নয়াদিল্লি ৮ অক্টোবর: উত্তরবঙ্গের বন্যাকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি দুই যুযুধান পক্ষ কেন্দ্র বনাম রাজ্য (Bengal Politics)। মমতা বন্দোপাধ্যায় এই বন্যাকে ম্যান মেড বন্যা বলে উল্লেখ করে কেন্দ্রকে দায়ী করেছেন। একই সঙ্গে দায়ী করেছেন ডিভিসিকেও। মমতার এই অভিযোগের বিরুদ্ধে এবার মুখ খুললেন বিজেপি বিজেপির বিধায়ক ভবনা বোহরা। তিনি এই অভিযোগের প্রত্যুত্তরে বলছেন, “প্রধানমন্ত্রী কখনো রাজ্যের ভেদাভেদ করেননি। হয়তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাহায্য নিতে চান না, কারণ তিনি কখনোই চান না কেন্দ্র একাই কৃতিত্বের দাবিদার হোক।
এই বন্যা শুরু হয়েছে ৩ অক্টোবর থেকে। আইএমডি-র সতর্কতা সত্ত্বেও দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) ৭০ হাজার কিউসেক জল ছাড়ায় দক্ষিণবঙ্গেও বন্যার ভয়। মমতা বুধবার উত্তরবঙ্গ সফর করে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা দেখে বললেন, “কেন্দ্র থেকে এক পয়সা সাহায্য আসেনি। ডিভিসি-র জল ছাড়া এটা ম্যানমেড ডিজাস্টার।
২০২৭-এর আগে বেতন বাড়ার সম্ভাবনা কতটা? ৮ম কমিশন নিয়ে বিশদে জানুন
আমরা একা লড়ছি রিলিফ বিতরণ করছি, বাড়ি-সেতু মেরামতের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।” তিনি বললেন, বাংলার সংস্কৃতির প্রতীক দুর্গাপূজা কার্নিভালে উপস্থিতি নিয়ে সমালোচনা অযৌক্তিক কারণ সেখানে বিদেশি অতিথিরাও উপস্থিত ছিলেন।
মালদা উত্তরের বিধায়ক খগেন মুর্মু আর জলপাইগুড়ির সাংসদ শঙ্কর ঘোষকে নাগরাকাটায় বন্যা-ক্ষতিগ্রস্তদের রিলিফ বিতরণের সময় হামলা করা হয়। মাথায় আঘাত পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন খগেন মুর্মু । এমএলএ ভবনা বোহরা, যিনি কলকাতার ব্যর্থতা নিয়ে প্রায়ই কথা বলেন, সরাসরি মমতাকে চ্যালেঞ্জ করলেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বললেন, “ফান্ড বা অন্য কোনও ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের মধ্যে কখনো বৈষম্য করেননি।
বন্যায় সাহায্যের জন্য কেন্দ্র প্রস্তুত, কিন্তু মমতা দিদি হয়তো নিতে চান না। কারণ, সাহায্য নিলে কৃতিত্ব কেন্দ্রের হয়ে যাবে, তাঁর নয়! এটা তাঁর রাজনৈতিক ভয়।” মমতা সরকার ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে রিলিফ শুরু করেছে, কিন্তু বিরোধীরা বলছেন, এটা শুধু শো। কেন্দ্রীয় দল বলছে, ডিভিসি-র জল ছাড়া সঠিক ছিল, আর বন্যা ম্যানেজমেন্টে রাজ্যের ব্যর্থতা।
মোদী সরকার মমতার চিঠির উত্তরে বলেছে, সাহায্যের জন্য তৈরি, কিন্তু রাজ্যের সঙ্গে সমন্বয় দরকার।এই টানাপোড়েন উত্তরবঙ্গকে আরও বিচ্ছিন্ন করে তুলছে। দুর্গাপূজার পর এই বন্যা বাংলার অর্থনীতিকে ধাক্কা দিয়েছে চা বাগান, পর্যটন সব থমকে গেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, “এটা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক খেলা।
মমতা কেন্দ্রকে দোষ দিয়ে সমর্থকদের একত্রিত করছেন, বিজেপি ল অ্যান্ড অর্ডার নিয়ে আক্রমণ করছে।” কিন্তু সাধারণ মানুষের কথা? তারা চান শুধু সাহায্য আর পুনর্নির্মাণ। বন্যার জল কমছে না, রাজনৈতিক ঝড় বাড়ছে। কবে শান্তি আসবে—এই প্রশ্নে সবাই নীরব। উত্তরবঙ্গের মানুষের কান্না শোনা উচিত, রাজনীতি নয়!