বিভীষণ- এক বিতর্কিক মহাকাব্যিক চরিত্র। রামায়ণ বর্ণিত কাহিনি অনুসারে তিনি বিশ্বাসঘাতক হয়েছিলেন।রামচন্দ্রের পক্ষে লঙ্কা দখল সহজ হয়েছিল। রামভক্ত দিলীপ ঘোষ নিজ দলে বিভীষণদের নিশানা করেছেন। তার নিশানায় আছেন কিছু বুদ্ধিজীবী।
বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) তার নিজের দলেই প্রায় ব্রাত্য। দলীয় সমাবেশে ডাক পান না। তবে নিজ পরিচিত ইমেজ ধরে রাখতে গরম মন্তব্য করে চলেছেন। সামাজিক মাধ্যমে দিলীপ ঘোষ এবার তার দলের অন্দরের জটিল পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন।
দিলীপ ঘোষ লিখেছেন, “কিছু ইউটিউবার, কিছু রিপোর্টার, কিছু বুদ্ধিজীবী বিগত কিছুদিন ধরে বিজেপির খুব আপনজন হয়েছেন । তারা নিজের থেকে, নিজের মা বাবার থেকেও বেশি ভালোবাসে বিজেপিকে। তারা সংগঠনের অভ্যন্তরীণ নানা বিষয়ে তাদের মত দিয়ে থাকেন। এরা অর্থের বিনিময়ে বিজেপির কর্মী সমর্থকদের বিভ্রান্ত করার কাজ করে চলেছেন। বিজেপি চিনতে এদের আরও কয়েক পুরুষ লাগবে। এদের কথায় হতাশ হবেন না।”
দিলীপ ঘোষের নিশানায় কে বা কারা এমন প্রশ্নে বিজেপি জেলা নেতৃত্ব চিন্তিত। জেলায় জেলায় বিজেপির অন্দরে জতুগৃহ পরিস্থিতি। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে সাংগঠনিক কাঠামো প্রায় নেই বলেই নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যে হতাশা ব্যক্ত করছেন। তাদের বক্তব্য, হিন্দি বলয়ের মতো শুধুমাত্র ধর্মীয় মেরুকরণ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলকে হারানো অসম্ভব। এই কারণে নতুন রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য কট্টর হিন্দুত্ববাদ নীতি থেকে আপাতত দূরত্ব রেখেছেন।
জমিতে সংগঠন না থাকলেও বঙ্গ বিজেপির আইটি সেল রাজ্যে বিশেষ সক্রিয়। একইসঙ্গে আছে বিজেপির পক্ষে প্রচার করা একরাশ ইইটিউবার ও ফেসবুক পেজ- গ্রুপ, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম।
দিলীপ ঘোষ লিখেছেন, পার্টির উপর বিশ্বাস, পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস আর নিজের আত্মবিশ্বাসই আপনার আগামী দিনের মূল চালিকাশক্তি। মিডিয়ার প্রচারের কারণে বিজেপি এতদূর আসেনি। আমাদের রক্ত আর ঘামের ফলে আজ পার্টি এই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। কোনও পেড ইউটিউবারের কথায় পাত্তা দেওয়ার দরকার নেই।
উল্লেখ্য, বঙ্গ বিজেপির অপর প্রাক্তন সভাপতি তথাগত রায় ফেসবুক ও এক্সে বারবার দলীয় নেতাদের ভূমিকা নিয়ে সরব থাকেন। তিনি কিছু ক্ষেত্রে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রতি সমর্থন দেখান। তথাগতর নিশানায় বারবার বিদ্ধ হয়েছেন দিলীপ ঘোষ। তিনিও পাল্টা তথাগতর ‘পর্দা ফাঁস’ করেছিলেন।