কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো (Justin Truedue) বর্তমানে এক রাজনৈতিক সংকটের মুখোমুখি, যা তার পদত্যাগের দিকে ঠেলে দিতে পারে। তিনি ক্রমশ তার নিজ দলের মধ্যে একা হয়ে পড়ছেন এবং তাঁকে ভারত বিরোধী অভিযোগের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জগুলির দৃষ্টি সরাতে চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে। এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে কানাডার অবস্থা অবনতির দিকে চলেছে, অর্থনীতির অবনতি ঘটছে, এবং তার দলের মধ্যেও অসন্তোষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ভারতের মদতেই বাংলাদেশে অশান্তি, বিস্ফোরক দাবি সেলিমের
লিবারেল পার্টির (Liberal Party) মধ্যে বিদ্রোহের সূচনা হয়েছে গত বছর থেকে। লিবারেল পার্টির একাধিক প্রভাবশালী সংসদ সদস্য, যেমন শনের কেসি এবং কেন ম্যাকডোনাল্ড, প্রকাশ্যে ট্রুডোর পদত্যাগ দাবি করেছেন। তারা বলেছেন, ট্রুডোর নেতৃত্বের প্রতি অসন্তোষ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দলের মধ্যে সমর্থন কমে যাচ্ছে। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২০টিরও বেশি লিবারেল এমপি ট্রুডোর পদত্যাগের জন্য একটি শপথপত্রে স্বাক্ষর করেছেন, যা দলের ভেতরে গভীর অসন্তোষের ইঙ্গিত দেয়।
এই সংকটের মধ্যে ট্রুডোর সরকার একটি বড় ধাক্কা খেয়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের পদত্যাগ এটি আরও জোরালো করেছে। ফ্রিল্যান্ডের পদত্যাগের মূল কারণ ছিল নীতিগত মতবিরোধ, বিশেষ করে ট্রুডোর যুক্তরাষ্ট্রের ওপর সম্ভাব্য শুল্ক আরোপ এবং অর্থনৈতিক কৌশল নিয়ে বিতর্ক। ফ্রিল্যান্ডের এই পদত্যাগ সরকার ও দলের মধ্যে অস্থিরতা বাড়িয়ে দিয়েছে, এবং এটি ট্রুডোর নেতৃত্বের প্রতি সন্দেহের সৃষ্টি করেছে।
এবার ভারতে এইচএমপিভি! আট মাসের শিশুর শরীরে চিনা ভাইরাসের সংক্রমণ
এছাড়া, ট্রুডোর রাজনৈতিক কর্মসূচীও তার বিরুদ্ধে বিপদ তৈরি করেছে। যদিও তার সরকার বৈশ্বিক এবং অভ্যন্তরীণ সংকটের বিরুদ্ধে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, তবে এসব পদক্ষেপ তেমন ফলপ্রসূ হতে দেখা যাচ্ছে না। কানাডার অর্থনীতি বর্তমানে এক কঠিন সময়ের মধ্যে পড়ে আছে, এবং জনগণের মধ্যে অভ্যন্তরীণ সংকটের প্রতি অসন্তোষ বেড়ে গেছে। এর ফলে, ট্রুডোর রাজনৈতিক সহায়করা ক্ষুন্ন হয়েছে এবং বেশ কিছু বড় রাজনৈতিক জোট ভেঙে পড়েছে।
ট্রুডোর পদত্যাগের প্রশ্নটি শুধুমাত্র তার দলের ভিতরে নয়, বরং পুরো জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যখন জনগণ এবং রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা তার নেতৃত্বের পরিণতি নিয়ে আলোচনা করছেন, তখন এটা স্পষ্ট হচ্ছে যে তার বর্তমান অবস্থান কতটা অনিশ্চিত। লিবারেল পার্টির নেতাদের মধ্যে অসন্তোষ এবং সরকারের নীতির প্রতি বিরোধিতা ট্রুডোর জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
বালুচিস্তানে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে ৪৭ জওয়ান নিহত!
ট্রুডোর এই সংকট তার রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে এক বিপদজনক পরিস্থিতিতে ফেলেছে। তবুও, এখন পর্যন্ত তিনি নিজের পদে থেকে যাওয়ার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন। তবে যদি তার বিরুদ্ধে আরও চাপ বাড়ে এবং দলের মধ্যে বিদ্রোহ জোরালো হয়, তাহলে তাকে হয়তো পদত্যাগের জন্য বাধ্য হতে হবে। এই পরিস্থিতি কানাডার রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হতে পারে, যেখানে ট্রুডোর সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ভবিষ্যতের রাজনৈতিক পরিবেশের রূপরেখা নির্ধারিত হবে।