কংগ্রেসের বিভাজন রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর শক্তিশালী বার্তা

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi ) শুক্রবার কংগ্রেসের জাতীয় রাজনীতি এবং তাদের জাতিভিত্তিক রাজনীতি নিয়ে তীব্র আক্রমণ করেন। তিনি কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একসঙ্গে বিভিন্ন জাতি…

Prime Minister Modi highlights the success of Coldplay's concerts in Mumbai and Ahmedabad, emphasizing India's vast potential for live events. He advocates for infrastructure development to boost the concert economy and attract international artists.

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi ) শুক্রবার কংগ্রেসের জাতীয় রাজনীতি এবং তাদের জাতিভিত্তিক রাজনীতি নিয়ে তীব্র আক্রমণ করেন। তিনি কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একসঙ্গে বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার অভিযোগ তুলে বলেন, এটি একটি “বিপজ্জনক খেলা” এবং তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হল জাতির ঐক্যকে ভেঙে রাজনৈতিক লাভ অর্জন করা।

মহারাষ্ট্রের ধুলে শহরে একটি জনসভায় প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “কংগ্রেস একটি বিপজ্জনক খেলা খেলছে, যেখানে এক জাতি গোষ্ঠীকে অন্যটির বিরুদ্ধে উসকে দেওয়া হচ্ছে। কংগ্রেস কখনোই দলিত, অনগ্রসর শ্রেণী এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের উন্নতি দেখতে চায় না। এটি কংগ্রেসের ইতিহাস।” তিনি আরও বলেন, কংগ্রেসের একমাত্র লক্ষ্য হল SC, ST এবং OBC সম্প্রদায়গুলির ঐক্য ভাঙা এবং তাদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করা।

   

প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তব্যের মূল দিকগুলো
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কংগ্রেসের মূল উদ্দেশ্য হল এসসি-এসটি সম্প্রদায়কে দুর্বল রাখা। তিনি এও বলেন, “এই চার প্রজন্মের যুবরাজ (রাহুল গান্ধী) এমন বিপজ্জনক মনোভাব নিয়ে কাজ করছেন। কংগ্রেস একমাত্র কাজ করছে SC-ST এবং OBC সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করার জন্য, যাতে তাদের ঐক্য দুর্বল হয়।”

মোদী আরও বলেন, “কংগ্রেস যখন ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চেয়েছিল, তখন এটি দেশভাগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এখন তারা SC, ST, OBC গোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছে। এটা ভারতের জন্য সবচেয়ে বড় ষড়যন্ত্র।”

এছাড়াও, প্রধানমন্ত্রী মোদী জনগণের কাছে একটি বার্তা দেন, যে জাতি হিসেবে তাদের ঐক্য বজায় রাখতে হবে। তিনি বলেন, “যতদিন একসঙ্গে থাকবেন, ততদিন নিরাপদ। ‘এক হইলে নিরাপদ’।”

মহারাষ্ট্রে মহা বিকাশ আঘাদি (MVA) এবং নারীর প্রতি অপমান
এর পর, প্রধানমন্ত্রী মোদী মহা বিকাশ আঘাদি (MVA)-কে আক্রমণ করেন, বিশেষত শিব সেনা ইউবিটি নেতা অরবিন্দ সাওয়ান্তের ‘আমদানিকৃত’ মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। সাওয়ান্ত শেনা এনসিকে ‘আমদানিকৃত মাল’ হিসেবে মন্তব্য করেছিলেন। সাওয়ান্তের মন্তব্যে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “MVA নারীদের অপমান করছে। প্রতিটি নারীকে ভারতের জাতীয় জোট থেকে সতর্ক থাকা উচিত।”

তিনি বলেন, “MVA সরকারের নেত্রীত্বে শুধু মহিলাদেরই অপমান করা হচ্ছে না, বরং মহা বিকাশ আঘাদি সরকার তাদের নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করছে। CM পদ নিয়ে অস্থিরতা চলছে, মন্ত্রীর পদ নিয়ে বিরোধ চলছে, এমনকি ড্রাইভারের সিট নিয়ে যুদ্ধ চলছে।”

মহারাষ্ট্রে ভোটের আগের প্রচারণা
মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচন এক সপ্তাহেরও কম সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। ২০ নভেম্বর একক পর্বে ভোট গ্রহণ হবে এবং ২৩ নভেম্বর ভোট গণনা করা হবে। নির্বাচনী প্রচারণায় রাজনৈতিক দলগুলি নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে তুমুল প্রচারণা চালাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী মোদী জানান, “যতদিন MVA নিজেদের মধ্যে বিরোধে মগ্ন থাকবে, ততদিন মহাযুতি সরকার রাজ্যের উন্নতি নিশ্চিত করবে। মহাযুতি সরকারই রাজ্যকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।”

মহারাষ্ট্রের ভোট যুদ্ধ এবং জাতীয় রাজনীতি
মহারাষ্ট্রে এই নির্বাচনের গুরুত্ব বড়। ভারতের বৃহত্তম রাজ্যগুলোর মধ্যে একটি, মহারাষ্ট্রে একটি বড় রাজনৈতিক যুদ্ধ চলছে, যেখানে বিজেপি, শিব সেনা, কংগ্রেস এবং অন্য রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে প্রচারণা চালাচ্ছে।

বিশেষত, কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন মহা বিকাশ আঘাদি সরকারের ভিতরে বিভেদ এবং রাজ্য শাসন ক্ষমতার জন্য দলের মধ্যে চলমান লড়াই, বিজেপির জন্য একটি বড় সুযোগ তৈরি করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রতিপক্ষদের প্রতি বার্তা দিয়েছেন যে, তাদের অভ্যন্তরীণ লড়াই রাজ্যের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে, এবং কেবল মহাযুতি সরকারই মহারাষ্ট্রকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

কংগ্রেসের রাজনীতি এবং প্রধানমন্ত্রী মোদীর আক্রমণ
প্রধানমন্ত্রী মোদী কংগ্রেসের রাজনীতির দিকে আঙুল তুলে বলেন যে, তারা কখনোই দেশের উন্নতির প্রতি আন্তরিক ছিল না, বরং তারা সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ তৈরি করার জন্য কাজ করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী দেশের জনগণকে সতর্ক করে বলেন, কংগ্রেসের প্রতারণার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং “এক হইলে নিরাপদ” থাকতে হবে।

এভাবেই মহারাষ্ট্রের নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে, প্রধানমন্ত্রী মোদী তার নির্বাচনী প্রচারণাকে আরও জোরদার করেছেন এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তাদের স্বার্থে বিভাজন সৃষ্টির অভিযোগ তুলে জনগণকে সচেতন করেছেন।