরে মারধর করা হয়। একদল হামলাকারী সফিকুলকে তুলে নিয়ে মাটিতে ফেলে দিয়ে শারীরিকভাবে আঘাত করতে থাকে। গুরুতর আহত অবস্থায় যখন সফিকুল মাটিতে পড়ে যান, তখন স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে দ্রুত হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
এটি তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের নতুন অধ্যায়। কিছুদিন আগে মোহনপুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মানিক মাইতি, যাকে অভিষেক ব্যানার্জী সরিয়ে দিয়ে বিধায়ক বিক্রম প্রধানকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন, সেই সময় থেকেই এই গোষ্ঠী কোন্দল শুরু বলে অভিযোগ। সফিকুল আলমের বাড়িতে বিধায়কের কার্যালয় খোলার ঘটনাই মূলত এই সংঘর্ষের সূত্রপাত বলে দাবি করেছে স্থানীয়রা।
তৃণমূল কর্মী সফিকুল আলম দাবি করেছেন, এই হামলার পিছনে প্রাক্তন ব্লক তৃণমূল সভাপতি মানিক মাইতির হাত রয়েছে। তার নেতৃত্বে মসি খান নামক এক দুষ্কৃতী সফিকুল আলমকে আক্রমণ করেছে। হামলার ঘটনায় এলাকার পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এবং এলাকাবাসী এই ঘটনার নিন্দা করেছেন।
এদিকে, তৃণমূলের নেতৃত্ব এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে এবং গোষ্ঠী কোন্দল থেকে দলের শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের কথা জানিয়েছে। দলীয় নেতারা জানিয়েছেন, এসব অশান্তি দলের ভিতরে কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বিরোধী দলগুলো তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা ও শাসক দলের ক্ষমতার লড়াইয়ের ফলস্বরূপ এই ধরনের অশান্তির ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ করেছে।
বিরোধী দলগুলির দাবি, রাজ্য সরকারের এই ধরনের গোষ্ঠী কোন্দল এবং আক্রমণ-প্রতিরোধের ঘটনাগুলি রাজ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল যে শুধু দলের ভিতরেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং সাধারণ জনগণের জন্যও বিপদের কারণ হতে পারে, তা তারা উল্লেখ করেছে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এ ধরনের ঘটনা প্রায়শই ঘটছে এবং প্রশাসন এখনও যথাযথ পদক্ষেপ নেননি বলে বিরোধীরা অভিযোগ করেছে।
এদিকে, পুলিশ প্রশাসন ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং তারা হামলাকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে। পুলিশ আশা করছে খুব শীঘ্রই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হবে। তবে এই পরিস্থিতি যদি অব্যাহত থাকে, তবে রাজ্যের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রাজ্যবাসী এখন দেখছে, পুলিশ এবং প্রশাসন এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেয় এবং স্থানীয় জনগণের মধ্যে যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, তা কীভাবে প্রশমিত করা সম্ভব হয়।