তাঁকে নিয়ে বিতর্ক আছে। সমালোচনা আছে। তিনি প্রভাবশালী জনপ্রিয়। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। জাতীয় রাজনীতিতে গুঞ্জন আছে, অনেক বিরোধী নেতার প্রিয় পাত্র মোদী। বিরোধী শিবিরের কোন নেতাকে মোদীর পছন্দ? সম্প্রতি এই প্রশ্ন উঠে আসে এক সাক্ষাতকারে। সেখানে এক বিশিষ্ট বাঙালি রাজনীতিবিদের নাম শোনা গিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর মুখে।
চব্বিশের লোকসভা ভোটের মুখে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাতকার দিচ্ছেন মোদী। সেখানেই উটে এসেছে মোদীর প্রিয় পাত্রর প্রসঙ্গ। সরাসরি কাকে পছন্দ তা অবশ্য বলেননি প্রধানমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে তিনি তুলে ধরেছেন তাঁর রাজনৈতিক জীবনের নানা ঘটনা। যেখানে এক কংগ্রেসনেতার নাম জড়িয়ে। সরাসরি না বললেও ধরে নেওয়া হচ্ছে অবিজেপি শিবিরের নেতাদের মধ্যে তিনিই মোদীর প্রিয় পাত্র।
সেই ব্যক্তি একজন বাঙালি। বীরভূমের বাসিন্দা। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। স্বাধীন ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে রয়েছেন প্রয়াত কংগ্রেস নেতা প্রণব মুখোপাধ্যায়। ২০১২ সালে তাঁকে রাষ্ট্রপতি করে কংগ্রেস। কেন্দ্রে কংগ্রেসের শাসনকালে নানা গুরুত্বপূর্ণ দফতর সামলেছেন তিনি। মোদীর মুখে বিভিন্ন সময়ে তাঁর কথা শোনা গিয়েছে। মোদী জমানায় ভারতরত্ন পেয়েছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়।
নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন যে ২০১৯ সালের ভোটের সময় প্রণব মুখোপাধ্যায় তাঁকে ফোন করেন। তাঁর শরীরের খোঁজখবর নেন। মোদীর দাবি প্রণব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘ভোটের জন্য এত পরিশ্রম করলে হবে? নিজের শরীরের দিকেও তো নজর দিতে হবে।’ এ কথা বলার পর মোদী আরও বলেন, ‘আমি তো তাঁর দল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করছিলাম। কিন্তু তিনি ফোন করে আমার শরীরের খোঁজখবর নিয়েছিলেন।’ মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে দলের কাজে দিল্লিতে থাকতেন নরেন্দ্র মোদী। মর্নিং ওয়ার্ক করার সময় মাঝেমধ্যেই প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা হত বলে দাবি করেছেন মোদী। তাঁর আরও দাবি, বঙ্গতনয়ের সঙ্গে দেখা হলেই প্রণাম করতেন।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগেও মোদীর মুখে শোনা গিয়েছে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কথা। ২০১৪ সালে কলকাতা প্রচারে আসেন মোদী-রাজনাথ। তখন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। ব্রিগেডের মাঠে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মোদী বলেন, ‘আমি জিতলে আপনাদের দুই হাতেই লাড্ডু। আমি তো আছিই। আমার উপরে প্রণব দা আছেন। তিনি তো আপনাদেরই লোক।’ পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, প্রণব মুখোপাধ্যায়ের নাম করে আসলে বাঙালি আবেগ ছোঁয়ার চেষ্টা করেন নরেন্দ্র মোদী। ২০১৪ সালের পর ২০২৪ সালের ভোটের আগেও কৌশলে বাঙালি আবেগে শান দেওয়ার চেষ্টা করলেন মোদী।