বাংলার দক্ষিণ অংশের দিঘা, যেখানে সমুদ্রের লেউ গড়ায় এবং আকাশের সাথে মিশে যায়, সেই স্থানেই এখন প্রতিষ্ঠিত হলো এক নতুন আধ্যাত্মিক কেন্দ্র—দিঘার জগন্নাথ মন্দির (Digha Jagannath Temple)। এই মন্দিরের উদ্বোধন, (Digha Jagannath Temple) যা সম্প্রতি অক্ষয় তৃতীয়ার শুভক্ষণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে সম্পন্ন হয়েছে, তা এখানকার পুণ্যার্থীদের (Digha Jagannath Temple) জন্য এক নতুন উৎসাহের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মন্দিরের (Digha Jagannath Temple) উদ্বোধন শেষে, প্রথম ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যেই দিঘায় ২ লক্ষেরও বেশি পুণ্যার্থীর সমাগম ঘটে। মন্দিরের (Digha Jagannath Temple) দর্শনের জন্য পুণ্যার্থীদের তাড়াহুড়া এমন ছিল যে, মানুষজন জমায়েত হয়েছিল চারপাশে, এবং এর সঙ্গে মন্দির কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে যথেষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বিশেষ করে নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলার দিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যার ফলে ভক্তরা মন্দিরে প্রবেশ করে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার সুবিধা পাচ্ছেন।
দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের(Digha Jagannath Temple) একটি বিশেষত্ব হল এর নির্মাণশৈলী। মন্দিরটি (Digha Jagannath Temple) রাজস্থানের গোলাপি বেলেপাথর দিয়ে তৈরি, যা দেখতে যেমন চমৎকার, তেমনি টেকসইও। এই মন্দির নির্মাণে প্রায় ৮০০ জন কারিগর কাজ করেছেন, যাদের সবাই রাজস্থানের বাসিন্দা। মন্দিরটির(Digha Jagannath Temple) প্রবেশদ্বারে রয়েছে ৩৪ ফুট দীর্ঘ কালো পাথরের অরুণ স্তম্ভ, যা একটি সুন্দর নিদর্শন। স্তম্ভটির মাথায় রয়েছে অরুণা মূর্তি, যা মন্দিরের সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
মন্দিরটির (Digha Jagannath Temple) প্রবেশদ্বারের সামনে রয়েছে একাধিক দ্বার। সিংহদ্বার, ব্যাঘ্রদ্বার, হস্তিদ্বার এবং অশ্বদ্বার—এই চারটি প্রধান দ্বার দিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করা যায়। মন্দিরে প্রবেশের পরে প্রথমেই দেখা যাবে তিনটি দীপস্তম্ভ। এগুলির সৌন্দর্য মন্দিরের আধ্যাত্মিক পরিবেশকে আরও উচ্চতায় তুলে ধরে।
মন্দিরের (Digha Jagannath Temple) ভেতর রয়েছে একাধিক দর্শনীয় স্থান। প্রথমে আছে ভোগ মণ্ডপ, যেখানে দেবতার জন্য বিশেষ ভোগ প্রস্তুত করা হয়। ভোগ মণ্ডপের পরে রয়েছে নাটমন্দির, যা ১৬টি স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে আছে। নাটমন্দিরের পর রয়েছে জগমোহন, যেখানে ভক্তরা আধ্যাত্মিক শান্তি অনুভব করেন। সবশেষে, মন্দিরের গর্ভগৃহ বা মূল মন্দির, যেখানে সিংহাসনে স্থিত থাকবে জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার মূর্তি।
মন্দিরের (Digha Jagannath Temple) শিলালিপি, পাথরের দেওয়াল এবং কারুকার্য সব মিলিয়ে মন্দিরটি এক স্বতন্ত্র স্থাপত্যগত অভিজ্ঞতা প্রদান করে। বিশেষ করে, নাটমন্দিরের দেওয়ালে কালো পাথরে তৈরি দশাবতার মূর্তি এবং অন্যান্য অসংখ্য শিল্পকর্ম ভক্তদের মুগ্ধ করে।
এই মন্দিরের (Digha Jagannath Temple) একটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় দিক হলো এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। অতিরিক্ত ভিড় এবং পুণ্যার্থীদের সুরক্ষার জন্য মন্দির চত্বরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট আঁটসাঁট রাখা হয়েছে, যা নিয়ে ভক্তদের মধ্যে কোনো উদ্বেগ নেই। ভক্তদের(Digha Jagannath Temple) অভিযোগ নেই যে, পুজো দিতে কোনো দীর্ঘ সময় লাগছে না। মন্দিরের ভিতরে সুচারু ব্যবস্থাপনা ও সংগঠিত সিস্টেমের কারণে পুণ্যার্থীরা দ্রুত মন্দিরে প্রবেশ করে পুজো দিতে পারছেন।
বুধবারের দ্বারোদ্ঘাটনের (Digha Jagannath Temple) পর, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই পুণ্যার্থীদের সমাগম অব্যাহত রয়েছে। মন্দিরের খুলে থাকার সময়কাল সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত, এবং এই সময়ের মধ্যে যে কেউ জগন্নাথদেবের দর্শন লাভ করতে পারবেন।
একদিকে মন্দিরের (Digha Jagannath Temple) সৌন্দর্য এবং স্থাপত্যশিল্প মানুষের মন ছুঁয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে এখানে আসা পুণ্যার্থীরা এক নতুন আধ্যাত্মিক অনুভূতির মধ্যে প্রবেশ করছেন। দিঘার এই নতুন মন্দির(Digha Jagannath Temple) শুধুমাত্র একটি আধ্যাত্মিক স্থানই নয়, এটি হয়ে উঠছে বাংলার এক নতুন ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।
এমনকি, পুণ্যার্থীরা জানাচ্ছেন, মন্দিরের নির্মাণ এবং পরিবেশ দেখে তাঁদের মনে শান্তি এসেছে, এবং এই নতুন স্থানটি আসলে ভারতের আরও এক উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় কেন্দ্র হয়ে উঠবে বলে আশা করছেন তারা।