চেন্নাই ২৭ সেপ্টেম্বর: তামিলনাড়ুর করুরে অভিনেতা-রাজনীতিবিদ জোতিকা জয়রাজ বিজয়ের (India Politics) তামিলাগা ভেত্ত্রি কাজাগাম (টিভিকে)-র একটি জনসভায় পদপিষ্ট হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে এখন ৩১। যার মধ্যে ৮ জন শিশু এবং ১৬ জন নারী রয়েছেন। এছাড়া ৫৮ জন আহত হয়েছেন এবং বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই দুঃখজনক ঘটনায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্টালিন ১০ লক্ষ টাকা করে মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন এবং আহতদের জন্য ১ লক্ষ টাকার সাহায্যের ঘোষণা দিয়েছেন।
এছাড়া, ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের জন্য অবসরপ্রাপ্ত মাদ্রাজ হাইকোর্ট বিচারপতি জাস্টিস আরুনা জগদীশনের নেতৃত্বে একক সদস্যের কমিশন গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করেছেন।
ঘটনাটি ঘটে শনিবার সন্ধ্যায় করুরের ভেলুচামিপুরামে। বিজয়ের সভায় হাজার হাজার সমর্থক জড়ো হয়েছিলেন, যা রাজ্যের ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারের অংশ ছিল। সভার শেষে বিজয় যখন মঞ্চ ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন, তখন উত্তেজিত ভিড় তাঁর দিকে ছুটে যায়। এতে কিছু লোক ভবন, বিদ্যুৎ খুঁটি এবং আলোর গ্রিডের উপর উঠে পড়েন, যা দুর্ঘটনার কারণ হয়।
একজন অ্যাম্বুলেন্স চালক বলেন, “বিজয়ের বক্তৃতা শেষ হওয়ার সাথে সাথে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। লোকেরা ছুটতে ছুটতে একে অপরের উপর পড়ে, শিশুসহ অনেকে চাপা পড়ে যান। আমরা যতটা সম্ভব আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাই।” করুর সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫৮ জন ভর্তি হয়েছেন, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মা. সুব্রমণিয়ম বলেছেন, “মৃতের সংখ্যা ৩৬-এ পৌঁছাতে পারে, কারণ কিছু লোক এখনও হাসপাতালে।
মুখ্যমন্ত্রী স্টালিন ঘটনার খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ প্রাক্তন মন্ত্রী ভি. সেন্থিল বালাজিকে করুর পাঠান এবং নিজে শনিবার রাতে সেখানে যান। তিনি বলেছেন, “এই ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি আহতদের সঙ্গে দেখা করব এবং তাঁদের পরিবারের সঙ্গে সান্ত্বনা জানাব।” তিনি তিরুচিরাপল্লি, সেলেম এবং দিন্দিগুলের জেলা প্রশাসকদের করুরে পাঠিয়েছেন রিলিফ কাজের জন্য।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং স্কুল শিক্ষামন্ত্রীকে অবিলম্বে করুর যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে আহতদের চিকিৎসা বিনামূল্যে করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্টালিন রবিবার করুর সফর করবেন বলে জানানো হয়েছে। রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে এই ঘটনা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। ডিএমকেও মুখপাত্র এ সারভানান বিজয়কে দায়ী করে বলেছেন, “সভা ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্বিত করা হয়েছে ড্রোন শটের জন্য, যা এই দুর্ঘটনার কারণ। বিজয় কোথায় লুকিয়ে আছেন?”
সেপাহানের সঙ্গে খেলতে ইরান যাচ্ছে না মোহনবাগান, জারি হল বিবৃতি
বিজেপি নেতা এবং পিএমকে নেতা অন্নামালাই বলেছেন, “এই ট্র্যাজেডি এড়ানো যেত, সুরক্ষা ব্যবস্থা ছিল না।” বিজয় নিজে এক্স-এ পোস্ট করে বলেছেন, “আমার হৃদয় ছিন্নভিন্ন। এই ঘটনায় মৃতদের প্রতি আমার গভীর শোক। আমি তাঁদের পরিবারের পাশে আছি।” অভিনেতা রজনীকান্তও শোক প্রকাশ করে বলেছেন, “এই ঘটনা হৃদয়বিদারক।”