পটনা ৮ অক্টোবর: বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের দামামা বেজে গিয়েছে (Bihar Election)। আগামী মাসের ৬ এবং ১১ তারিখে নির্ধারিত হয়েছে নির্বাচনের দিন। এর মাঝেই আসন বন্টন নিয়ে আবারও বিতর্কের শীর্ষে মোদীর হনুমান চিরাগ পাসোয়ান। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের জন্য এনডিএ জোটের মধ্যে আসন বণ্টন নিয়ে চলছে তুমুল টানাপোড়েন। এবং চিরাগের সর্বশেষ বক্তব্য এই ঝড়কে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।
তিনি বলেছেন তাঁর দলকে ৩৬টির কম আসন দিলে তা তিনি মেনে নেবেন না! এই দাবি শুধু সংখ্যার খেলা নয়, বরং তাঁর দলের বাড়তি প্রভাব এবং ভোটার ভিত্তির একটা স্পষ্ট ইঙ্গিত। গতকাল দিল্লিতে বিজেপির বাংলাদেশ নির্বাচনী সমন্বয়কারী ধর্মেন্দ্র প্রধান এবং বাংলাদেশ প্রভারী বিনোদ তাওড়ের সঙ্গে বৈঠকের পর তাকে চুপচাপ থাকতে দেখে দেখে অনেকেই অবাক হয়েছিলেন।
যিনি রাজনীতি সাজান, তিনিই কি পারবেন ভোটে জিততে?
কিন্তু আজ সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে তিনি স্পষ্ট করে বললেন, “আমাদের দাবি স্পষ্ট—৩৬টির কম আসন আমরা গ্রহণ করব না। এটা আমাদের কার্যকরী শক্তি এবং অতীতের সাফল্যের প্রতিফলন।” এই বক্তব্য এনডিএ-র মধ্যে নতুন অস্থিরতা ছড়িয়ে দিয়েছে। বিজেপি এবং জেডিইউ-র নেতারা এখন চিন্তিত কি করে চিরাগের এই দাবির মেটাবেন।
অবশ্য রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে চিরাগের দাবি না মেনে হয়তো উপায় নেই এনডিএ নেতৃত্বের। আসলে, চিরাগের এই দাবির পিছনে রয়েছে তাঁর দলের সাম্প্রতিক সাফল্যের গল্প। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে এলজেপি(আর)-কে মাত্র ৫টি আসন দেওয়া হলেও তারা সবগুলোতেই জয়লাভ করেছিল একটা শতভাগ স্ট্রাইক রেট! হাজীপুর, সমস্তীপুর, খগড়িয়া, জমুয়ে, আওরঙ্গাবাদের মতো এলাকায় তাঁদের পক্ষে ঢেউ উঠেছে। চিরাগ বলছেন, “সংখ্যা থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ জয়ের নিশ্চয়তা।
আমরা সেই আসন চাই যেখানে আমাদের জনাধার শক্তিশালী। দুই-চারটে আসনের ব্যবধান আমার কাছে তুচ্ছ, কিন্তু জয়হীন আসন আমরা নেব না।” ২০১৫-এ ৪৩টি আসন লড়ে এবং ২০২০-এ ১৩৭টিতে অংশ নিয়ে দলের প্রসার দেখিয়েছেন চিরাগ। এবার তাঁরা ৪৩ থেকে ১৩৫টির মধ্যে আসন চাইছেন বলে খবর, কিন্তু ৩৬টির নিচে নামতে রাজি নন।
মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার এবং বিজেপির নেতৃত্ব চিরাগকে ২০-২২টি আসনের প্রস্তাব দিয়েছে, যা তাঁরা ফিরিয়ে দিয়েছেন। জেটিআর মাঝির আম-এর মতো অন্যান্য ছোট দলও তাঁদের অংশ দাবি করছে—মাঝি চান কমপক্ষে ৮টি। ফলে ২৪৩টি আসনের মধ্যে বণ্টনটা জটিল হয়ে উঠেছে। বিজেপি বলছে, “আসন বণ্টন জয়ের ভিত্তিতে হবে, কোনো দলের চাপ মেনে নেওয়া যাবে না।” কিন্তু চিরাগের এই অবস্থান জোটের ঐক্যকে পরীক্ষা করছে। যদি চিরাগের দাবি না মানা হয়, তাহলে তিনি প্রশান্ত কিশোরের জন সুরাজের সঙ্গে জোট গঠনের কথা ভাবছেন বলে গুঞ্জন। এটা বিহারের রাজনীতিতে একটা বড় পরিবর্তন ঘটাতে পারে।