ওয়াকফ সংশোধনী বিল(waqf amendment bill),২০২৪, ৮ই আগস্ট লোকসভার কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু দ্বারা উপস্থাপনের পর সংসদের যৌথ কমিটিতে পাঠানো হয়।
ওয়াকফ সংশোধনী বিল সম্পর্কিত সংসদীয় প্যানেলের সদস্যরা খসড়া আইনে ৫৭২টি সংশোধনী প্রস্তাব করেছেন, যা সরকার ও বিরোধী দুই দলের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই বিলটি ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইন সংশোধনের লক্ষ্য নিয়ে প্রস্তাবিত হয়, যাতে ওয়াকফ সম্পর্কিত সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার সমস্যা গুলি সমাধান করা।
ওয়াকফ সম্পত্তি কী?
কোন স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তিকে যখন দলিলের মাধ্যমে আল্লাহ এর নামে করে দেওয়া হয়, সেটি এই সম্পত্তির অন্তর্ভুক্তি হয়। সাধারণত চ্যারিটি বা সেবার কাজে ব্যবহার করা হয় ঐশ্বর্যটিকে। নথিপত্রের যুগ শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকে এই পদ্ধতি প্রচলিত আছে।
ওয়াকফ আইনে কী কী সংশোধন আনতে চাইছে সরকার?
১. এই বিল মূলত ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতায় রাশ টানতে চাইছে। নতুন সংশোধনীতে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, ওয়াকফ সম্পত্তি বাধ্যতামূলকভাবে ডিস্ট্রিক্ট কালেকটরের অফিসে রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে, যাতে সম্পত্তির সঠিক মূল্যায়ন করা হয়।
২. আইন কার্যকর হওয়ার আগে বা পরে যদি কোনও সরকারি সম্পত্তি ‘ওয়াকফ সম্পত্তি’ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে, সংশোধনী আনলে, তা আর ওয়াকফ সম্পত্তি থাকবে না। ডিস্ট্রিক্ট কালেকটর ঠিক করবে, সেটা ওয়াকফ সম্পত্তি নাকি সরকারি জমি এবং সেই সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত করা হবে।
৩. সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর চাইলে ডিস্ট্রিক্ট কালেকটর কোনও বদল আনতে পারেন ওই জমির রেভিনিউ রেকর্ডে। সে ক্ষেত্রে রিপোর্ট দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট না পেশ করা পর্যন্ত ওয়াকফ প্রপার্টি বলে গণ্য করা যাবে না।
৪. ওয়াকফ বোর্ডের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনও বিতর্ক থাকলে হাইকোর্টে আবেদন করা হবে।
৫. এতদিন পর্যন্ত কোনও নথি না থাকলেও, মৌখিকভাবে ওয়াকফ সম্পত্তি চিহ্নিত করা যেত। সংশোধনীতে বলা হয়েছে, ওয়াকফনামার নথি না থাকলে সেই জমি বিতর্কিত বলেই ধরে নেওয়া হবে।
বিজেপি নেতা জগদম্বিকা পালের নেতৃত্বাধীন ওয়াকফ সংশোধনী বিলের যৌথ কমিটি রবিবার গভীর রাতে সংশোধনী গুলির একটি তালিকা প্রকাশ করে। কারণ হিসাবে দেখানো হয়েছে, প্যানেলের শুনানি শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
কমিটি সোমবার তাঁদের বৈঠকে ধারাবাহিকভাবে সংশোধনীগুলো নিয়ে আলোচনা করবে। বিলের সংশোধনী প্রস্তাব জমা দিয়েছেন বিজেপি এবং বিরোধী দলের উভয় সদস্যরা।
তবে, উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, সংশোধনী জমা দেওয়া সদস্যদের তালিকায় বিজেপির কোনো মিত্র দল অন্তর্ভুক্ত নেই।