কলকাতা হাইকোর্টে চলমান শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Chatterjee)এবং রত্না চট্টোপাধ্যায়ের (Ratna Chatterjee) ডিভোর্স মামলায় এদিন নতুন মোড় এসেছে। আদালতে এদিন সওয়াল করতে গিয়ে তৃণমূল সাংসদ ও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee) রত্না চট্টোপাধ্যায়ের চরিত্র নিয়ে তীব্র আক্রমণ শানালেন।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee) আদালতে উপস্থিত হয়ে দাবি করেন, “আমাদের সমাজে অনেকের ভাইয়ের সাথে ভালো সম্পর্ক থাকে, আবার অনেকের খারাপ সম্পর্কও থাকে। কিন্তু, রত্নার অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে।” এই মন্তব্যের পরে রত্না চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী রঞ্জন বাচাওয়াত পাল্টা বলেন, “শোভন চট্টোপাধ্যায় যেভাবে অভিযোগ তুলছেন, সেভাবে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা যেতে পারে।” তিনি আরো বলেন, “শোভন কেন আমার মক্কেলকে অবৈধ সম্পর্কের দায়ী করছেন, সেটাও বড় প্রশ্ন।”
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)কিন্তু একেবারেই থেমে থাকেননি। তিনি রত্না চট্টোপাধ্যায়কে নাটকবাজ বলে উল্লেখ করেন এবং জানান যে, “রত্না শুধুমাত্র তার মেয়ের খরচের টাকা পেলেই শুনানিতে হাজির হতে চান। এরপর আর তিনি আদালতে আসেননি।”
তৃণমূল সাংসদ এদিন আরও বলেন, “শোভন চট্টোপাধ্যায় বর্তমানে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, তবুও রত্নার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলা হচ্ছে।” তাঁর কথায়, “আসল প্রভাবশালী রত্না চট্টোপাধ্যায়, তিনি শাসক দলের বিধায়ক।” কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রত্না যে নথিপত্র নষ্ট করেছেন, তা সবার কাছে পরিষ্কার।”
এদিন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, “আমার এখন ৬৯ বছর বয়স, আমি শান্তিতে থাকতে চাই।” আদালতে তাঁর বক্তব্য ছিল যে, তিনি দীর্ঘ সময় ধরে এই মামলা নিয়ে প্রক্রিয়ায় জড়িত আছেন এবং চায় যে সবকিছু শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হোক।
রত্না চট্টোপাধ্যায়ের (Ratna Chatterjee) আইনজীবী এদিন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের (Sovan Chatterjee) বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তোলেন, কিন্তু কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান। তাঁর মতে, “রত্নার চরিত্রের সমালোচনা না করলেই ভালো।”
অন্যদিকে, রত্না চট্টোপাধ্যায় (Ratna Chatterjee) এদিন কলকাতা হাইকোর্টে অভিযোগ করেন যে, তাঁর দেওয়া সাক্ষীদের বয়ান নেয়া হচ্ছে না। এই কারণে তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। রত্নার অভিযোগ অনুযায়ী, নিম্ন আদালতে বিচারকার্য সঠিকভাবে চলছিল না এবং তাঁর সাক্ষীকে বাধা দেওয়া হচ্ছিল।
এই আবেদনের পর হাইকোর্ট আগামী ৩ মার্চ পর্যন্ত মামলার শুনানি স্থগিত করেছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি, বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্য এই বিষয়ে নির্দেশ দেবেন।
এখন দেখার বিষয় হলো, কলকাতা হাইকোর্টের এই মামলার ফলাফল কি হবে এবং ভবিষ্যতে এই মামলার কি পরিণতি হবে।