নদিয়া জেলার (rachana) কালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র আজ রবিবার এক উৎসাহী ও উদ্দীপনাময় পরিবেশের সাক্ষী হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী শ্রীমতী আলিফা আহমেদের সমর্থনে প্রচারে এসে হুগলির সাংসদ রচনা ব্যানার্জি (rachana) ঐক্য ও উদ্দেশ্যের এক জোরালো প্রদর্শন করেছেন। আগামী ১৯ জুন অনুষ্ঠিতব্য কালিগঞ্জ উপনির্বাচনের প্রচারে এই দুই নেত্রীর একসঙ্গে উপস্থিতি স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ সৃষ্টি করেছে।
প্রচারের উৎসবমুখর পরিবেশ
আজ সকাল থেকেই কালিগঞ্জের রাস্তায় তৃণমূল কংগ্রেসের সবুজ-সাদা পতাকা আর সমর্থকদের উচ্ছ্বাসে এক উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। রচনা ব্যানার্জি, (rachana) যিনি একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ, আলিফা আহমেদের সঙ্গে প্রচারে যোগ দিয়ে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মিশে যান।
তাঁরা কালিগঞ্জের বিভিন্ন গ্রাম ও বাজার এলাকায় রোড শো এবং জনসভায় অংশ নেন। আলিফা, যিনি প্রয়াত বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদের কন্যা, তাঁর বাবার উত্তরাধিকার এবং স্থানীয় উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোটারদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন। রচনা ব্যানার্জি (rachana) তাঁর বাকপটুতা ও জনপ্রিয়তার মাধ্যমে জনসভায় উপস্থিত জনতাকে মুগ্ধ করেন।
তিনি (rachana) বলেন, “আলিফা আহমেদ শুধু নাসিরুদ্দিন আহমেদের কন্যা নন, তিনি কালিগঞ্জের মানুষের কন্যা। তাঁর হাত ধরে এই এলাকায় উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে।” তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্প, যেমন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী এবং স্বাস্থ্যসাথী, তুলে ধরেন এবং কালিগঞ্জের জনগণকে তৃণমূলের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
আলিফা আহমেদের প্রচারে জনতার সমর্থন
৩৮ বছর বয়সী আলিফা আহমেদ, যিনি একজন প্রকৌশলী এবং নদিয়া জেলা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য, তাঁর বাবার রাজনৈতিক উত্তরাধিকার এবং স্থানীয় উন্নয়নের অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রচারে নেমেছেন। তিনি বলেন, “আমার বাবা লালদা কালিগঞ্জের মানুষের জন্য তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। আমি তাঁর স্বপ্নের কালিগঞ্জ গড়তে চাই।” তিনি স্থানীয় রাস্তাঘাট, স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং শিক্ষার মানোন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। প্রচারে তাঁকে ঘিরে জনতার উৎসাহ লক্ষ্য করা গেছে, বিশেষ করে মহিলা ও যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে।
ঐক্যের বার্তা
রচনা ব্যানার্জি (rachana) ও আলিফা আহমেদের যৌথ প্রচার তৃণমূল কংগ্রেসের ঐক্যের এক শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে। কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ মহুয়া মৈত্রও আলিফার প্রার্থিতার সমর্থনে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছেন, যা দলের অভ্যন্তরীণ ঐক্যের ইঙ্গিত দেয়। রচনা ও আলিফার একসঙ্গে প্রচারে উপস্থিতি দলের শক্তি এবং স্থানীয় জনগণের সমর্থনকে আরও সুসংহত করেছে। রচনা বলেন, “আমরা সবাই মমতা দিদির সৈনিক। কালিগঞ্জের মানুষের ভালোবাসা আমাদের শক্তি।”
উপনির্বাচনের প্রেক্ষাপট
কালিগঞ্জ উপনির্বাচন প্রয়াত বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদের ফেব্রুয়ারি মাসে মৃত্যুর পর প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তিনি ২০১১ এবং ২০২১ সালে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে কালিগঞ্জ থেকে জয়ী হয়েছিলেন। ২০২১ সালে তিনি বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ ঘোষকে প্রায় ৪৭,০০০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। এবারের উপনির্বাচনে তৃণমূল আলিফা আহমেদের উপর ভরসা রেখেছে, যিনি তাঁর বাবার উত্তরাধিকার এবং নিজের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রচারে নেমেছেন।
বিজেপি এই উপনির্বাচনে আশিস ঘোষকে প্রার্থী করেছে, যিনি একজন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য এবং প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি। কংগ্রেস কাবিল উদ্দিন শেখকে প্রার্থী করেছে, যিনি সিপিআই(এম)-নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্টের সমর্থন পেয়েছেন। এই উপনির্বাচন মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, বিশেষ করে রাজ্যে চলমান বিতর্ক, যেমন স্কুলে চাকরি হারানো এবং সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতার বকেয়া, প্রেক্ষাপটে।
ভারতের এই যুদ্ধবিমান চিনা বিমানের চেয়েও ভাল! পাকিস্তানের মুখোশ খুলে দিল ফরাসি কোম্পানি
জনগণের প্রতিক্রিয়া
কালিগঞ্জের স্থানীয় বাসিন্দারা রচনা ও আলিফার প্রচারে উৎসাহ প্রকাশ করেছেন। একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী রমেশ মণ্ডল বলেন, “রচনা দিদি এবং আলিফা দিদির একসঙ্গে প্রচার দেখে আমরা অনুপ্রাণিত। লালদার কন্যা হিসেবে আলিফা আমাদের আপনজন।” মহিলা ভোটাররা বিশেষ করে আলিফার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং স্থানীয় উন্নয়নে অবদানের কথা উল্লেখ করে।
কালিগঞ্জে আজকের প্রচারে রচনা ব্যানার্জি (rachana) ও আলিফা আহমেদের যৌথ উপস্থিতি তৃণমূল কংগ্রেসের শক্তি এবং ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে। মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে দলের জনকল্যাণমূলক প্রকল্প এবং আলিফার স্থানীয় সংযোগ এই উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রচারের মূল ভিত্তি।
আগামী ১৯ জুন ভোটগ্রহণ এবং ২৩ জুন ফলাফল ঘোষণার দিন পর্যন্ত কালিগঞ্জের রাজনৈতিক উত্তেজনা অব্যাহত থাকবে। রচনা ও আলিফার এই প্রচার জনগণের মধ্যে নতুন আশা ও উৎসাহ জাগিয়েছে, যা তৃণমূলের বিজয়ের পথকে আরও সুগম করতে পারে।