তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়(Kalyan Banerjee) মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর মহাকুম্ভ নিয়ে লোকসভায় দেয়া ভাষণের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন যদি মহাকুম্ভ রাজ্যের বিষয় হয়, তবে প্রধানমন্ত্রী কীভাবে এ বিষয়ে কথা বললেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, সরকার বিরোধী নেতাদের মহাকুম্ভ নিয়ে আলোচনার সুযোগ দেয়নি।
সংবাদমাধ্যমে কথা বলতে গিয়ে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী যে ভাষণ দিয়েছেন তা আগে সংসদের কার্যসূচীতে ছিল না। হঠাৎ করেই প্রধানমন্ত্রী এসে মহাকুম্ভ নিয়ে কথা বলতে শুরু করলেন। আমরা সবাই মহাকুম্ভ নিয়ে কথা বলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তারা বলত মহাকুম্ভ রাজ্য বিষয়, তাই এখানে আলোচনা করা যাবে না। আমি হতবাক, কীভাবে প্রধানমন্ত্রী মহাকুম্ভ নিয়ে কথা বললেন যখন এটি রাজ্য বিষয়। এটি সম্পূর্ণ বৈষম্য।”
এদিন সকালে প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভের সফল আয়োজনের জন্য দেশবাসী, প্রশাসন এবং ভক্তদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি মহাকুম্ভকে ভারতের জাতীয় চেতনার প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে তার সফলতা ব্যক্ত করেন।
লোকসভায় বক্তব্য রাখার সময় প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, “আমি প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত মহাকুম্ভের ওপর বিবৃতি দিতে এসেছি। আমি প্রয়াগরাজের জনগণ এবং প্রশাসনের প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই। মহাকুম্ভের সফলতা হল বিভিন্ন মানুষের প্রচেষ্টার ফল। আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই দেশের ভক্ত, ইউপির জনগণ, বিশেষ করে প্রয়াগরাজের জনগণ। আমরা জানি যে গঙ্গাকে পৃথিবীতে আনার জন্য যে কঠোর পরিশ্রম করা হয়েছে, তেমনই কঠোর পরিশ্রম করা হয়েছে মহাকুম্ভের আয়োজনের জন্য।”
প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও বলেছেন, “মহাকুম্ভের সফলতা সেই সব সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দিয়েছে, যারা ভারতের সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ এবং ভীতি প্রকাশ করেছিলেন।”
মহাকুম্ভ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর এ ধরনের বক্তব্যের পর কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন “মহাকুম্ভ একটি রাজ্য বিষয়। তা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী কিভাবে সংসদে কথা বললেন? আগে তো আমাদের মহাকুম্ভ নিয়ে কথা বলার সুযোগ দেয়া হয়নি। এটা খোলামেলা বৈষম্য।”
এদিকে প্রধানমন্ত্রী মোদী মহাকুম্ভের আয়োজনের জন্য প্রয়াগরাজ এবং উত্তরপ্রদেশের জনগণের প্রতি তার গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি মহাকুম্ভকে ভারতের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির একটি শক্তিশালী চিহ্ন হিসেবে তুলে ধরেছেন।
এই বিতর্ক নতুন রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি করেছে, যেখানে বিরোধী দলগুলি একদিকে রাজ্য বিষয়ের বিরুদ্ধে আলোচনা নিষিদ্ধ করার অভিযোগ তুলছে। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে তার পক্ষ থেকে সমালোচনার প্রতিক্রিয়া হিসেবেই দেখছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে।