সিপিআইএমের (CPIM) সাংগঠনিক স্তরে ফিসফাস চলছে-অক্টোবরে চমক (October Surprise)! কীসের চমক সেটি স্পষ্ট নয়। কড়া নিয়মে বাঁধা এই দলটির অভ্যন্তর থেকে বাম শিবিরের পোড়া বাজারেও বিশেষ কিছু প্রকাশ্যে আসে না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা দাবি করেন কমতে কমতে পশ্চিমবঙ্গে পাঁচ শতাংশ ভোটে নেমে গেলেও দলটি তার পুরনো কট্টর সাংগঠনিক রীতি ধরে রাখতে পেরেছে। সাড়ে তিন দশকের টানা সরকার থেকে ক্ষমতাচ্যুত হবার দেড় দশক পরেও সিপিআইএম পশ্চিমবঙ্গে তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে। বর্তমান শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে এমনটা সম্ভব হবে না।
আসন্ন ছাব্বিশের নির্বাচনে সিপিআইএমের অবস্থান জোটপন্থী নাকি জোট বিরোধী-এই ইস্যু দলের মধ্যে প্রবল বিতর্ক তৈরি করেছে। কারণ গত কয়েকটি নির্বাচনে জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেও সফলতার মুখ দেখেনি বাম শিবির। আর বিজেপি বিরোধী সর্বভারতীয় ইন্ডিয়া জোটে তৃণমূল থাকায় বঙ্গ বাম সমর্থকদের ক্ষোভ এতটাই ছিল যে সেই ভোট রাম শিবিরে চলে গেছে। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ভোচব্যাঙ্ক হয়েছে বিক্ষুব্ধ সিপিআইএম!
ভোট ফিরিয়ে আনতে মরিয়া সিপিআইএম। দলটির রাজ্য কমিটির নির্দেশে সব জেলা কমিটি ও কৃষক সভা, শ্রমিক ইউনিয়ন সিটুর উপর বিশেষ দায়িত্ব বর্তেছে বলে কেন্দ্রীয় কমিটির বঙ্গজ নেতাদের ইঙ্গিত। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে দলের শূন্য দশা কাটবে কিনা প্রশ্নে এক সামাজিক মাধ্যমে সিপিআইএমের হেভিওয়েট কৃষক নেতা অমল হালদার বলেন চমক আসবে। তিনি স্পষ্ট জানান বিশেষ আর খোলসা করে বলতে চাইছি না।
চমক তাহলে কি?
সিপিআইএমের অভ্যন্তরে গুঞ্জন দলীয় প্রার্থী পদে টলি তারকাদের সংখ্যা বাড়তে পারে। পরিচিত বামপন্থী অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কাউন্সেলিং করার কাজ চলছে। কারণ নির্বাচনী প্রচারের থেকে প্রার্থী হওয়া অনেক গুরুদায়িত্বপূর্ণ।
জানা যাচ্ছে, ভাগিরথী নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে ছড়ানো বিধানসভা আসনে বামপন্থীদের ভোট ধরে রেখে জয়ের জন্য নিশ্চিত আসন নির্ধারন করা।
তবে নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন, ক্ষমতাচ্যুত হবার পর থেকে বড্ড বেশি গান্ধীবাদী রীতিতে চলার কারণেই ভোট রাজনীতিতে এই করুণ দশা। তৃণমূলের সঙ্গে টক্কর নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। সেক্ষেত্রে গরম রাজনীতির পথ নিতে হবে।
দলীয় সব সাংগঠনিক স্তরেই ‘গরম রাজনীতি’ তত্ত্ব প্রবল আলোচিত। দলীয় তরুন ও যুব নেতৃত্বের চাপের মুখে তাত্ত্বিকরা পিছনের সারিতে। কড়া রাজনৈতিক তত্ত্বে মোড়া সিপিআইএম এখনো মনে করে “বন্ধুর চেয়ে পার্টি বড়।” এই তত্ত্বটি সম্প্রতি দলটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও স্বাধীনতা সংগ্রামী মুজফ্ফর আহমদের জন্মদিবস পালনে নগর হতে গ্রামাঞ্চল-সব সাংগঠনিক স্তরে বিশেষভাবে ছড়ানো হয়েছে।