ঘাটালে বর্ষা মানেই নৌকা ছাড়া গতি নেই, মাস্টারপ্ল্যান আজও হাওয়ায়!

বিগত কয়েক দশক ধরে ঘাটালের মানুষের একটাই প্রশ্ন—”কবে আমাদের (Ghatal Master Plan)  এই জল-যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলবে?” ১৯৮২ সালে তৎকালীন বাম সরকারের আমলে শুরু হওয়া ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান, যা ঘাটাল তথা মেদিনীপুরবাসীর কাছে একেবারে স্বপ্নের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে, আজও বাস্তবায়িত হয়নি। বছর শেষ, আবারও একই পরিস্থিতি। ঘাটাল শহরের সড়কগুলো পানিতে ডুবে গিয়ে যেন প্রতিবছর একটি রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সেই রুটিনের মধ্যে অদৃশ্য হয়ে গেছে শিলান্যাসের ফলকও, যা হয়তো একসময় মনে করিয়ে দিত, ভবিষ্যতে এই শহরের উন্নতির একটি অঙ্গীকার ছিল। কিন্তু বাস্তবে তার কিছুই দেখা যাচ্ছে না(Ghatal Master Plan)  

ঘাটালের জলমগ্ন পরিস্থিতি—বর্ষায় নতুন মাত্রা(Ghatal Master Plan)  

এই বছর বিশেষত প্রবল বৃষ্টির ফলে ঘাটাল যেন “ভেনিস” হয়ে উঠেছিল। (Ghatal Master Plan)  তবে এটি প্রথমবার নয়। প্রতি বছরই একই চিত্র, সড়ক, বাড়ি এবং কৃষিজমি পানিতে ডুবে যায়, মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়। ঘাটালের সেই চিত্র যেন কোনও ভাবেই বদলাতে চায় না। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঘাটাল শহরের ভূগোল এবং নদীর শাখাগুলির অবস্থান বিশেষভাবে প্রভাবিত করে এই অঞ্চলের জলাবদ্ধতা। শিলাবতী, কংসাবতী এবং দ্বারকেশ্বর নদীর শাখা ঝুমির সঙ্গমস্থলে এই অঞ্চলের অবস্থান, যা সামান্য বৃষ্টিতেই জলমগ্ন হয়ে যায়(Ghatal Master Plan)  

১৯৫২ সালে এই সমস্যা নিয়ে প্রথমবার সংসদে আলোচনা শুরু হয়। তৎকালীন বাম সাংসদ নিকুঞ্জবিহারী চৌধুরী ঘাটালের নদী সংস্কারের প্রস্তাব রাখেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই কাজটি অঙ্গীকার পূর্ণ হয়নি(Ghatal Master Plan)  

১৯৮২ সালে শুরু, কিন্তু পরিকল্পনা অধর(Ghatal Master Plan)  

১৯৮২ সালে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের শিলান্যাস করা হয়। (Ghatal Master Plan)  একদিকে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি, অন্যদিকে বাস্তবতার অন্ধকার। পরিকল্পনাটি ছিল পুরো অঞ্চলের নদী সংরক্ষণ ও জলবদ্ধতা নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্যে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেটির বাস্তবায়ন হয়নি। প্রাথমিক ভাবে কয়েকটি কাজ শুরু হলেও তা আজও অসম্পূর্ণ। ঘাটালবাসী দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রশ্ন করে আসছেন—কখন আসবে সেই কাঙ্খিত পরিবর্তন?

মাস্টার প্ল্যানের অব্যবস্থাপন(Ghatal Master Plan)  

আজ পর্যন্ত ঘাটালবাসী রোজই জলমগ্ন হচ্ছে। এই অব্যবস্থাপনা, পরিকল্পনার অভাব, সময়মত সিদ্ধান্ত না নেওয়া এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সমস্যা আরও প্রকট হয়ে উঠছে। প্রতিটি বর্ষায় জলবদ্ধতার ভয়ে ঘাটালবাসী দিশাহারা হয়ে ওঠে। বিশেষ করে, শহরটির ছোট এবং দুর্বল পরিকাঠামো,(Ghatal Master Plan)  জলমগ্ন রাস্তা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে ক্ষতির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পায়। কৃষকদের অবস্থা তো আরও শোচনীয়, যাদের জমির অধিকাংশই প্রতি বছর পানিতে তলিয়ে যায়। তাদের পক্ষে কৃষিকাজ চালিয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।(Ghatal Master Plan)  

নতুন আশার আলো(Ghatal Master Plan)  

এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য আবারও (Ghatal Master Plan)  নতুন করে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে, পূর্ববর্তী কাজের অভিজ্ঞতা থেকে সাধারণ মানুষ কিছুটা সন্দিহান। তাদের আশাবাদী, কিন্তু বিশ্বাস নেই। “আমরা অনেকদিন ধরেই এই আশায় দিন গুনছি। আর কত বছর এভাবে কষ্ট পাবো?”—এমনটাই প্রশ্ন করে ঘাটালবাসী।

স্থানীয় প্রশাসন ও সরকার এবার আশ্বাস দিচ্ছে যে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের পরবর্তী ধাপ দ্রুত শুরু হবে এবং বাস্তবায়নের জন্য তৎপরতা বাড়ানো হবে। তবে, কবে তা হবে, তা সময়ই বলে দেবে। সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে নতুন পরিকল্পনার কাজ শুরু হয়ে যাবে(Ghatal Master Plan)  

এখন শুধুমাত্র সময়ই বলবে, এই আশ্বাস বাস্তবে পরিণত হয় কিনা এবং অবশেষে ঘাটালের মানুষ মুক্তি পায় কিনা তাদের দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা থেকে।(Ghatal Master Plan)