নয়াদিল্লি ৬ অক্টোবর: উত্তরবঙ্গের বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন (India Politics) বিজেপি সাংসদ শংকর ঘোষ এবং বিধায়ক খগেন মুর্মু। খগেন মুর্মুকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপি নেতা এবং জাতীয় মুখপাত্র সুধাংশু ত্রিবেদী বলেছেন তৃণমূল বাংলায় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আইন শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে।
গতকাল বন্যা পরিস্থিতিতে দুর্গাপূজার কার্ণিভ্যালে অংশ নেওয়ার ঘটনাকে টেনে তিনি বলেন ‘মমতার কাছে প্রথমে উৎসব।’ একদিকে বন্যায় মানুষের হাহাকার সত্ত্বেও তিনি উৎসবের আনন্দে মেতেছিলেন। আবার আজ বিজেপির দুই সঙ্গী বন্যা কবলিতদের সাহায্যার্থে এসে দাঁড়ালে তাদের মার খেতে হল।
বিজেপি নেতাদের উপর হামলার পরই উত্তরবঙ্গে মমতা, কী বার্তা দিলেন?
সুধাংশু মমতার বিরুদ্ধে আদিবাসী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে অবমাননার অভিযোগ করে বলেন খগেন মুর্মু আদিবাসী জনজাতির মানুষ। তাকেও আজ রক্তাক্ত হতে হল। তিনি বলেন মমতার একটি ভিডিও আছে যেখানে আদিবাসীদের সঙ্গে নাচার সময় তিনি হাতে গ্লাভস পরেছিলেন। এই ঘটনাকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন মুখ্যমন্ত্রী আদিবাসীদের হেয় করার জন্য এবং তাদের অচ্ছুৎ দেখানোর জন্য এই কাজ করেছিলেন।
ত্রিবেদী বিশেষভাবে খগেন মুর্মুর আদিবাসী পরিচয়ের উপর জোর দিয়ে বলেন, “খগেন মুর্মু আদিবাসী জনজাতির প্রতিনিধি। তাকেও রক্তাক্ত হতে হল। মমতা আদিবাসীদের প্রতি অবমাননা করে চলেছেন।” তিনি মমতার একটি পুরোনো ভিডিওর উল্লেখ করে বলেন, “আদিবাসীদের সঙ্গে নাচার সময় মমতা হাতে গ্লাভস পরেছিলেন।
এটা আদিবাসীদের হেয় করার এবং তাদের অচ্ছুৎ দেখানোর প্রচেষ্টা।” এই মন্তব্য মমতার বিরুদ্ধে তাঁর আদিবাসী-বিরোধী মনোভাবের অভিযোগকে আরও জোরালো করেছে।উত্তরবঙ্গে গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে তিস্তা ও জলঢাকা নদী উচ্ছাসিত হয়ে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস সৃষ্টি করেছে।
কমপক্ষে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, হাজার হাজার মানুষ বাস্তুহারা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার এলাকা পরিদর্শন করে ১০০ কোটি টাকার ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের উপর অবহেলার অভিযোগ তুলেছেন। তবে ত্রিবেদী বলেন, “মমতা কেন্দ্রকে দোষ দিয়ে নিজের ব্যর্থতা ঢাকছেন। রাজ্যে ত্রাণ বিতরণে দুর্নীতি চলছে।”তৃণমূল কংগ্রেস ত্রিবেদীর মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছে।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, “বিজেপি নেতারা ত্রাণের নামে রাজনীতি করতে গিয়ে স্থানীয়দের উস্কানি দিয়েছে। তাই তারা জনগণের ক্ষোভের মুখে পড়েছে।” তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “সুধাংশু ত্রিবেদী বাংলার পরিস্থিতি বোঝেন না। মমতা দিদি আদিবাসীদের জন্য কাজ করছেন, বিজেপি শুধু মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছে।”