তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম নেতা মদন মিত্র সম্প্রতি একের পর এক বেফাঁস মন্তব্য করে দলের মধ্যে অস্বস্তির সৃষ্টি করেছেন। তাঁর মন্তব্যগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের অভিযোগ যে, তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য হতে গেলে ১০ লক্ষ টাকা দিতে হয়।
এ ধরনের মন্তব্যের পর, তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। মদন মিত্র এই বিষয়টি নিয়ে পরবর্তী সময়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছেন এবং দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে একটি লিখিত চিঠিও দিয়েছেন। এতে তিনি জানান, তাঁর মন্তব্যের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও মর্মাহত হয়েছেন এবং তিনি এর জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন।
মদন মিত্রের মতো তৃণমূলের আরও কিছু বিধায়ক সম্প্রতি তাঁদের বেফাঁস মন্তব্যের জন্য আলোচনা সৃষ্টি করেছেন। এই ধরনের মন্তব্য দলের শৃঙ্খলা এবং ইমেজের জন্য বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনতে পারে। বিশেষ করে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এমন মন্তব্য দলের জন্য নেতিবাচক বার্তা প্রদান করছে। তৃণমূল কংগ্রেস, যার প্রাথমিক লক্ষ্য রাজ্যের উন্নতি এবং জনগণের সেবা, সে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে বিধায়কদের এমন অযাচিত মন্তব্য মেনে নেওয়া যায় না।
এমন পরিস্থিতিতে, দলীয় শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার কঠোর পদক্ষেপ নিতে চলেছেন। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি, বিধানসভায় তৃণমূল পরিষদীয় দলের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন বেলা ১টায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। জানা গেছে, এই বৈঠকে দলের বিধায়কদের কাছে দলীয় শৃঙ্খলা এবং আচরণবিধি নিয়ে কঠোর বার্তা দেওয়া হবে। দলের মধ্যে এক ধরনের শৃঙ্খলাবদ্ধ মনোভাব প্রতিষ্ঠা করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হতে চলেছে।
বিধায়কদের বেফাঁস মন্তব্যের ফলে দলের মধ্যে যে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে, সেটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের উপস্থিতি ও নেতৃত্বে শুদ্ধ করতে চাইছেন। রাজনৈতিক মহলে ধারণা করা হচ্ছে যে, দলের মধ্যে শৃঙ্খলা এবং ঐক্য বজায় রাখতে, মমতা বিধায়কদের আরও বেশি দায়িত্বশীল এবং সংযত থাকতে বলবেন। তৃণমূল কংগ্রেসের মূল উদ্দেশ্য যেন কোনওভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেই দিকটি তিনি গুরুত্ব দিয়ে নজর রাখবেন।
তৃণমূলের জন্য এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দলের ভিতর একতা বজায় রাখা এবং জনগণের কাছে দলের বার্তা সঠিকভাবে পৌঁছানো। ২০২৬ সালের নির্বাচনে দলীয় শৃঙ্খলা এবং নেতৃত্বের দৃঢ়তা দলের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি হতে পারে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যথেষ্ট সচেতনভাবে বিধায়কদের কাছে কঠোর বার্তা দেবেন, যাতে ভবিষ্যতে দলের শৃঙ্খলা বজায় রাখা যায় এবং দলের নেতিবাচক মন্তব্যগুলি কোনওভাবেই ভোটব্যাংকে প্রভাব ফেলতে না পারে।