বিহারের ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে পশ্চিমবঙ্গের শিল্পাঞ্চল পরিকল্পনা— সর্বত্রই তৃণমূল কংগ্রেস স্পষ্ট বিরোধিতার সুর তুলেছে। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে SIR প্রকল্প নিয়ে শাসকদলের আপত্তি তুঙ্গে। এর মধ্যেই নতুন মোড় এনেছে সুপ্রিম কোর্টের রায়। মাত্র দু’দিন আগে শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে যে, SIR-সংক্রান্ত বিভিন্ন সরকারি প্রক্রিয়ায় আধার কার্ডের বৈধতা অপরিহার্য। এই রায়ের পর থেকেই প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
বুধবার জলপাইগুড়ির সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীমমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) আধার কার্ড প্রসঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন। তিনি জেলাশাসক ও প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ দিয়ে বলেন “যাঁদের আধার কার্ড নেই, তাঁদের দ্রুত আধার কার্ড করে দিতে হবে। দুয়ারে সরকার ক্যাম্পের মাধ্যমে নতুন আধার কার্ডের আবেদন গ্রহণ করে যত দ্রুত সম্ভব নিষ্পত্তিরতে হবে।” বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, তৃণমূল একদিকে SIR-এর বিরোধিতা করছে, অথচ অন্যদিকে প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় আধারের উপর নির্ভরতা বাড়াচ্ছে। বিজেপির দাবি, “তৃণমূলের অবস্থান স্পষ্ট নয়। সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।”
আধারের গুরুত্ব বাড়ছে
সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়ে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে আধার কার্ড বাধ্যতামূলকভাবে গ্রহণযোগ্য। অর্থাৎ, সরকারি সুবিধা, শিল্পাঞ্চল সংক্রান্ত ক্ষতিপূরণ, জমির পুনর্বিন্যাস বা পুনর্বাসন— যেকোনো প্রক্রিয়াতেই আধার ছাড়া কাজ এগোনো সম্ভব হবে না। এই পরিপ্রেক্ষিতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নির্দেশ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, রাজ্যের একটি বড় অংশের মানুষের এখনও আধার কার্ড নেই বা তাতে নানা ভুল রয়েছে। ফলে, সরকারি প্রকল্পে তাঁদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পের মাধ্যমে আধার হালনাগাদ বা নতুন কার্ড তৈরির প্রক্রিয়াকে গতি দেওয়ার** প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে।
SIR নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর
রাজ্যে SIR প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রসঙ্গটি নতুন নয়। রাজ্য সরকার বহুদিন ধরেই শিল্পায়নের প্রয়োজনীয়তার কথা বলছে, কিন্তু জমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ নিয়ে গ্রামীণ অঞ্চলে বিরোধিতা তীব্র। তৃণমূল কংগ্রেস সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে, **শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলতে কৃষিজমি জোর করে অধিগ্রহণ করা হবে না**।
জলপাইগুড়ির বার্তা
জলপাইগুড়ির সরকারি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর(Mamata Banerjee) বক্তব্যে একদিকে যেমন আধার প্রক্রিয়ার গতি বাড়ানোর ওপর জোর ছিল, অন্যদিকে মানুষের সুবিধা নিশ্চিত করার বার্তাও ছিল স্পষ্ট। তিনি বলেন— “যেন কোনও সাধারণ মানুষ সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হন। তাই আধার কার্ড ছাড়া যাঁরা আছেন, তাঁদের দ্রুত অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।”