সাধুদের উপর লাঠিচার্জ, ইন্দিরার পতন মনে করালেন তরুণজ্যোতি

আজ নবান্ন অভিযানের সময় এক চাঞ্চল্যকর ঘটনায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধু-সন্তরা এবং বিজেপি নেতা তরুণ জ্যোতি তিওয়ারি (Tarunjoyti)। অভিযোগ উঠেছে, মুখ্যমন্ত্রী…

Tarunjoyti reminds indira gandhi

আজ নবান্ন অভিযানের সময় এক চাঞ্চল্যকর ঘটনায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধু-সন্তরা এবং বিজেপি নেতা তরুণ জ্যোতি তিওয়ারি (Tarunjoyti)। অভিযোগ উঠেছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পুলিশ নিরস্ত্র সাধুদের উপর নির্মমভাবে লাঠিচার্জ করেছে। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ সন্ন্যাসীরা মমতা সরকারের বিরুদ্ধে অভিশাপ উচ্চারণ করেছেন, যা ইতিহাসের একটি গুরুতর ঘটনার সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে।

বিজেপি নেতা তরুণ জ্যোতি তিওয়ারি দাবি করেছেন, “যেমন গোমাতা-ভক্ত সন্ন্যাসীদের উপর নির্যাতনের কারণে ইন্দিরা গান্ধীর সরকারের পতন হয়েছিল, তেমনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারও ধ্বংস হয়ে যাবে।” এই ঘটনা রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

   

নবান্ন অভিযানের পটভূমি

নবান্ন অভিযানের আয়োজন করা হয়েছিল অভয়া নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় ন্যায়বিচার দাবি করতে। এই অভিযানে অভয়ার শোকার্ত পিতামাতা এবং বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের সাধু-সন্তরা অংশ নিয়েছিলেন। তবে, শান্তিপূর্ণ এই প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশের তরফে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

সাধুদের অভিযোগ, পুলিশ শুধু অভয়ার পরিবারের উপরই হামলা চালায়নি, বরং নিরস্ত্র সাধুদের উপরও লাঠিচার্জ করেছে। এই ঘটনায় অনেক সাধু আহত হয়েছেন, এবং তাঁদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সাধুদের অভিশাপ ও ইন্দিরার পতনের সঙ্গে তুলনা

নবান্ন অভিযানে পুলিশের এই কঠোর পদক্ষেপের পর ক্ষুব্ধ সন্ন্যাসীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে অভিশাপ উচ্চারণ করেছেন। তাঁরা বলেছেন, “ইন্দিরা গান্ধীর সরকার সাধু-সন্তদের উপর নির্যাতন চালিয়েছিল, যার ফলে তাঁর সরকারের পতন হয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একই পথে হাঁটছেন, এবং তাঁর সরকারেরও একই পরিণতি হবে।”

এই বক্তব্যের মাধ্যমে সাধুরা ইতিহাসের একটি গুরুতর ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন, যা ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়। বিজেপি নেতা তরুণ জ্যোতি তিওয়ারি এই ঘটনাকে ‘ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “এটি শুধু রাজনৈতিক দমন নয়, এটি মানুষের ধর্মবিশ্বাস এবং মানবিকতার উপর আঘাত।”

Advertisements

আরজি কর বর্ষপূর্তিতে ফের হাসপাতালকাণ্ড, ভুবনেশ্বরে নার্সের মৃত্যুতে চাঞ্চল্য

ইতিহাসের প্রতি ইঙ্গিত

ইন্দিরা গান্ধীর সরকারের পতনের সঙ্গে এই ঘটনার তুলনা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যেও আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। ১৯৭০-এর দশকে ইন্দিরা গান্ধীর জরুরি অবস্থার সময় সাধু-সন্তদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল, যা তাঁর সরকারের পতনের অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়।

তরুণ জ্যোতি তিওয়ারি এই ঐতিহাসিক ঘটনার সঙ্গে মমতা সরকারের বর্তমান পদক্ষেপের তুলনা করে বলেছেন, “ইতিহাস নিজেকে পুনরাবৃত্তি করে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই কাজ তাঁর সরকারের পতনের সূচনা হবে।”

নবান্ন অভিযানে সাধুদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এই ঘটনা শুধু রাজনৈতিক দমনের বিষয় নয়, বরং ধর্মীয় আস্থা ও মানবিকতার প্রতি আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সাধুদের অভিশাপ এবং বিজেপির তীব্র প্রতিক্রিয়া এই ঘটনাকে রাজ্যের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরিণত করেছে। আগামী দিনে এই ঘটনার প্রভাব রাজ্যের জনমানসে এবং রাজনৈতিক সমীকরণে কীভাবে প্রতিফলিত হবে, তা এখন দেখার বিষয়।