সিপিআই (Communist Party of India) সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা (D Raja) শুক্রবার মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন (President’s Rule in Manipur) জারির তীব্র সমালোচনা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিংয়ের পদত্যাগের পরপরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা দেশজুড়ে রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ডি রাজা এটিকে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় উভয় স্তরে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের ব্যর্থতা বলে অভিহিত করেছেন।
ডি রাজা রাষ্ট্রপতি শাসনের সময় ও প্রভাব নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি অভিযোগ তুলেছেন যে কেন্দ্রীয় সরকার মণিপুরের সংকটে অবহেলা করেছে। তিনি বলেন, “রাষ্ট্রপতি শাসন জারি বিজেপি (Bharatiya Janata Party) সরকারের সম্পূর্ণ ব্যর্থতা এবং প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের অক্ষমতাকে স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “মোদীর এই বিষয়ে সরাসরি জড়িত থাকার কথা তার দলের নেতা-নেত্রীরা বলে আসছেন। আমরা গত কয়েক মাস ধরে বলে আসছি যে মোদীর মণিপুর সফর করা উচিত। পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে সঠিকভাবে আলোচনা করা উচিত। মণিপুরের অস্থিরতা সমাধানের রাজনৈতিক রোডম্যাপ কী? কেউ জানে না। মণিপুরের রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলির মতামত শুনতে হবে।”
৯ ফেব্রুয়ারি মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিং প্রায় দুই বছর ধরে চলা সহিংসতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে পদত্যাগ করেন। এরপর সংবিধানের ৩৬৫ ধারা অনুসারে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি এখন রাজ্যপালের মাধ্যমে রাজ্যের প্রশাসনিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করবেন।
ডি রাজা এই সিদ্ধান্তকে গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি মনে করেন, রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে কেন্দ্রীয় সরকার মণিপুরের জনগণের ইচ্ছাকে উপেক্ষা করেছে। তিনি রাজনৈতিক দলগুলিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সংকট মোকাবিলার আহ্বান জানান।
মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ডি রাজা বলেন, “রাজ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে হলে স্থানীয় জনগণের মতামত ও আশা-আকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দিতে হবে। রাষ্ট্রপতি শাসন এই প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে।”
সিপিআই নেতার এই বক্তব্য রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, মণিপুরের সংকট সমাধানে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে ঐক্য ও সংলাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়েছে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য।
মণিপুরের সাধারণ মানুষ এখন শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায় রয়েছেন। আগামী দিনে রাজ্যের পরিস্থিতি কী দিকে মোড় নেয়, তা নিয়ে সকলের চোখ এখন রাজনৈতিক উন্নয়নের দিকে।