তামিলনাড়ু, ২৪সেপ্টেম্বর: আসন্ন নির্বাচনের আগে তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে আবার বাড়ল চাপানউতোর (India Politics)। গুরুত্বপূর্ণ ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পটভূমিতে এমএমএ কাজাগম (এএমএমকে)-র জেনারেল সেক্রেটারি টি.টি.ভি. ধিনাকরণ ঘোষণা করেছেন যে, তার দল ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ)-তে ফিরবে না যতক্ষণ না এডাপ্পাড়ি কে. পালানিস্বামীকে (ইপিএস) এনডিএ-র মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী থেকে সরানো হচ্ছে।
প্রসঙ্গত কিছুদিন আগেই বিজেপি নেতা আন্নামালাই ধিনাকরণের সঙ্গে একটি গোপন বৈঠক করেছিলেন। এই গোপন বৈঠকে আন্নামালাই ধিনাকরণকে NDA তে আবার ফায়ার আসার অনুরোধ করেন। কিন্তু তার শর্ত মেনে পালানিস্বামীকে না সরালে ধিনাকরণ NDA তে ফিরে যাবেন না তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন আজ।
এই অবস্থান ধিনাকরণের দীর্ঘদিনের বৈরিতার প্রতিফলন, যা এআইএডিএমকে-র অভ্যন্তরীণ বিভেদের ফলস্বরূপ সৃষ্টি হয়েছে। ধিনাকরণের এই ঘোষণা বিজেপি-নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র জন্য বড় ধাক্কা, বিশেষ করে এআইএডিএমকে-র সঙ্গে তাদের জোটের স্থিতিশীলতা নিয়ে। ৭ সেপ্টেম্বর সিভাগাঙ্গায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে ধিনাকরণ এই অবস্থান নিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, “আমরা ইপিএসের মতো ব্যক্তিকে মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে মেনে নিতে পারি না, যিনি আমাদের বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। যদি মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী পরিবর্তন করা হয় এবং অন্য কাউকে ঘোষণা করা হয়, তাহলে আমরা নিশ্চয়ই জোটে ফিরব।” এই কথা বলার সময় তিনি এআইএডিএমকে-র সঙ্গে তার দলের বিচ্ছেদের কারণগুলো তুলে ধরেন। ধিনাকরণ মনে করেন, এআইএডিএমকে-র বর্তমান নেতৃত্ব ইপিএসের অধীনে ‘বিশ্বাসঘাতকদের’ দ্বারা পরিচালিত, যা জয়ললিতার উত্তরাধিকারের সম্পূর্ণ বেমানান।
২০১৬ সালে জয়ললিতার মৃত্যুর পরের অভ্যন্তরীণ কোলাহল এই বিরোধিতার জন্ম দেয়। জয়ললিতার বিশ্বস্ত সহযোগী ভি.কে. শশিকলা ইপিএসকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন, তখনকার অস্থায়ী মুখ্যমন্ত্রী ও. পান্নিরসেলভমকে (ওপিএস) সরিয়ে। কিন্তু ক্ষমতায় এসে ইপিএস ওপিএস এবং শশিকলা-ধিনাকরণের বিরুদ্ধে ফিরে যান, তাদের দল থেকে বহিষ্কার করেন। এর ফলে ২০১৮ সালে ধিনাকরণ এএমএমকে গঠন করেন, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল ‘বিশ্বাসঘাতকদের’ থেকে এআইএডিএমকে মুক্ত করা।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এএমএমকে এনডিএ-র সঙ্গে যোগ দেয়, নরেন্দ্র মোদীকে তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী করার লক্ষ্যে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে, বিজেপির তামিলনাড়ু রাজ্য সভাপতি নাইনার নাগেন্দ্রনের নেতৃত্বে ইপিএসকে এনডিএ-র মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী ঘোষণা করায় ধিনাকরণের অসন্তোষ বাড়ে।
কোনও ঘোষণা ছাড়াই বন্ধ মেট্রো পরিষেবা, ক্ষুব্ধ যাত্রীরা
৩ সেপ্টেম্বর তারা এনডিএ থেকে বেরিয়ে আসে, ওপিএসের মতো অন্যান্য বিদ্রোহী নেতাদের সঙ্গে। ধিনাকরণ বলেন, “এনডিএ-তে থাকা মানে ইপিএসের বিশ্বাসঘাতকতাকে সমর্থন করা। আমরা আর তার পালকি বহনকারী হব না।” তিনি বিজেপির সাবেক রাজ্য সভাপতি কে. আন্নামালাইকে প্রশংসা করলেও বর্তমান নেতৃত্বকে দায়ী করেন।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
