সংসদে সংস্কৃত অনুবাদ নিয়ে ডিএমকের আপত্তি, ওম বীরলার মন্তব্যে উত্তাল লোকসভা

লোকসভা অধ্যক্ষ ওম বীরলা মঙ্গলবার সংসদে ঘোষণা করেছেন, ভারতীয় ৬টি নতুন ভাষায় সংসদে অনুবাদ পরিষেবা চালু করা হবে। এই ভাষাগুলির মধ্যে রয়েছে—বোডো, ডোগরি, মৈথিলি, মণিপুরী,…

লোকসভা অধ্যক্ষ ওম বীরলা মঙ্গলবার সংসদে ঘোষণা করেছেন, ভারতীয় ৬টি নতুন ভাষায় সংসদে অনুবাদ পরিষেবা চালু করা হবে। এই ভাষাগুলির মধ্যে রয়েছে—বোডো, ডোগরি, মৈথিলি, মণিপুরী, উর্দু এবং সংস্কৃত।
তিনি সংসদে বক্তব্য রাখার সময় বলেছেন, এর আগে অনুবাদ পরিষেবা ১০টি ভাষায় ছিল, যেমন অসমীয়া, বাংলা, গুজরাটি, কানাড়া, মালায়ালাম, মারাঠি, ওড়িয়া, পাঞ্জাবি, তামিল এবং তেলেগু, এছাড়া হিন্দি ও ইংরেজিতে অনুবাদ পরিষেবা থাকত।

বিরলা জানিয়েছেন, যেহেতু ১৬টি অতিরিক্ত ভাষার জন্য মানবসম্পদ উপলব্ধ হবে, আমরা সেই ভাষাগুলিতেও অনুবাদ পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।”

   

অধ্যক্ষ উল্লেখ করেছেন, “ভারতের সংসদীয় ব্যবস্থা একটি গণতান্ত্রিক কাঠামো, যা এতগুলো ভাষায় অনুবাদ সেবা প্রদান করে। যখন আমি আন্তর্জাতিক স্তরে আলোচনা করেছিলাম যে আমরা ২২টি ভাষায় এটি প্রদান করছি, তখন সবাই প্রশংসা করেছে। আমাদের উদ্দেশ্য হল, ২২টি স্বীকৃত ভাষার জন্য ভবিষ্যতে আরও ব্যবস্থা নেওয়া।”

এই ঘোষণার পর, ডিএমকে সদস্য দয়ানিধি মারান দাবি করেছেন, সংস্কৃত ভাষায় অনুবাদ পরিষেবা প্রদান করাটা ঠিক নয় এবং এর জন্য জনগণের টাকা অপচয় হচ্ছে। তিনি বলেন, “সংস্কৃত ভাষায় অনুবাদ দেওয়া হচ্ছে, অথচ শুধু ৭৩,০০০ জন মানুষ সংস্কৃতে কথা বলে। এটা কোন রাজ্যে যোগযোগ মাধ্যম নয়। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, মাত্র ৭৩,০০০ জন সংস্কৃত ভাষায় কথা বলে। এই জনগণের টাকা কেন অপচয় করা হচ্ছে?”

এছাড়া দয়ানিধি আরও বলেছেন যে, সংস্কৃত ভাষার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই এবং এটি শুধুমাত্র আরএসএস এর রাজনৈতিক দর্শনের কারণে সংসদে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। তার এই বক্তব্যের পর, অধ্যক্ষ ওম বীরলা দয়ানিধিকে প্রশ্ন করেন, “আপনি কোন দেশে বাস করছেন?”

বীরলা বলেন, “এটি ভারত, যেখানে সংস্কৃত ছিল মুল ভাষা। এজন্যই আমরা ২২টি ভাষা উল্লেখ করেছি, শুধু সংস্কৃত নয়। আপনি সংস্কৃত নিয়ে কেন আপত্তি করছেন?”

“এখানে সংসদে ২২টি ভাষার জন্য অনুবাদ পরিষেবা প্রদান করা হবে, এবং হিন্দি ও সংস্কৃতও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে।”

ডিএমকে সদস্যদের প্রতিবাদের পর, বীরলা স্পষ্ট ভাষায় বলেন যে, সংসদীয় কাজকর্মের জন্য ২২টি ভাষায় অনুবাদ পরিষেবা প্রদান করা হবে, এবং তার মধ্যে সংস্কৃতেরও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

এছাড়া ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, সংস্কৃত ভাষা খুব কম সংখ্যক লোক ব্যবহার করলেও, এটি ভারতের ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক গুরুত্বের জন্য সংসদে সংরক্ষিত থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন বীরলা।