দিলীপ-শমীক সাক্ষাৎ, বিজেপিতে ফের ঐক্যের বার্তা না ইঙ্গিত?

কলকাতা: একুশে জুলাইয়ের আগে দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) কি তৃণমূলে যাচ্ছেন? এই জল্পনাই এখন ঘুরছে বঙ্গ রাজনীতির অলিগলিতে। এর মাঝেই মঙ্গলবার সল্টলেকের রাজ্য বিজেপি দফতরে…

দিলীপ-শমীক সাক্ষাৎ, বিজেপিতে ফের ঐক্যের বার্তা না ইঙ্গিত?

কলকাতা: একুশে জুলাইয়ের আগে দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) কি তৃণমূলে যাচ্ছেন? এই জল্পনাই এখন ঘুরছে বঙ্গ রাজনীতির অলিগলিতে। এর মাঝেই মঙ্গলবার সল্টলেকের রাজ্য বিজেপি দফতরে হাজির হলেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সদ্য নিযুক্ত রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের আমন্ত্রণেই দফতরে আসেন তিনি। দীর্ঘ সময় পর বিজেপি সদর দফতরে উপস্থিতি দিলীপের, যা রাজনৈতিক মহলে তৈরি করেছে নতুন তরঙ্গ।

দলের অন্দরে দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) গুরুত্ব কমেছে, এমনই মনে করা হচ্ছিল গত কয়েক মাস ধরে। একাধিক কর্মসূচিতে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, মন্তব্য করেননি রাজ্য নেতৃত্ব। অনেকের ধারণা ছিল, বিজেপিতে ‘একঘরে’ হয়ে পড়েছেন দিলীপ। সেই অবস্থায় শমীকের আমন্ত্রণে তাঁর বিজেপি দফতরে আগমন, গেরুয়া শিবিরে যেন নতুন বার্তা দিল।

   

প্রাক্তন ও বর্তমান রাজ্য সভাপতির মধ্যে প্রায় ১০ মিনিট কথা হয়। এই বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) বলেন, “আমি বলেছি, আমি নয়, সমস্ত পুরনো কর্মীরা আপনার (শমীকের) সঙ্গে আছি। সবার বিশ্বাস, আপনার হাত ধরে আমরা নবান্নে পৌঁছব।”

দিলীপ-শমীক সাক্ষাৎ, বিজেপিতে ফের ঐক্যের বার্তা না ইঙ্গিত?

দলবদলের জল্পনা প্রসঙ্গে দিলীপ (Dilip Ghosh) এদিন সরাসরি কিছু না বললেও, আগের মতোই তীর্যক মন্তব্য করেন। বলেন, “যাদের দাম থাকে, তাদের নিয়েই আলোচনা হয়। যাদের দাম নেই, তারা রাস্তায় পড়ে থাকে। দিলীপ ঘোষের দাম আছে, থাকবে। আমি সেলেবেল নই, কিন্তু কাজ করার ইচ্ছা আমার আছে।”

এর আগেই শমীক ভট্টাচার্য বলেছিলেন, “দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) সেলেবল নন।” সেই প্রসঙ্গেই প্রতিক্রিয়া দেন দিলীপ। পাশাপাশি, নতুন সভাপতির প্রশংসাও করতে শোনা যায় তাঁকে। বলেন, “আমি যখন দলে এসেছিলাম, তখন শমীকদা আমার সিনিয়র ছিলেন। আমি সাধারণ সম্পাদক হওয়ার আগে উনি রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, বিধায়ক ছিলেন। এখন ওনার নেতৃত্বেই আমরা এগিয়ে যাব।”

দিলীপ-শমীক সাক্ষাৎ, বিজেপিতে ফের ঐক্যের বার্তা না ইঙ্গিত?

Advertisements

দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) বলেন, তিনি এখন কোনও পদে নেই, তবে বুথস্তরে দলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। জানান, “আমি মেদিনীপুরে, আমার নিজের জেলায় কাজ করছি। সাতশোর বেশি বুথে বৈঠক করেছি। দলীয় সাংগঠনিক কাজই আমার অগ্রাধিকার।”

দলবদলের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে তিনি (Dilip Ghosh) বলেন, “যে কর্মসূচিতে থাকার কথা, সেখানে ডাকলে যাব। সবদিনে থাকা তো জরুরি নয়। আমি দলের একজন সাধারণ কর্মী হিসেবেই নিজেকে দেখি।”

রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য জানান, দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মিটে যাবে। বলেন, “আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সংঘবদ্ধ বিজেপিকে দেখতে পাবেন। দিলীপদার (Dilip Ghosh) মতো নেতারা দলের শক্তি।”

দিলীপ-শমীক সাক্ষাৎ, বিজেপিতে ফের ঐক্যের বার্তা না ইঙ্গিত?

বিজেপি কর্মীদের মধ্যে দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh) ঘিরে ফের উদ্দীপনা দেখা গেছে। ফুল, মিষ্টি, স্লোগানে স্বাগত জানানো হয় তাঁকে। ‘বাংলার দামাল ছেলে’ স্লোগানে মুখর হয় দফতর।

এই মুহূর্তে বঙ্গ রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—২১ জুলাইয়ের আগে দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) কি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেবেন? এদিনের সৌহার্দ্যপূর্ণ সাক্ষাৎ ও মন্তব্যের মাধ্যমে বিজেপি জল্পনা খণ্ডন করার চেষ্টা করলেও, বাস্তবিক দৃষ্টিতে জল্পনার আগুন এখনও নিভে যায়নি। দিলীপ ঘোষ নিজে কোনও কিছুকে নাকচ করেননি, আবার খোলাখুলি নিশ্চিতও করেননি। তাই ২১ জুলাইয়ের আগে দিলীপের ‘পরবর্তী পদক্ষেপ’ নিয়ে নজর রাখছে রাজনৈতিক মহল ও রাজ্যবাসী।