তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম. কে. স্টালিন সতর্ক করেছেন যে, রাজ্যের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সফলতার কারণে আগামী দিনে সংসদ সদস্য সংখ্যা কমে যেতে পারে। সম্প্রতি একটি মন্তব্যে স্টালিন বলেছেন, “ভারতের বড় লক্ষ্য ছিল জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ। তামিলনাড়ুতে আমরা এই ক্ষেত্রে বিশাল সফলতা অর্জন করেছি। কিন্তু, আমরা এমন একটি পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছি, যেখানে জনসংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে তামিলনাড়ুর সংসদীয় আসন সংখ্যা কমে যেতে পারে।”
স্টালিন আরও বলেছেন, “যদি জনসংখ্যা আরও কমতে থাকে, তাহলে সংসদে আমাদের প্রতিনিধিত্ব কমে যেতে পারে। বর্তমানে তামিলনাড়ুর ৩৯টি সংসদীয় আসন রয়েছে, কিন্তু এই পরিসংখ্যান যদি একইভাবে চলতে থাকে, তাহলে এটি ৩১-এ নেমে আসতে পারে।” স্টালিনের এই মন্তব্য তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক মহলে নতুন আলোচনা শুরু করেছে এবং জনগণের মধ্যে শঙ্কাও সৃষ্টি করেছে।
অন্যদিকে, বিজেপি নেত্রী তামিলিসাই সোন্দরাজন মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিনের বিরুদ্ধে এক তীব্র আক্রমণ করেছেন। সম্প্রতি এক ঘটনার প্রেক্ষিতে তিনি অভিযোগ করেন যে, তামিলনাড়ুর পোলাচি রেলওয়ে স্টেশনের নামফলকে হিন্দি লেখার উপর কালো কালি মাখানো হয়েছিল, এবং এটি ডিএমকে (ড্রাবিডা মুন্নেত্রা কাজগাম) কর্মীদের দ্বারা করা হয়। এই ঘটনার পর, সোন্দরাজন বলেন, “ডিএমকে আর ভাষা রাজনীতির সুযোগ নিতে পারবে না।”
তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, “ডিএমকে কর্মীদের দ্বারা হিন্দি শব্দ মুছে ফেলা গণসম্পত্তির প্রতি অবজ্ঞা। রেলওয়ে সমস্ত রাজ্যকে সংযুক্ত করে। উত্তর ভারত থেকে লোকেরা এই রাজ্যে আসছে। আপনি কী অধিকার নিয়ে হিন্দি শব্দ মুছে ফেলছেন?”
এছাড়া সোন্দরাজন স্টালিনকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছেন, “আপনার এবং আপনার মন্ত্রীদের পরিবারের কতজন সদস্য তিনটি ভাষা শিখছেন, তা প্রকাশ করুন। আপনি এবং আপনার মন্ত্রীদের পরিবারের সদস্যরা কেন সিবিএসই স্কুলে পড়াচ্ছেন?” তার অভিযোগ, ডিএমকে ব্যবসার জন্য হিন্দি চায়, কিন্তু গরিব শিশুদের কল্যাণের জন্য অন্য ভাষা শেখাতে চায় না।
এমনকি সোন্দরাজন উল্লেখ করেছেন, “এটি জনগণের স্বার্থের রাজনীতি। মানুষ এখন বুঝতে পারছে ডিএমকের দ্বৈত নীতির কথা। যখন কিছু শিশু পাঞ্জাব ও বারানসী গিয়েছিল, তখন তারা ভাষার সমস্যায় পড়েছিল। ডিএমকে আর ভাষা রাজনীতির সুযোগ নিতে পারবে না। তামিলনাড়ুর অন্য সমস্যাগুলি থেকে নজর ঘুরিয়ে রাখতে, তারা ভাষার রাজনীতি করছে।”
এছাড়া তামিলনাড়ু সরকারের সাম্প্রতিক অবস্থানটি তিন ভাষা নীতি নিয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে চলা দ্বন্দ্বের সঙ্গে সম্পর্কিত। কেন্দ্রের তিন ভাষা নীতি (এনইপি) নিয়ে তামিলনাড়ু সরকারের উদ্বেগের কারণে রাজ্যটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। তামিলনাড়ুতে এই বিষয়ে বিতর্ক এখনও জারি রয়েছে, যেখানে জনগণের ভাষা ও শিক্ষা নীতির দিকে যথেষ্ট মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে।
এমন অবস্থায় স্টালিন এবং সোন্দরাজনের মন্তব্যগুলি তামিলনাড়ুর রাজনীতি এবং ভাষা রাজনীতি নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলছে, যা আগামী দিনে রাজনৈতিক পরিবেশে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।