নয়াদিল্লি, ২৪ সেপ্টেম্বর: ভারতের নির্বাচন কমিশন (Bihar Election) অনলাইনে ভোটার তালিকায় নতুন নাম যোগ, বাদ বা পরিবর্তনের জন্য আধার-সংযুক্ত মোবাইল নম্বর বাধ্যতামূলক করেছে। নির্বাচন কমিশনের একজন কর্মকর্তা এনডিটিভিকে জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত গত এক মাস আগে নেওয়া হয়েছে এবং কমিশনের আইটি বিভাগ এটি বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছে।
এখন থেকে ভোটার তালিকায় কোনও পরিবর্তনের আবেদনের জন্য আধার-লিঙ্কযুক্ত মোবাইল নম্বর প্রদান করতে হবে। এই পদক্ষেপ বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর কর্ণাটকের ভোটার তালিকায় ব্যাপক নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগের পর বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। রাহুল গান্ধী সম্প্রতি দাবি করেছেন, কর্ণাটকের আলন্দ বিধানসভা কেন্দ্রে ৬,০১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
তিনি এটিকে “ভোটার চুরি” বলে অভিহিত করেছেন এবং নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সিআইডি-র জিজ্ঞাসিত তথ্য সরবরাহে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, “এটি এলোমেলো নয়, এটি পরিকল্পিত। একটি ‘তৃতীয় শক্তি’ লক্ষ্য করে ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।” তিনি দ্বিতীয় সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, এই বিষয়ে একটি “হাইড্রোজেন বোমা” প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে, কর্ণাটকের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ভি. আনবুকুমার এই অভিযোগের বিস্তারিত খণ্ডন করেছেন।
আনবুকুমার জানিয়েছেন, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে আলন্দের ইলেকটোরাল রোল অফিসার অনলাইনে ৬,০১৮টি ফর্ম ৭ (নাম বাদের আবেদন) পেয়েছিলেন। এত বিপুল সংখ্যক আবেদনের বৈধতা নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় নথি যাচাই এবং সরেজমিন তদন্ত করা হয়। তদন্তে মাত্র ২৪টি আবেদন বৈধ পাওয়া যায়, বাকি ৫,৯৯৪টি ভুয়ো হিসেবে প্রত্যাখ্যান করা হয়।
ফলে কোনও ব্যাপক নাম বাদ যায়নি। এই ঘটনায় আলন্দ থানায় একটি এফআইআর (নং ২৬/২০২৩, তারিখ ২১.০২.২০২৩) দায়ের করা হয়েছে।ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে আধার-লিঙ্কযুক্ত নম্বর বাধ্যতামূলক করার খবর প্রকাশের পর রাহুল গান্ধী সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, “ধরা পড়ার পরই কমিশন এই পদক্ষেপ নিয়েছে।” তিনি এটিকে কমিশনের দায়িত্বহীনতার প্রমাণ বলে দাবি করেছেন। কংগ্রেস নেতারা বলছেন, এই নিয়ম ভোটার তালিকায় স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা রয়েছে।
“লাদাখে দাঙ্গা লাগিয়েছেন Rahul Gandhi!” বিস্ফোরক অভিযোগ বিজেপির
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আধার-লিঙ্কযুক্ত মোবাইল নম্বর বাধ্যতামূলক করার উদ্দেশ্য হলো ভোটার তালিকার সঠিকতা নিশ্চিত করা এবং ভুয়ো আবেদন রোধ করা। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ভোটারদের পরিচয় যাচাই আরও কঠোর হবে। তবে, এটি গোপনীয়তা এবং তথ্য নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আধারের সঙ্গে মোবাইল নম্বর লিঙ্কিং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বাড়াতে পারে, কিন্তু এটি দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
