কংগ্রেস নেতা তথা বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী নিষিদ্ধ চিনা ড্রোন প্রদর্শন করায় ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ার ভিডিওতে তিনি দাবি করেছেন,ভারতকে শক্তিশালী এক উৎপাদন ভিত্তি তৈরি করতে হবে যাতে ড্রোনের মতো প্রযুক্তি তৈরি করা যায় এবং রাহুল গান্ধী রবিবার এক টুইটে বলেছেন “ড্রোন শুধুমাত্র একটি প্রযুক্তি নয়, এটি একটি শক্তিশালী শিল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে তৈরি হয়। দুর্ভাগ্যবশত, প্রধানমন্ত্রী মোদী এই বিষয়টি উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি যখন ‘টেলিপ্রম্পটার’ দিয়ে এআই নিয়ে বক্তৃতা দেন, তখন আমাদের প্রতিযোগীরা নতুন প্রযুক্তিতে দক্ষ হয়ে উঠছে”।
তিনি আরও দাবি করেছেন যে, ভারত বর্তমানে ড্রোনে ব্যবহৃত যেকোন উপাদান তৈরি করতে সক্ষম নয় এবং অপটিক্সের ক্ষেত্রেও কোনো যথাযথ জ্ঞান নেই।
তবে কংগ্রেস নেতার এই মন্তব্যের পর, ড্রোন ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া এর সভাপতি স্মিত শাহ রাহুল গান্ধীর সমালোচনা করে বলেছেন, “রাহুল গান্ধী ভারতের ড্রোন শিল্পকে অবমূল্যায়ন করছেন এবং নিষিদ্ধ চিনা ডিজেআই ড্রোন গর্বের সঙ্গে প্রদর্শন করছেন।” ২০২২ সাল থেকে ভারত ডিজেআই টেকনোলজি কম্পানি দ্বারা তৈরি ড্রোন নিষিদ্ধ করেছে।
শাহ আরও বলেছেন, “ভারতে বর্তমানে ৪০০টিরও বেশি কম্পানি ড্রোন তৈরি করছে। এছাড়াও ৫০টিরও বেশি কম্পানি ড্রোনের উপাদান তৈরি করছে, যার মধ্যে ব্যাটারি, প্রপেলার, ফ্লাইট কন্ট্রোলার এবং মোটর অন্তর্ভুক্ত।” শাহ এর মতে “ভারতীয় ড্রোন শিল্প এখনও শৈশবকালীন অবস্থায় রয়েছে, তবে রাহুল গান্ধীর মতো সমালোচনা কোনো সহায়ক পদক্ষেপ নয়।”
অন্যদিকে, স্মিত শাহ রাহুল গান্ধীকে কিছু প্রশ্নও করেছেন। তিনি জানতে চেয়েছেন, “এই নিষিদ্ধ ডিজেআই ড্রোনটি রাহুল গান্ধী কীভাবে সংগ্রহ করেছেন?” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ভারতীয় ড্রোন নীতিমালা ২০২১ অনুযায়ী সমস্ত ড্রোন ডিজিটালস্কাইতে নিবন্ধিত করা হয়েছিল। তবে এটি কি হয়েছিল? ড্রোন পরিচালনা করতে রাহুল গান্ধী কি রিমোট পাইলট সার্টিফিকেট পেয়েছিলেন?
এছাড়া প্রাক্তন ইনফোসিস চিফ ফাইন্যানসিয়াল অফিসার মোহনদাস পৈও বলেছেন, “রাহুল গান্ধীকে তার মিথ্যা বক্তব্য বন্ধ করতে হবে এবং ভারতের সাফল্যকে খাটো করতে চেষ্টার ফলস্বরূপ দেশকে নিচে নামানো উচিত নয়।” তিনি আরও বলেন, “ভারত আজ বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম শিল্প উৎপাদনকারী দেশ, দ্বিতীয় বৃহত্তম স্টিল উৎপাদক, তৃতীয় বৃহত্তম অটোমোবাইল উৎপাদক এবং সর্ববৃহৎ ২-চাকা নির্মাতা।”
এভাবে রাহুল গান্ধীর এই বিতর্কিত মন্তব্যের পর, ভারতীয় ড্রোন শিল্পের অগ্রগতি এবং সরকারের নীতি নিয়ে একটি নতুন আলোচনার সূচনা হয়েছে। এই ঘটনাটি ভারতের প্রযুক্তিগত সক্ষমতার প্রতি এক ধরনের সমালোচনা হিসেবে উঠে এসেছে, যেখানে রাহুল গান্ধী প্রযুক্তি এবং উৎপাদন ক্ষেত্রে ভারতের সাম্প্রতিক উন্নতির গুরুত্ব বুঝতে পারছেন না, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই বিতর্কের পর, ভারতীয় ড্রোন শিল্পের বিকাশ এবং দেশের প্রযুক্তি খাতে নতুন দিশার সন্ধানে আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা আরও স্পষ্ট হয়েছে।