পটনা, ৫ অক্টোবর: আসন্ন বিহার বিধানসভা নির্বাচনের (Bihar Election) প্রস্তুতিতে জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (NDA) এর মধ্যে আসন বণ্টনের জট ছাড়াতে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান রবিবার হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা (HAM) সেক্যুলারের প্রধান ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন রাম মাঝির সঙ্গে বৈঠক করেন।
বিজেপির বিহার নির্বাচন প্রভারী হিসেবে প্রধানের এই সফরটি এনডিএ-র অভ্যন্তরীণ সমন্বয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী এবং বিজেপির বিহার প্রভারী বিনোদ তাওড়ে। বৈঠকের পর জিতেন রাম মাঝি বলেন, “আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং শীঘ্রই আসন বিতরণ সম্পন্ন হবে।
এনডিএ-তে সবকিছু ঠিকঠাক চলছে।”এই বৈঠকটি বিহারের ২৪৩ আসনের নির্বাচনের পটভূমিতে এনডিএ-র জোটের ঐক্য বজায় রাখার প্রয়াসের অংশ। জিতেন রাম মাঝির এইচএএম সেক্যুলার জোটের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা মহাদলিত সম্প্রদায়ের ভোটব্যাঙ্ক নিয়ন্ত্রণ করে। গত নির্বাচনে এইচএএম-কে ৭টি আসন দেওয়া হয়েছিল, যাতে তারা ৪টিতে জয়লাভ করেছিল।
পাওয়ারগ্রিডে শিক্ষানবিশ পদের জন্য নিয়োগ, শীঘ্রই আবেদন করুন
এবার মাঝি তার দলের জন্য ১৫ থেকে ২০টি আসন দাবি করেছেন, যা এনডিএ-র অন্যান্য সহযোগীদের সঙ্গে সংঘাতের জন্ম দিয়েছে। বিজেপি এবং জেডিইউ মাঝির দাবিকে ৭ থেকে ১০টি আসনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চায়। এই বিতর্কের মধ্যে ধর্মেন্দ্র প্রধানের সফরটি জোটের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা দূর করার লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপ।
পূর্বাহ্নে প্রধান জেডিইউ নেতা লালন সিংহের সঙ্গে আলোচনা করেন, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন জেডিইউ-র জন্য ১০২টি আসন এবং বিজেপির জন্য ১০১টি আসনের সূত্র নিয়ে আলোচনা হয়। এই সূত্রটি জেডিইউ-কে সামান্য সুবিধা দিলেও বিজেপির নিতীশের প্রতি সমর্থনের ইঙ্গিত দেয়।
বাকি ৪০টি আসন অন্যান্য সহযোগীদের মধ্যে বণ্টিত হবে, যার মধ্যে লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস)-এর চিরাগ পাসওয়ানের দলকে ২২টি, এইচএএম-কে ৬ থেকে ৮টি এবং উপেন্দ্র কুশওয়াহার রাষ্ট্রীয় লোক মোর্চাকে ৪টি আসন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। দুর্গাপূজার পর দশহরা উৎসবের পর এই বণ্টন চূড়ান্ত হতে পারে বলে জানা গেছে।জিতেন রাম মাঝি তার দাবি তুলে ধরে বলেছেন, “আমি এনডিএ নেতাদের কাছে ভিক্ষা করছি, দাবি করছি না।”
তাঁর দলের ‘স্বীকৃত দল’ মর্যাদা না পাওয়ায় তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন, যা এনডিএ-র জোটের অভ্যন্তরীণ চাপ বাড়িয়েছে। চিরাগ পাসওয়ানের দল ৪৫টি আসন দাবি করেছিল, যা ২২টিতে সীমাবদ্ধ রাখার পর তাঁরাও অসন্তুষ্ট। এই পরিস্থিতিতে ধর্মেন্দ্র প্রধানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, “এনডিএ-র ঐক্য আমাদের শক্তি। আসন বণ্টন শীঘ্রই চূড়ান্ত হবে এবং আমরা বিপক্ষকে পরাজিত করব।”
এই বৈঠকের পর এনডিএ-র সহযোগীরা আশাবাদী। সম্রাট চৌধুরী বলেন, “জোটের সব সদস্যরা একমত হচ্ছেন। নির্বাচন কমিশনের ঘোষণার আগেই সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।” বিপক্ষ মহাগঠবন্ধন (আরজেডি-কংগ্রেস) এই অভ্যন্তরীণ অস্থিরতাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব বলেন, “এনডিএ-র জোট ভেঙে পড়ছে। নিতীশ কুমারের নেতৃত্বে তারা আর স্থিতিশীল নেই।”