ভারতে ভাষার রাজনীতিতে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে মন্তব্য করেছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। তিনি কেন্দ্রীয় সরকার, বিশেষ করে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে হিন্দির আধিপত্য প্রতিষ্ঠার অভিযোগ তুলেছেন। স্ট্যালিন এক্স হ্যান্ডেলে (টুইটার) পোস্ট করে দাবি করেছেন, গত এক শতাব্দী ধরে উত্তর ভারতের ২৫টি ভাষার অপমৃত্যু ঘটেছে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার কারণে।
এই মন্তব্যটি তামিলনাড়ুতে ভাষাগত আন্দোলনকে আরও তীব্র করে তুলেছে। সেখানে ভাষা বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং তা নিয়ে নানা সময়ে রাজনীতি চলে আসছে। স্ট্যালিন অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকার এখন নতুন করে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র শুরু করেছে, যা দক্ষিণ ভারতের ভাষা ও সংস্কৃতিকে হুমকির মুখে ফেলবে। তাঁর এই মন্তব্যের পর আবারও প্রশ্ন উঠেছে, কেন স্ট্যালিন নতুন করে হিন্দির অপশাসনের কথা বলছেন?
স্ট্যালিনের দাবি, হিন্দির আধিপত্য প্রতিষ্ঠার ফলে উত্তর ভারতীয় অঞ্চলের বহু পুরোনো ভাষা আজ ইতিহাসের পাতায় পরিণত হয়েছে। তিনি বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে হিন্দি ভাষা মূলত প্রতিষ্ঠিত ছিল না, কিন্তু ধীরে ধীরে স্থানীয় ভাষাগুলি হিন্দির দ্বারা গৃহীত হয়েছে। আজ, এই ভাষাগুলি প্রায় বিলুপ্তির পথে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক ভাষার বিলুপ্তির পেছনে বড় ভাষার আধিপত্য অন্যতম কারণ। ইউরোপ, আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়াতে ইংরেজি ভাষার আগ্রাসনের ফলে বহু স্থানীয় ভাষা হারিয়ে গেছে। স্ট্যালিনও মনে করেন, হিন্দির আধিপত্যের মাধ্যমে এমনটি ঘটছে ভারতে, এবং কেন্দ্রীয় সরকার রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে হিন্দির প্রাধান্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।
এছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন শিক্ষানীতির পরিবর্তন নিয়ে স্ট্যালিন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অনেকের মতে, এই নীতি দক্ষিণ ভারতের ভাষাগুলিকে ত্রাসের মধ্যে ফেলতে পারে। স্ট্যালিন স্পষ্টভাবে বলেছেন, এটি দক্ষিণের ভাষা ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার একটি ষড়যন্ত্র।