কলকাতা ৬ অক্টোবর: উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে নাগরাকাটা গিয়েছিলেন শিলিগুড়ির বিজেপি (Bengal Politics) সাংসদ শংকর ঘোষ এবং বিজেপি বিধায়ক খগেন মুর্মু। ঘটনাস্থলে পৌঁছলে স্থানীয় বাসিন্দারা জুতো দিয়ে পেটাতে শুরু করেন শঙ্করকে। গাড়ির কাছ ভেঙে দেওয়া হয়। সেই কাঁচে মারাত্মক আহত হন খগেন। তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় জলপাইগুড়ি মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে।
এই ঘটনায় এবার মুখ খুললেন তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন। “বিজেপির উপর মানুষের আক্রোশ এখন প্রকাশ্যে এসেছে।”দেবাংশু ভট্টাচার্য এক্স প্ল্যাটফর্মে তাঁর বক্তব্যে বলেন, “আমরা কোনওভাবেই হিংসাকে সমর্থন বা প্রশ্রয় দিই না। কিন্তু উত্তরবঙ্গের মানুষের গভীর হতাশা বোঝা দরকার।
টানা বর্ষণের পর সাময়িক স্বস্তি: উত্তরে উন্নতি, দক্ষিণেও বদলের আশ্বাস
তারা বারবার বিজেপিকে ভোট দিয়েছে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপির কাছ থেকে শুধু বিশ্বাসঘাতকতা পেয়েছে। আজকের অশান্তি সাধারণ নাগরিকদের ক্ষোভের সরাসরি প্রকাশ। এই সংকটের মধ্যেও বিজেপি নেতারা ত্রাণ দেওয়ার পরিবর্তে ফটো তুলতে ব্যস্ত ছিল। তাদের কর্মকাণ্ড, বা বরং কর্মকাণ্ডের অভাব, তাদের প্রতি মানুষের আস্থা ভাঙার প্রমাণ।”
তাঁর এই মন্তব্য বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূলের অবস্থানকে আরও জোরালো করেছে। উত্তরবঙ্গে গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে তিস্তা ও জলধাকা নদী উচ্ছাসিত হয়ে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস সৃষ্টি করেছে। কমপক্ষে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, হাজার হাজার মানুষ বাস্তুহারা।
এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং ১০০ কোটি টাকার ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের উপর অবহেলার অভিযোগ তুলে বলেন, “কেন্দ্র আমাদের সাহায্য করছে না। রাজ্য একাই লড়ছে।” এদিকে, বিজেপি নেতারা ত্রাণ বিতরণের নামে এলাকায় গেলে স্থানীয়দের ক্ষোভের মুখে পড়েন।
বিজেপি এই হামলাকে ‘টিএমসির গুন্ডাগিরি’ বলে অভিহিত করেছে।বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্যানিক মোডে চলে গেছেন। তাঁর দলের লোকেরা বিজেপি নেতাদের উপর হামলা করছে।” বিজেপি জাতীয় মুখপাত্র সুধাংশু ত্রিবেদী বলেন, “টিএমসি ক্ষমতায় আসার পর থেকে পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। মমতার উদাসীনতা সীমা ছাড়িয়েছে।” তিনি খগেন মুর্মুর আদিবাসী পরিচয়ের উপর জোর দিয়ে বলেন, “এই হামলা আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতি মমতার অবমাননার প্রমাণ।”